Advertisement
E-Paper

ওজন কমাতে চিয়া খান, কালো কিশমিশ ভেজানো জলে মিশিয়ে খেলে কি বাড়তি উপকার হবে?

চিয়া বীজ জলে ভিজিয়ে খান অনেকে। কেউ আবার দুধেও ভিজিয়ে রাখেন। কিন্তু কিশমিশ ভেজানো জল মিশিয়ে খেলে কী উপকার হবে?

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ জুন ২০২৫ ১১:০১
চিয়া বীজ আর কালো কিশমিশ একসঙ্গে ভিজিয়ে খেলে কী লাভ হবে?

চিয়া বীজ আর কালো কিশমিশ একসঙ্গে ভিজিয়ে খেলে কী লাভ হবে? ছবি: সংগৃহীত।

বছর কয়েক আগে যে খাবারের নাম শুনলে ভ্রু কুঁচকে যেত বেশির ভাগ মানুষের, এখন সেই চিয়া বীজ ভেজানো জল খেয়ে দিন শুরু হয় অনেকেরই। পুষ্টিগুণের জন্য বীজটির কদর বাড়ছে। স্থূলত্ব, ডায়াবেটিস-সহ একাধিক সমস্যায় জর্জরিত মানুষজনও সুস্থ থাকার বাসনায় খাদ্যতালিকায় চিয়া বীজ জুড়ছেন।

জলে ভিজিয়ে চিয়া খাওয়ার চল আছে। কেউ আবার দুধেও সেটি ভিজিয়ে খান। কিন্তু কালো কিশমিশের জলের সঙ্গে সেটি মিশিয়ে খেলে কি বাড়তি উপকার হবে?

পুষ্টিবিদ অনন্যা ভৌমিক বলছেন, ‘‘চিয়া বীজ যেমন উপকারী, কালো কিশমিশও তা-ই। দুই উপকরণ জু়ড়লে পানীয়ের পুষ্টিগুণও বাড়বে।’’

চিয়াবীজ: অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট, ফ্যাটি অ্যাসিড, ফাইবারে পরিপূর্ণ চিয়া বীজ। প্রোটিন, ক্যালশিয়ামে ভরপুর বীজটি শুধু মেদ ঝরাতেই সাহায্য করে না, শরীরে প্রয়োজনীয় ভিটামিন, খনিজের জোগানও দেয়।

কালো কিশমিশ: কিশমিশে মেলে আয়রন। মূলত যাঁরা রক্তল্পতায় ভুগছেন, তাঁদের খাদ্যতালিকায় কিশমিশ রাখা দরকার, বলছেন কলকাতার আর এক পুষ্টিবিদ শম্পা চক্রবর্তী। এতে রয়েছে পটাশিয়াম, ফাইবার। কিশমিশে থাকা অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট ক্ষতিকর ফ্রি র‌্যাডিক্যালের হাত থেকে কোষকে রক্ষা করে।

দু’টি উপাদান একসঙ্গে জুড়লে কী হবে?

পেটের জন্য ভাল: কিশমিশ এবং চিয়া বীজ, দু’টিতেই রয়েছে ফাইবার। দু’টি উপাদান একসঙ্গে খেলে ফাইবারের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে। ওজন কমাতে হলেও ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার পাতে রাখতে বলেন পুষ্টিবিদেরা। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতেও ফাইবার জরুরি। বিশেষত চিয়া বীজ জলে ভিজলে যে জেল জাতীয় পদার্থ তৈরি হয়, তা পেট পরিষ্কারে বিশেষ সাহায্য করে। ফাইবার পেটের স্বাস্থ্যের জন্যও ভাল।

শক্তি জোগায়: কিশমিশে থাকা আয়রন এবং চিয়া বীজ থেকে নির্গত শক্তি একসঙ্গে শরীরে গেলে ক্লান্তি কমে। দিনভর কর্মক্ষম থাকা যায়।

হার্টের জন্য ভাল: চিয়া বীজে রয়েছে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড। কিশমিশে মেলে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট। দু’টি উপাদানই হার্টের জন্য ভাল। প্রদাহ কমাতে এবং শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর ফ্রি র‌্যাডিক্যালগুলিকে নিষ্ক্রিয় করে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট। ফলে তা অক্সিডেটিভ স্ট্রেস মুক্ত রাখতে সাহায্য করে। ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড কোলেস্টেরলের মাত্রা ঠিক রাখতে এবং রক্তচাপ বশে রাখতে সহায়ক।

হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখে: কালো কিশমিশে মেলে ফাইটোইস্ট্রোজেন নামে একটি উপাদান। এই উপাদানটি হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে, বিশেষত মহিলাদের। চিয়া বীজে মেলে জ়িঙ্ক এবং সেলেনিয়াম। ত্বক ভাল রাখতে জরুরি হরমোনের কার্যকারিতা বৃদ্ধিতে এগুলি সাহায্য করে।

কী ভাবে পানীয়টি প্রস্তুত করবেন?

এক মুঠো কিশমিশ জলে ভিজিয়ে রাখতে হবে। আলাদা ভাবে ১ টেবিল চামচ চিয়া বীজ জলে ভিজিয়ে সারা রাত রাখতে হবে। জল টেনে চিয়া বীজ ফুলে উঠলে তার মধ্যে মিশিয়ে দিতে হবে কিশমিশ ভেজানো জল। চাইলে কিশমিশ এবং চিয়া বীজ একসঙ্গে মিক্সিতে ঘুরিয়ে নেওয়া যেতে পারে।

খেতে পারবেন কি সকলেই?

অনন্যা এবং শম্পা জানাচ্ছেন, শরীরে কোনও অসুখ না থাকলে এই দু’টি উপাদান মিশিয়ে খেলে উপকার অনেক। কিন্তু সকলের জন্য তা সমান উপকারী নয়। অনন্যা বলছেন,‘‘চিয়া বীজ খেলে রক্তচাপ কমে যেতে পারে। সে কারণে যদি কারও রক্তচাপ নিম্নমুখী হয় এবং কেউ রক্ত তরল করার ওষুধ খান, তাঁদের ক্ষেত্রে চিকিৎসক বা পুষ্টিবিদের পরামর্শ জরুরি।’’

“তবে কিডনি বা হজমের গন্ডগোল হলে খেতে হবে বুঝেশুনে”, বলছেন শম্পা। তিনি বলছেন, ‘‘ইরিটেবল বাওয়েল সিন্ড্রোম বা পেটের সমস্যা হলে দু’টি উপকরণ মিশিয়ে না খাওয়াই ভাল। এমন ধরনের সমস্যা থাকলে কিশমিশ খাওয়ায় সমস্যা নেই, কিন্তু চিয়া বীজ বুঝে খেতে হবে। বয়স্ক মানুষেরও কোষ্ঠকাঠিন্য থাকলে বীজের বদলে কিশমিশ ভেজানো জল খাওয়াই ভাল।’’ একই সঙ্গে ডায়াবেটিকদের সতর্ক করছেন শম্পা। তিনি জানাচ্ছেন, ডায়াবিটিস হলে চিয়া বীজ পরিমিত খাওয়ায় কোনও সমস্যা নেই। তবে কিশমিশ নিয়মিত খাওয়াটা ঠিক নয়।

পানীয় খাবেন কখন, কত বার?

পুষ্টিবিদ অনন্যা জানাচ্ছেন চিয়া এবং কালো কিশমিশ ভেজানো জল দিনে এক বার খেলেই যথেষ্ট। সকালে উঠে খালি পেটে খাওয়াই ভাল।

Chia seeds Chia Seed Black Raisin Healthy Lifestyle Tips Health care
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy