নুন এমন একটি জিনিস রান্নায় যা কম হলে স্বাদ আসে না, আবার বেশি হয়ে গেলেই স্বাদ বিগড়ে যায়। রান্নায় যেমন নুনের পরিমাপ সঠিক হওয়া জরুরি, তেমনই শরীরেও কতটুকু নুন ঢুকছে সে বিষয় সতর্ক হতে হবে। হৃদ্যন্ত্র ভাল রাখতে কাঁচা নুন খাওয়া বন্ধ করতে হবে। অতিরিক্ত নুন উচ্চ রক্তচাপের সমস্যাও বাড়িয়ে তোলে। কেবল বড়দেরই নয়, শিশুদের খাবারেও পরিমিত পরিমাণে নুন যোগ করাই উচিত।
শিশু চিকিৎসকদের মতে, ৬ মাস বয়স অবধি শিশু মায়ের দুধই খাবে। তাই নুনের প্রয়োজন নেই। ৬ মাসের পর থেকে একটু একটু করে শিশুকে খাবার খাওয়ানো অভ্যাস করাতে হয়। তবে সেই খাবারে কিন্তু নুন দিলে চলবে না। শিশুরোগ চিকিৎসক অর্পণ সাহা বলেন, ‘‘১ বছরের নীচে শিশুদের কখনওই নুন দেওয়া চলবে না। শিশুদের কিডনি সেই সময় নুনের ভার বহন করতে পারে না। ১ বছর পর খাবারের মধ্যে অল্প মাত্রায় নুন মিশিয়ে দিতে পারেন। তবে কাঁচা নুন দেওয়া কিন্তু চলবে না।’’
চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, ১ থেকে ৩ বছর বয়স অবধি শিশুদের রোজ ২ গ্রাম অবধি অর্থাৎ আধ চা চামচ মতো নুন দেওয়া যেতে পারে। ৪ থেকে ১০ বছর বয়স অবধি ও ১০ বছরের ঊর্ধ্বে রোজের খাবারে নুনের পরিমাণ সামান্য বাড়িয়ে দিনে ৩ গ্রামের মতো করা যেতে পারে। অর্থাৎ, আধ চামচের সামান্য বেশি। সারা দিনের খাবারে ওইটুকুই দিতে হবে শিশুকে। তার বেশি নয়।
অনেক সময় বাবা-মায়েদের প্রশ্ন থাকে, সাধারণ নুন না কি সৈন্ধব লবণ (রক সল্ট), কোনটি শিশুদের জন্য ভাল? চিকিৎসক অর্পণ বলেন, ‘‘বাজারে এখন সৈন্ধব লবণ নিয়ে অনেক বেশি মাতামাতি। বিজ্ঞাপনের প্রচারে সাধারণের তুলনায় সৈন্ধব লবণকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। তবে এই লবণে আসল জিনিসই থাকে না, যার নাম আয়োডিন। আয়োডিন কিন্তু শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ, এ ছাড়া শিশুর শরীরে থাইরয়েড হরমোন উৎপাদনেও এই খনিজ বিশেষ ভূমিকা রাখে। তাই ১ বছরের পর থেকে যখন নুন খাওয়ানো শুরু করবেন, শিশুকে তখন আয়োডিন যুক্ত নুন খাওয়ানোই ভাল।’’