রাষ্ট্রপুঞ্জের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ‘ইউনাইটেড নেশন্স হাই কমিশনার ফর রিফিউজিস’ (ইউএনএইচসিআর)-এর ভূমিকা নিয়ে এ বার মন্তব্য করল সুপ্রিম কোর্ট। সম্প্রতি এক মামলার শুনানির সময় আদালতের মন্তব্য, “ওরা তো এখানে শোরুম খুলে বসেছে। যাকে ইচ্ছা শংসাপত্র দিয়ে যাচ্ছে। আমরা তাদের নিয়ে কোনও কথা বলতে চাই না।”
সুদানের এক নাগরিক সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। তাঁর বিরুদ্ধে যাতে কোনও কড়া পদক্ষেপ না-করে প্রশাসন, সেই আর্জি জানান তিনি। মামলাকারীর দাবি, আফ্রিকার দেশগুলির নাগরিকদের ধরপাকড় শুরু হয়েছে দিল্লিতে। এ অবস্থায় নিজের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ এড়াতে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেন তিনি। চলতি সপ্তাহেই এই মামলার শুনানি ছিল শীর্ষ আদালতের বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং জয়মাল্য বাগচীর বেঞ্চে।
মামলার শুনানিতে ওই বিদেশি নাগরিকের আইনজীবী সওয়াল করেন, তাঁর মক্কেলের পরিবারের কাছে ইউএনএইচআরসি-র দেওয়া শরণার্থী শংসাপত্র রয়েছে। আইনজীবী জানান, ওই ব্যক্তি ২০১৩ সাল থেকে ভারতে রয়েছেন। তাঁর স্ত্রী এবং দুই সন্তানও রয়েছে। এক সন্তানের বয়স মাত্র ৪০ দিন। মামলাকারীর স্ত্রী এবং সন্তানদের ইউএনএইচআরসি শরণার্থী বলে চিহ্নিত করেছে বলেও আদালতে জানান আইনজীবী।
আইনি খবর পরিবেশনকারী ওয়েবসাইট ‘বার অ্যান্ড বেঞ্চ’ অনুসারে, আইনজীবীর কথা শুনে বিচারপতি কান্ত বলেন, “ওরা তো এখানে শোরুম খুলে বসেছে। যাকে ইচ্ছা শংসাপত্র দিয়ে যাচ্ছে। আমরা ওদের বিষয়ে কোনও কথা বলতে চাই না।” সুপ্রিম কোর্টের মন্তব্যের পরে আইনজীবী আদালতকে বোঝানোর চেষ্টা করেন যে রাষ্ট্রপু়ঞ্জের ওই সংস্থা সব কিছু যাচাই করে তবেই শরণার্থীর কার্ড দেয়। আদালতে তিনি সওয়াল করেন, বিস্তারিত তথ্য যাচাইয়ের পরেই ওই শংসাপত্র দেওয়া হয়। এই প্রক্রিয়ায় সাধারণত কয়েক বছর লেগে যায় বলেও আদালতে জানান তিনি।
আরও পড়ুন:
তবে বিচারপতি বাগচী স্পষ্ট করে দেন, শরণার্থী সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক কনভনেশন (১৯৫১ সালের কনভেনশন)-কে ভারত আনুষ্ঠানিক ভাবে স্বীকৃতি দেয়নি। তাই মামলাকারীর জন্য কোনও এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেই। তাঁর আবেদন খারিজ করে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, অন্তর্বর্তী রক্ষাকবচ চাওয়ার পরিবর্তে মামলাকারী উপযুক্ত মাধ্যমে নিজের আশ্রয় চাইতে পারেন। তখন আইনজীবী জানান, তাঁর মক্কেল অস্ট্রেলিয়ায় আশ্রয়ের জন্য আবেদন করেছেন। সেটি এখনও বিবেচনাধীন রয়েছে। এর মধ্যে যাতে অন্তর্বর্তী রক্ষাকবচ দেওয়া হয়, সেই আবেদন জানান তিনি। তবে সেই আর্জি গ্রহণযোগ্য বলে মনে করছে না আদালত।