Advertisement
E-Paper

পাঁচ কারণ: সুপ্রিম কোর্ট কেন নির্বাচনী বন্ড প্রকল্প বাতিল করার পক্ষে

২০১৮ সালে নির্বাচনী বন্ড প্রকল্প চালু করেছিল কেন্দ্র সরকার। রাজনৈতিক দলগুলি নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে যদি অনুদান নেয়, তবে তাতে স্বচ্ছতা থাকবে, এই যুক্তি দিয়েই নতুন প্রকল্প শুরু করেছিল মোদী সরকার।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৫:৩৩
5 reason why Supreme Court struck down the Electoral Bonds Scheme

সুপ্রিম কোর্ট। — ফাইল চিত্র।

নরেন্দ্র মোদী সরকারের নির্বাচনী বন্ড প্রকল্প ‘অসাংবিধানিক’ বলে উল্লেখ করে তা ‘বাতিল’ করা উচিত বলে রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন দেশের বিরোধী দলের নেতারা। বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ নির্বাচনী বন্ড প্রকল্প বাতিলের সুপারিশ করে।

২০১৮ সালে নির্বাচনী বন্ড প্রকল্প চালু করেছিল কেন্দ্র সরকার। নির্বাচনের সময় রাজনৈতিক দলগুলি যে অনুদান পায়, তার মধ্যে স্বচ্ছতা থাকার প্রয়োজন। নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে যদি দলগুলি অনুদান নেয়, তবে তাতে স্বচ্ছতা থাকবে, এই যুক্তি দিয়েই নতুন প্রকল্প শুরু করেছিল মোদী সরকার। এই প্রকল্পে দেশের যে কোনও ব্যক্তি বা সংস্থা এই বন্ড কিনতে পারে।

সুপ্রিম কোর্ট কেন নির্বাচনী বন্ড প্রকল্প বাতিল করার সুপারিশ করল?

১) কেন্দ্রের নির্বাচনী বন্ড প্রকল্পকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার সেই মামলার রায় দেয় প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। রায়দানের সময় প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘এই প্রকল্প অসাংবিধানিক। তাই এটি বাতিল করা উচিত। এই প্রকল্প নাগরিকদের তথ্যের অধিকার আইন লঙ্ঘন করে। এ ছা়ড়াও এই প্রকল্পের মাধ্যমে সংবিধানের ১৯(১)(ক) অনুচ্ছেদের অধীনে বাক্ এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতাও লঙ্ঘন করে।’’

২) সুপ্রিম কোর্ট আরও বলেছে, যে ব্যাঙ্কগুলি নির্বাচনী বন্ড দিত, তা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। সেই সঙ্গে নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে জমা পড়া অনুদানের বিশদ তথ্য জাতীয় নির্বাচন কমিশনের হাতে তুলে দিতে হবে স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়াকে (এসবিআই)।

) প্রধান বিচারপতি বৃহস্পতিবার নির্বাচনী বন্ডকে ‘কুইড প্রো কুয়ো’ বলে মন্তব্য করেছেল। অর্থাৎ কোনও কিছুর বিনিময়ে কাউকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়া। সুপ্রিম কোর্ট বলে, রাজনৈতিক দলগুলিতে আর্থিক অনুদান দু’টি পক্ষের জন্য তৈরি করা হয়। রাজনৈতিক দলগুলিকে সমর্থন করার জন্য নয়তো ‘কুইড প্রো কুয়ো’ উপায়ে অবদান রাখার জন্য।

৪) প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, ‘‘সর্বজনীন নীতি পরিবর্তন করার ক্ষেত্রে শুধু রাজনৈতিক দলগুলির অবদান থাকতে পারে না। এক জন ছাত্র বা এক জন দিনমজুরও অবদান রাখেন।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় এক জন ব্যক্তির থেকে কোনও সংস্থার অংশগ্রহণ অনেক বেশি প্রভাব ফেলে। কোম্পানি আইনের ১৮২ নম্বর সংশোধন করে কোনও কোম্পানি এবং ব্যক্তিকে একই স্তরে নিয়ে আসা স্বেচ্ছাচারিতা।’’

৫) ভোটে কালো টাকার খেলা বন্ধ করার কথা বলে নির্বাচনী বন্ড চালু করেছিল মোদী সরকার। সুপ্রিম কোর্ট এই প্রসঙ্গে বৃহস্পতিবার বলে, ‘‘নির্বাচনী বন্ড প্রকল্প কালো টাকা আটকানোর একমাত্র উপায় হতে পারে না। অন্য অনেক বিকল্প রয়েছে।’’

উল্লেখ্য, কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী থাকাকালীন ২০১৮ সালে প্রয়াত অরুণ জেটলি নির্বাচনী বন্ডের কথা ঘোষণা করেছিলেন। ২০১৭-র অর্থ বিলের মাধ্যমে আইনে একগুচ্ছ সংশোধনী এনে মোদী সরকার ২০১৮ থেকে নির্বাচনী বন্ড চালু করেছিল। এর ফলে কোনও ব্যক্তি বা কর্পোরেট সংস্থা রাজনৈতিক দলগুলিকে চাঁদা দিতে চাইলে, বন্ড কিনে সংশ্লিষ্ট দলকে দিতে হবে। এক হাজার, ১০ হাজার, এক লক্ষ, ১০ লক্ষ এবং এক কোটি টাকা মূল্যের বন্ড পাওয়া যাবে। রাজনৈতিক দলগুলি নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্টে সেই বন্ড ভাঙিয়ে নিতে পারবে। কিন্তু কে, কত টাকা দিচ্ছেন, তা বোঝা যাবে না। নির্বাচনী বন্ড চালু হওয়ার পর বিষয়টির স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। সেই নিয়ে করা মামলায় ‘ঐতিহাসিক’ রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট।

electoral bond Supreme Court
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy