Advertisement
E-Paper

অরাবলী পাহাড়ে অবৈধ খনন চলছে অবাধে, সাত বছরে ৪০ হাজারেরও বেশি অভিযোগ! আর কী তথ্য মিলল রাজস্থানে?

২০১৮-২৩ রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন কংগ্রেস নেতা অশোক গহলৌত। তাঁর জমানায় অরাবলী পাহাড়ে অবৈধ খননের অভিযোগে ৩১৭৯টি এফআইআর দায়ের করা হয়েছিল। গত দু’বছরের বিজেপি জমানায় ১০০২টি।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৩:০৫
7173 illegal mining FIRs in Rajasthan in last 7 years, 4181-plus in Aravalli districts

অরাবলী পাহাড়শ্রেণি। —ফাইল চিত্র।

অরাবলী পাহাড়ের ‘সংজ্ঞা নির্ধারণ’ ও খননকার্য নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিক রায় ঘিরে আলোচনার আবহেই রাজস্থানে মিলল চমকপ্রদ তথ্য। সরকারি সূত্র উদ্ধৃত করে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, গত সাত বছরে মরুরাজ্যে ৭১ হাজারেরও বেশি অবৈধ খননের ঘটনা চিহ্নিত করা হয়েছে। তার অধিকাংশই অরাবলী লাগোয়া জেলাগুলিতে।

গত সাত বছরে মোট ৭১,৩২২টি অবৈধ খননের অভিযোগের তদন্তে নেমে সে রাজ্যের খনি দফতর পুলিশের কাছে ৭,১৭৩টি এফআইআর দায়ের করেছে। তার মধ্যে ৪,১৮১টি এফআইআর অরাবলী সন্নিহিত জেলাগুলিতে। ২০১৮ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৩-এর ডিসেম্বর পর্যন্ত রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন কংগ্রেস নেতা অশোক গহলৌত। তাঁর জমানায় অরাবলীতে অবৈধ খননের অভিযোগ ৩১৭৯টি এফআইআর দায়ের করা হয়েছিল। এর পরে গত দু’বছরে বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী ভজনলাল শর্মার জমানায় ১০০২টি।

প্রকাশিত প্রতিবেদনে দাবি, মোট ৭১৩২২টি অবৈধ খননের অভিযোগের মধ্যে ৪০১৭৫টি এসেছে অরাবলী লাগোয়া জেলাগুলি থেকেই। ২০১৮-২৩ পর্যন্ত কংগ্রেসের জমানায় অরাবলীতে অবৈধ খননের অভিযোগ মিলেছে ২৯,০০৯টি। বিজেপির গত দু’বছরের শাসনে ১০,৯৬৬টি। রাজস্থান সরকারের খনি দফতরের সচিব টি রবিকান্ত জানিয়েছেন, অবৈধ খননের অভিযোগ উঠলে তাঁরা প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে অনেক সময় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা সংস্থাকে জরিমানা করে রেহাই দেন। গুরুতর অভিযোগের ক্ষেত্রে এফআইআর করা হয়।

কেন্দ্রীয় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রকের তরফে অরাবলী পাহাড় ও পাহাড়শ্রেণির যে সংজ্ঞা পেশ করা হয়েছিল, চলতি মাসে সুপ্রিম কোর্ট তা অনুমোদন করেছে। ওই সংজ্ঞা অনুযায়ী আশপাশের এলাকার চেয়ে অন্তত একশো মিটার উচ্চতার ভূখণ্ডই কেবলমাত্র ‘অরাবলী পাহাড়’ বলে গণ্য হবে। শীর্ষ আদালতের এই রায় নিয়ে ইতিমধ্যেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন পরিবেশ এবং বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞদের একাংশ। তাঁদের অভিযোগ, এই রায়ের ফলে এত দিন যে ভূখণ্ড অরাবলী পাহাড়শ্রেণি বলে গণ্য হয়ে এসেছে, তার ৯০ শতাংশই আর পরিবেশ সংরক্ষণ বিধির অধীনে সুরক্ষাযোগ্য থাকবে না। বারো হাজারেরও বেশি পাহাড়ের মধ্যে মাত্র হাজারখানেক আদালতের শর্ত পূর্ণ করতে পারবে। ফলে রাজস্থান, গুজরাত, হরিয়ানা, দিল্লি জুড়ে বিস্তৃত বাকি সব এলাকায় নির্বিবাদে খনন করা যাবে। পর্যটন এবং অন্যান্য বাণিজ্যিক কারণে নির্মাণ করা যাবে।

বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, পরিবেশ সুরক্ষার নিরিখে ছোট পাহাড়, ঝোপ-গুল্ম আবৃত জমির গুরুত্ব অপরিসীম। ভূগর্ভস্থ জলের সঞ্চয় বাড়াতে, মাটির ক্ষয় রুখতে, মরুকরণ নিবারণে, ধুলো-বালির ঝড় আটকে দিতে, বন্যপ্রাণীর আবাস এবং যাতায়াতের পথ হিসাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে অরাবলীর ওই অনুচ্চ পাথুরে এলাকাগুলি। এই কারণেই অতীতের নানা সমীক্ষা কুড়ি ফুট উচ্চতার পাহাড়, সেগুলির ঢালু অংশ এবং আনুষঙ্গিক ভূখণ্ডকেও অরাবলীর পাহাড়শ্রেণির বলেই ধার্য করে এসেছে। অন্য দিকে, ভূতত্ত্ববিদদের একাংশের দাবি, সমুদ্রতল থেকে উচ্চতার পরিমাপ না করে আশেপাশের এলাকার থেকে উচ্চতার পরিমাপও ভূগোলের প্রচলিত প্রথার বাইরে। তাই কেন্দ্রীয় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রকের সুপারিশ পুরোপুরি অবৈজ্ঞানিক। এমনকি, এ ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে কেন্দ্রের নিযুক্ত বিশেষজ্ঞ কমিটির সুপারিশও গ্রাহ্য করেনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকার। যদিও সুপ্রিম কোর্টের রায়ের ভুল ব্যাখ্যা করা হচ্ছে বলে পাল্টা অভিযোগ তুলেছেন কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশমন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব। প্রাকৃতিক সম্পদ, জীবসম্পদ এবং বাস্তুতন্ত্র রক্ষা করতে কেন্দ্র বদ্ধপরিকর জানিয়ে তাঁর দাবি, ওই পাহাড়শ্রেণির ৯০ শতাংশ এলাকাই সংরক্ষিত অঞ্চল রাখা হবে।

Iillegal Mining Scam Rajasthan aravalli hills controversy Aravalli Range Illigal Mine Mining Supreme Court Ministry of Environment, Forest & Climate Change
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy