ছত্তীসগঢ় সরকারের আহ্বানে সাড়া দিয়ে বস্তার ডিভিশনে আবার আত্মসমর্পণ মাওবাদীদের। এ বার নারায়ণপুর জেলায়। পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার সাত জন মহিলা-সহ নিষিদ্ধ সংগঠন সিপিআই (মাওবাদী)-র মোট ১৬ জন সদস্য আত্মসমর্পণ করেছেন। এঁদের মধ্যে মাওবাদীদের সশস্ত্র শাখা পিএলজিএ (পিপলস লিবারেশন গেরিলা আর্মি)-র আত্মসমর্পণকারী ন’জন জঙ্গির মাথার মোট দাম ছিল ৪৮ লক্ষ টাকা।
আত্মসমর্পণকারীদের মধ্যে রয়েছেন, পিএলজিএ-র ‘সবচেয়ে দক্ষ বাহিনী’ হিসাবে পরিচিত ১ নম্বর প্লাটুনের ডেপুটি কমান্ডার পোদিয়া মারকাম ওরফে রতন এবং প্লাটুন সদস্য মনোজ দুগ্গা ওরফে, সুমিত্রা ওরফে সানি কুরসাম এবং ভ্যানিলা ফারসা। রয়েছেন দক্ষিণ বস্তার ডিভিশনাল কমিটির সদস্য সকলেই সামরিক কোম্পানির সদস্য এবং বিভাগীয় কমিটির নেতা গাওয়াড়ে ওরফে দিবাকর। এঁদের প্রত্যেকের উপর ৮ লক্ষ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছিল। ছত্তীসগঢ় পুলিশের আইজি (বস্তার রেঞ্জ) পি সুন্দররাজ বলেন, ‘‘ভ্রান্ত মতাদর্শ সম্পর্কে দ্রুত মোহভঙ্গ হচ্ছে মাওবাদী নেতা-কর্মীদের। বস্তার জুড়ে আত্মসমর্পণের ঘটনাও তাই বাড়ছে।’’
আরও পড়ুন:
গত ২০ মাসে নারায়ণপুর-সহ বস্তার ডিভিশনের সাতটি জেলায় মোট ১৮৩৭ জন মাওবাদী আত্মসমর্পণ করেছেন জানিয়ে সুন্দররাজ বলেন, ‘‘সরকারি নীতি মেনেই আত্মসমর্পণকারীদের সমাজের মূল স্রোতে ফেরানোর জন্য সহায়তা ও পুনর্বাসন প্যাকেজ দেওয়া হবে।’’ প্রসঙ্গত, মাওবাদী নেতা-কর্মীদের মূল স্রোতে ফেরাতে গত বছর ছত্তীসগঢ় পুলিশ ‘নিয়া নার নিয়া পুলিশ’ (আমাদের গ্রাম, আমাদের পুলিশ) প্রচার কর্মসূচি শুরু করেছিল। তার আগে ২০২০ সালের জুনে শুরু হয়েছিল ‘লোন ভারাতু’ (গোন্ড ভাষায় যার অর্থ ‘তোমার বাড়ি ফিরে যাও’) পুনর্বাসন কর্মসূচি। ছত্তীসগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রী বিষ্ণু দেও সাই গত মার্চে ‘নকশাল আত্মসমর্পণ এবং আক্রান্তদের পুনর্বাসন নীতি ২০২৫’ ঘোষণা করেছিলেন। আত্মসমর্পণকারী মাওবাদীদের পুনর্বাসন, চাকরি, আর্থিক সহায়তা এবং আইনি সুরক্ষা প্রদান করার মতো নানা বিষয় রয়েছে ওই প্রকল্পে। নতুন আত্মসমর্পণ নীতিতে মাওবাদী সদস্যদের ন্যূনতম ৫০ হাজার এবং সংগঠনের রাজ্য কমিটি, আঞ্চলিক কমিটি, কেন্দ্রীয় কমিটি এবং পলিটব্যুরোর সদস্যদের মতো উচ্চপদস্থ ক্যাডারদের পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত অনুদান দেওয়া হচ্ছে।