Advertisement
E-Paper

মহিলাদের ঊরু-নিতম্বে বেশি মেদ জমে কেন? এর ভাল দিকও আছে, চেহারা নিয়ে হীনম্মন্যতায় ভুগলে জেনে রাখুন

মেদ সব সময়ে খারাপ নয়। এর কিছু স্বাস্থ্যকর দিকও আছে। বিশেষ করে পুরুষের ভুঁড়ি আর মহিলাদের ঊরুর মেদের চরিত্র কিন্তু আলাদা। মেয়েদের পা ও শরীরের নিম্নাংশের মেদের কিছু উপকারিতাও আছে।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২৫ ১৭:৪০
Why does more fat deposit on thighs and hips of women than men

পুরুষের চেয়ে মেয়েদের পায়ে মেদ বেশি জমে কেন? ফাইল চিত্র।

সুখী পুরুষের লক্ষণ কী? মস্ত বড় একটা টাক না কি হৃষ্টপুষ্ট একটা ভুঁড়ি? তবে সাধারণ মধ্যবিত্ত মানুষের চোখে সুখী পুরুষ চেনার উপায় কিন্তু ওই ভুঁড়িটিই। ভারতীয় পুরুষদের চল্লিশের পরে বড়সড় একটি ভুঁড়ি যেন অতি সাধারণ ব্যাপার। আর মহিলাদের ঊরু ও নিতম্বে মেদ জমলেই তা দৃষ্টিকটু। পুরুষদের চেয়ে মহিলাদের শরীরে মেদ জমার প্রবণতা বেশি। তার কিছু কারণও আছে। খেয়াল করে দেখবেন, পুরুষের পেট ও তলেপেট মেদ বেশি জমে আর মহিলাদের ক্ষেত্রে তা ঊরু ও নিতম্বে। লিঙ্গ ভেদে মেদের চরিত্রও কিন্তু আলাদা। মহিলাদের নিম্নাংশে মেদ জমছে মানেই যে খারাপ, তা না-ও হতে পারে। এর কিছু ভাল দিকও আছে। চেহারা নিয়ে যদি হীনম্মন্যতায় ভোগেন, তা হলে জেনে রাখা জরুরি।

পুরুষের তলপেটে যে মেদ জমে, তাকে বলে ‘ভিসেরাল ফ্যাট’। এই মেদ মোটেও ভাল নয়। তলপেটের থলথলে চর্বি লিভার ও হার্টের রোগের কারণ হতে পারে। কারণ এই ধরনের মেদ শরীরের ভিতরের কোষ-কলাগুলির চারপাশে জমা হয়, যা কোষের ক্ষতি করে। ভুঁড়ির কারণে ‘কার্ডিয়ো ভাসকুলার মর্টালিটি’ বেড়ে যায়। শরীরে প্রদাহজনিত নানা অসুখ দেখা দিতে থাকে। এবং ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে। সে দিক থেকে ঊরু বা নিতম্বের মেদ অনেক বেশি নিরাপদ। একে বলে ‘সাবকিউটেনিয়াস ফ্যাট’, যা ত্বকের নীচে জমা হয়। এই মেদ কম সক্রিয় এবং টাইপ ২ ডায়াবিটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হার্টের রোগের ঝুঁকি কমাতে পারে।

মেয়েদের শরীরে মেদ বেশি জমার অনেক কারণ আছে। মহিলাদের ইস্ট্রোজেন হরমোন এর জন্য অনেকটাই দায়ী। এই হরমোনের কারণেই মহিলাদের ঊরু, নিতম্ব বা গ্লুটিয়াল অঞ্চলে মেদ বেশি জমে। এই চর্বি গলিয়েই শক্তি তৈরি হয়। বয়ঃসন্ধির সময় থেকে মেদ জমার প্রবণতা বাড়ে। একটি ছেলের বয়ঃসন্ধির পরে মেদ কোষের বিভাজন তেমন হয় না। সংখ্যাতেও কম বাড়ে। কিন্তু মেয়েদের ক্ষেত্রে তা উল্টো। আবার বংশগত বা জিনগত কারণেও মেদ জমার প্রবণতা দেখা যায়। তবে এই মেদের কিছু ভাল দিক আছে। পাবমেড থেকে প্রকাশিত গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, মহিলাদের শরীরের নিম্নাংশের মেদ বা ‘সাবকিউটেনিয়াস ফ্যাট’ গর্ভধারণের সময়ে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। মহিলাদের পেলভিস বা শ্রোণি এলাকা এমনিতেই প্রসারিত। তার উপর মেদ থাকলে তা অতিরিক্ত শক্তির জোগান দেয়। বিশেষ করে সন্তানধারণ, ভ্রূণের বিকাশ, স্তন্যপান করানোর সময়ে প্রয়োজনীয় শক্তির জোগান দেয়।

স্বাস্থ্যকর দিক আরও আছে। গবেষণা বলছে, মহিলাদের শরীরের নিম্নাংশের এই মেদের আরও একটি কাজ হল প্রদাহ কমানো। এই মেদের কারণেই সাইটোকাইন প্রোটিনের প্রদাহ কম হয়, ফলে হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমে। কিছু গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, মহিলাদের পায়ের চর্বি শরীরের ফ্যাটি অ্যাসিডগুলিকে এমন ভাবে নিয়ন্ত্রণ করে, যাতে রক্তে গ্লুকোজ় ও ইনসুলিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রিত হয়। তবে পায়ের মেদের যতই ভাল দিক থাক না কেন, অতিরিক্ত মেদ কিন্তু খারাপ। যদি দেখা যায়, ঊরু ও নিতম্বে অসামঞ্জস্যপূর্ণ ভাবে মেদ জমে চলেছে, তা হলে এর থেকে ‘লিপেডেমা’ হতে পারে। এটি এমন এক অসুখ, যাতে শরীরের নিম্নভাগে মেদ জমে চামড়া কুঁচকে যায় ও ঝুলে পড়ে। ত্বকের মেলানিন নষ্ট হয়ে ‘পিগমেন্টেশন’ বা দাগছোপ দেখা দিতে থাকে। যে মহিলাদের পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম (পিসিওএস) থাকে, অথবা থাইরয়েডের সমস্যা থাকে, তাঁদের ক্ষেত্রে এমন বেশি দেখা যায়। এই লক্ষণ দেখা গেলে দ্রুত চিকিৎসার প্রয়োজন। সেই সঙ্গে খাওয়াদাওয়াও নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরি।

Body Weight Obesity Weight Gain
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy