ডায়াবিটিস হলে যেমন চিনি বাদ, নির্দিষ্ট ওষুধ খাওয়া জরুরি তেমনই গুরুত্বপূর্ণ হল, পায়ের যত্ন নেওয়া। কারণ, ডায়াবিটিস হলে সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায় কয়েক গুণ। পায়ের কাটা অংশ থেকেই হতে পারে বিপদ।
শীতের মরসুমে গোড়ালি ফাটে অনেকেরই। তা ছাড়া পা নরম রাখতে, খসখসে ভাব এড়াতে অনেকেই পায়ে ক্রিমও মাখেন। আর তা থেকেই ঘটতে পারে বিপদ। এক সাক্ষাৎকারে মাদুরাইয়ের এক হাসপাতালের ডায়াবিটিসের চিকিৎসক মহেশ বাবু জানিয়েছেন, কী ভাবে পায়ের যত্ন নেওয়া দরকার।
শীতের দিনে পা ধোয়া দরকার হালকা গরম জলে। পা পরিষ্কার করেই ময়েশ্চারাইজ়ার মাখেন অনেকে। অল্প মাখলে অসুবিধা নেই। তবে অনেকটা করে ময়েশ্চারাইজ়ারের পরত পায়ের পাতায় দিলে ছত্রাকের সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়তে পারে। চেন্নাইয়ের চিকিৎসক নন্দ কুমার আর এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, উচ্চমাত্রায় ডায়াবিটিস থাকলে ছোট ছোট স্নায়ু অনেক সময় অকেজো হয়ে যায়। পা ও পায়ের পাতার স্নায়ু অসাড় হতে শুরু করে। পায়ের পাতায় কোনও সংক্রমণ হলে, কেটেকুটে গেলেও অনেক সময় রোগী তা বুঝতে পারেন না বা সেই দিকে নজর দেন না। তার ফলেই সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায় অনেকটাই।
তবে শুধু পায়ের পরিচ্ছন্নতাই নয়, জুতো নির্বাচনেও বিশেষ নজর দিতে বলছেন চিকিৎসকেরা। ডায়াবিটিসের রোগীদের জন্য পা-ঢাকা নরম ও আরামদায়ক জুতো পরতে বলছেন চিকিৎসকেরা। ডায়াবেটিক-বান্ধব জুতোও বাজারে মেলে। সেগুলিও পরা যায়।
আরও পড়ুন:
কী ভাবে শীতে পায়ের যত্ন নেবেন ডায়াবেটিকেরা?
১। বাইরে থেকে বাড়ি ফিরে পা ঈষদুষ্ণ জলে ভাল করে ধোয়া জরুরি। দরকার হলে ছোট গামলা হালকা গরম জলে পা কিছুক্ষণ ডুবিয়ে রাখতে পারেন। পা পরিষ্কারের পাশাপাশি শরীর আরাম পাবে। পা মুছে নিয়ে দেখতে হবে কোথাও কোনও কাটা, ফোলা রয়েছে কি না।
২। শীতের দিনে পা ফাটে। গোড়ালি, বুড়ো আঙুলের নীচের চামড়াই বেশি ফাটে। পা পরিষ্কারের পরে এই অংশগুলিতে লোশন বা ক্রিম মাখুন। তবে পায়ের আঙুলের ফাঁকে বা যে অংশগুলি ঘামে সেখানে বেশি ময়েশ্চারাইজ়ার না মাখাই ভাল। ঘাম জমে, বা বেশি ময়েশ্চারাইজ়ার থেকে ছত্রাক সংক্রমণ হতে পারে।
৩। জুতোর সোলটি যেন অবশ্যই নরম হয়। ডায়াবেটিক বান্ধব জুতো পরা জরুরি, এতে পায়ের চাপ সর্বত্র সঠিকভাবে পড়ে। ব্যথা হয় না। সঠিক জুতো না পরে শ্রমসাধ্য শরীরচর্চা, দৌড়াদৌড়ি, পাহাড়ে ওঠা ঠিক নয়। এতে সমস্যা বাড়তে পারে।
৪। অনেকের পা ফুলে যায়। তা কমাতে সারা দিনে হাঁটাচলা করা জরুরি। রক্ত সঞ্চালন যেন ঠিক থাকে, দেখা দরকার।
৫। পায়ের কোথাও ক্ষত হলে, চামড়ার রং কালচে হয়ে গেলে, সংক্রমণ দেখা দিলে একেবারেই দেরি না করে চিকিৎসকের দ্বারস্থ হওয়া দরকার।