রাহুকে নিয়ে আমরা কমবেশি সকলেই চিন্তিত। রাহুর কুনজর থেকে সকলেই দূরে থাকতে চাই। যদিও আমরা চাইলেই হবে না। জন্মপত্রিকায় অবস্থান অনুযায়ী সকল গ্রহ তাদের ফল দান করবেই। তবে প্রতিকার করে অশুভ ফল হ্রাস করা সম্ভব। রাহুর প্রতিকারের বিষয়ে জানতে প্রথমে জানা প্রয়োজন রাহু কী?
জ্যোতির্বিজ্ঞান অনুসারে, রাহুর অন্যান্য গ্রহের ন্যায় শারীরিক কোনও অস্তিত্ব নেই। রাহু একটি গাণিতিক বিন্দু বা নোড। তবে জ্যোতিষশাস্ত্র মতে রাহুর গুরুত্ব অপরিসীম। কারণ জন্মছকে অবস্থান এবং গ্রহের সঙ্গে সম্পর্ক অনুযায়ী রাহু ফল দান করে।
আরও পড়ুন:
এই কারণে জ্যোতিষশাস্ত্র মতে রাহুকে শনির ন্যায় বলা হয়। রাহু রাশিচক্র পূর্ণ প্রদক্ষিণে সময় নেয় কমবেশি ১৮ বছর। অর্থাৎ, এক এক রাশি অতিক্রম করে কমবেশি ১ বছর ৬ মাসে। জন্মসময় অনুযায়ী, রাহু বিভিন্ন অবস্থান বা গোচরকাল অনুযায়ী শুভ বা অশুভ ফল দান করে।
রাহুর বীভৎসতা বোঝাতে পুরাণে রাহুকে ভয়ঙ্কর রাক্ষসের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। বিষ্ণুপুরাণ অনুসারে, দেব এবং অসুরগণ ক্ষীরসাগর মন্থন করে অমৃত লাভ করলে ওই অমৃত পানের জন্য রাক্ষস স্বরভানু ছলনার আশ্রয় নিয়ে দেবতাদের সঙ্গে অমৃত পান করেন। সূর্য এবং চন্দ্র সেই ঘটনা দেখে তৎক্ষণাৎ ভগবান বিষ্ণুকে বিষয়টি জানালে ভগবান বিষ্ণু সুদর্শন চক্র দ্বারা স্বরভানুর দেহ থেকে মস্তক ছিন্ন করেন। দ্বিখণ্ডিত দেহের মস্তকটি রাহু এবং দেহভাগ কেতু নামে গ্রহের স্থান পায়।
আরও পড়ুন:
রাহুর অন্যান্য গ্রহের ন্যায় শারীরিক অস্তিত্ব না থাকলেও জন্মকুণ্ডলীতে অবস্থান অনুযায়ী শুভ বা অশুভ ফল দান করে। জ্যোতিষশাস্ত্র অনুযায়ী রাহু অশুভ গ্রহ।
রাহু যে গ্রহের সঙ্গে বা যে রাশিতে অবস্থান করে, সেই রূপ ফল দান করে। সাধারণত পার্থিব ফলই বেশি দান করে ।
গোচরকালে রাশির (জন্মকালীন চন্দ্রের) দ্বাদশে, নবমে এবং পঞ্চমে রাহু অবস্থান করলে সর্বাধিক অশুভ ফল দান করে। এই রূপ অবস্থান রাহুর অশুভ অবস্থান।
আরও পড়ুন:
জন্মপত্রিকায় রবি, চন্দ্র বা মঙ্গলের সঙ্গে রাহুর সম্পর্ক থাকলে রাহুর প্রতিকারের প্রয়োজন হয়।
রাহুর দশাকালে, অর্থাৎ মহাদশা বা অন্তঃদশা কালে রাহুর শুভ বা অশুভ ফল প্রাপ্তি বৃদ্ধি পায়। এই সময়কালে রাহুর প্রতিকার (দান বা পূজা) প্রয়োজন।
রাহুর বিভিন্ন প্রতিকারের মধ্যে দেবী দুর্গার পূজা বিশেষ ফলদায়ী। দেবী দুর্গার পূজা হয় নয় দিন। নবরাত্রির নয় দিন ভক্তিভরে দেবী দুর্গার পূজা-আরাধনার মাধ্যমে রাহুর অশুভ প্রভাব হ্রাস বা বিনাশ করা সম্ভব।