মনখারাপের মেঘ কাটাবে যোগাসন। যোগব্যায়ামেই অবসাদ ঘোচানোর পথ খুঁজে পেলেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) গবেষকেরা। উদ্বেগ, বিষণ্ণতা যদি মনকে গ্রাস করে, তা হলে ওষুধ নয়, কাজে আসতে পারে যোগাসনের কয়েকটি পদ্ধতি। তেমনই ৫টি আসন বেছে নিয়েছে হু।
রোজের চরম ব্যস্ততা, তার মধ্যেও হয়তো কিছুই ভাল লাগছে না আপনার। মনের এমন অবস্থার মধ্যে দিয়ে কমবেশি সকলেই যাই। তখন সব কিছু থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন মনে হয়। বহু জনের মধ্যে থেকেও মনে হয় পাশে কেউ নেই। বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতে ইচ্ছে করে না। আত্মীয়-পরিজনকে এড়িয়ে চলতে পারলেই ভাল হয়। চেনা-পরিচিত কারও মুখোমুখি পড়ে গেলেও, কথা বলার ইচ্ছা থাকে না। মনোবিদেরা বলেন, ক্লান্তি, অবসাদ আর হতাশা যখন মন জুড়ে থাকে, তখন তার থেকেই বিচ্ছিন্নতাবোধ জন্মায়। মন বিষণ্ণ হয়ে থাকে। কোনও কিছুতেই উৎসাহ-উদ্দীপনা থাকে না। একে চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় ‘ডিসোসিয়েটিভ ডিজ়অর্ডার’ বলা হয়। আর যখন ছোটখাটো সব বিষয়েই উদ্বেগ ও দুশ্চিন্তা বাড়ে, তখন তা থেকে হয় ‘অ্যাংজ়াইটি ডিজ়অর্ডার’। এর থেকে পরিত্রাণের উপায় হিসেবে যোগব্যায়ামকেই আদর্শ বলে মনে করেছেন গবেষকেরা।
কোন কোন আসনে মন ভাল হবে?
সেতুবন্ধাসন বা ব্রিজ় পোজ়
ম্যাটের উপর টানটান হয়ে শুয়ে দুই হাঁটু ভাজ করতে হবে। এর পর পিঠ ও কোমরে ভর দিয়ে ধীরে ধীরে কোমর উপরে তুলতে হবে। শ্বাসপ্রশ্বাস স্বাভাবিক রেখে ওই ভঙ্গিতে ২০ সেকেন্ড থেকে আবার আগের অবস্থানে ফিরে আসতে হবে। মন ভাল রাখার পাশাপাশি মেদ কমাতে, পিঠের ব্যথা নিরাময়েও উপযোগী এই আসন।
আরও পড়ুন:
বালাসন বা চাইল্ড পোজ়
হাঁটু মুড়ে গোড়ালির উপর বসতে হবে। তার পর কোমর থেকে শরীরের উপরের অংশ সামনের দিকে হেলিয়ে দিন। শরীরটা এমন ভাবে ঝুঁকিয়ে আনুন, যাতে বুক ঊরুতে গিয়ে ঠেকে। মাথা ম্যাটের উপরে ঠেকিয়ে হাত দু’টি সামনের দিকে প্রসারিত করে দিন। শ্বাস স্বাভাবিক রেখে ওই ভঙ্গিতে ৩০ সেকেন্ড থেকে আগের অবস্থানে ফিরে আসুন। এই আসন অন্তত তিন সেট করতে হবে।
বিপরীত করণী বা লেগ-আপ ওয়াল পোজ়
চিত হয়ে শুয়ে দু’পা একত্রে সোজা করে মাটি থেকে উপরে তুলতে চেষ্টা করুন। হাতে ভর দিয়ে কোমর ধীরে ধীরে উপর দিকে তুলতে চেষ্টা করুন। শরীরের ভঙ্গি অনেকটা সর্বাঙ্গাসনের মতো হবে। তবে দুই পা ৯০ ডিগ্রিতে না রেখে সামান্য হেলিয়ে রাখতে হবে। শুরুতে দেওয়ালে ভর দিয়ে আসনটি অভ্যাস করতে পারেন, সে ক্ষেত্রে কোমর থেকে পা উপর দিকে তুলে দেওয়ালে রাখতে হবে।
উত্তনাসন বা স্ট্যান্ডিং ফরোয়ার্ড ফোল্ড
ম্যাটের উপর সোজা হয়ে দাঁড়ান। কোমর, পিঠ থাকবে টান টান। এ বার কোমর থেকে শরীর ঝুঁকিয়ে দুই হাতের তালু দিয়ে মাটি স্পর্শ করার চেষ্টা করতে হবে। তবে হাঁটু ভাঙলে হবে না। শরীরচর্চা করার অভ্যাস না থাকলে খুব বেশি ক্ষণ এই অবস্থান ধরে রাখতে পারবেন না। মোটামুটি ১০ সেকেন্ড মতো থেকে আবার প্রথম অবস্থানে ফিরে আসুন।
মার্জারাসন
প্রথমে মাটিতে দুই পা এবং হাতের উপর ভর দিয়ে বিড়ালের মতো ভঙ্গি করুন। পিঠ উঁচু করে মাথা ঝুঁকিয়ে শ্বাস নিন, আবার পেট ঢুকিয়ে শ্বাস ছাড়ুন। এই আসন অভ্যাস করুন ৫ বার করে অন্ততপক্ষে ৫ মিনিট।