৭২ ঘণ্টা পেরিয়ে গিয়েছে। তেলঙ্গানার শ্রীশৈলম সুড়ঙ্গে এখনও আটকে আট শ্রমিক। সময় যত গড়াচ্ছে উৎকণ্ঠা আর উদ্বেগ তত বাড়ছে। আটকে থাকা শ্রমিকদের বার করে আনতে ‘র্যাট হোল মাইনার’দের ডাক পড়েছে। সোমবারই একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছোয়। মঙ্গলবার আরও একটি দল এসে পৌঁছেছে। ঘটনাচক্রে, ‘র্যাট হোল মাইনার’দের এই দলের নেতৃত্বে রয়েছেন মুন্না কুরেশি। তাঁর উপরই এখন ভার পড়েছে আটক শ্রমিকদের জীবিত এবং সশীরের ফিরিয়ে আনার।
এই মুন্না এবং তাঁর দলবলই উত্তরকাশীর সিল্কিয়ারা সুড়ঙ্গে আটক ৪১ জন শ্রমিকের ত্রাতা ছিলেন। যখন সমস্ত অত্যাধুনিক এবং উন্নত প্রযুক্তি ব্যর্থ হয়েছিল শ্রমিকদের উদ্ধারে, তখন ডাক পড়েছিল ‘র্যাট হোল মাইনার’ মুন্নাদের। আবার তাঁদের ডাক পড়ল। এ বার ঘটনাস্থল তেলঙ্গানার শ্রীশৈলম সুড়ঙ্গ। মুন্না নিজে ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখছেন। সুড়ঙ্গের ভিতরে কী অবস্থা, কোথায় শ্রমিকেরা আটকে রয়েছেন, তা বুঝে নেওয়ার চেষ্টা করছেন।
সিল্কিয়ারা সুড়ঙ্গের উদ্ধারকাজে ‘র্যাট হোল মাইনার’-এর অন্যতম সদস্য মহম্মদ ইরশাদ কুরেশি বলেন, ‘‘সুড়ঙ্গের ভিতরে কী পরিস্থিতি প্রথমে তা বুঝে নেওয়ার চেষ্টা করছি। তার পরই পরিকল্পামাফিক কাজ শুরু করব। ছ’জনের একটি দল সোমবারই এসেছে। মঙ্গলবার আরও ছ’জন যোগ দিয়েছেন।’’
শনিবার সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ সুড়ঙ্গের একাংশে ধস নামে। তাতেই সুড়ঙ্গের সাড়ে ১৩ কিলোমিটার ভিতরে আটকে গিয়েছেন আট শ্রমিক। তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন বলে জানিয়েছেন উদ্ধারকারীরা। সুড়ঙ্গের ভিতরে জল এবং কাদা ভরে গিয়েছে। তা রবিবার থেকেই বার করার প্রক্রিয়া চলছে। কিন্তু কাজ বার বার থমকে যাচ্ছে জল আর কাদার কারণেই। সুড়ঙ্গের ভিতরে কাদাজলের পরিমাণ বাড়তে শুরু করায় বিকল্প উপায় নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে। এ দিকে সময়ও ক্রমশ কমছে। ফলে দ্রুত উদ্ধার না করতে পারলে পরিস্থিতি যে ভয়ানক হতে পারে, সেই আশঙ্কাই করছেন উদ্ধারকারীরা। প্রতি মিনিটে ৩২০০ লিটার জল বার করা হচ্ছে সুড়ঙ্গ থেকে। কিন্তু তার পরেও উদ্ধারকাজ নিয়ে নানা সংশয় তৈরি হচ্ছে। সুড়ঙ্গে আটকদের মধ্যে দু’জন ইঞ্জিনিয়ার, দু’জন অপারেটর এবং চার শ্রমিক রয়েছেন।
২০২৩ সালে উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশীতে নির্মীয়মাণ একটি সুড়ঙ্গে ধস নেমে ৪১ জন শ্রমিক ভিতরে আটকে পড়েন। ১৭ দিন পর সব শ্রমিককেই জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। যখন সমস্ত আধুনিক উপায় বিফলে গিয়েছিল, ডাক পড়েছিল ‘র্যাট হোল মাইনার’দের। সেই দলের ভূমিকা ছিল অনস্বীকার্য। ওই উদ্ধারকাজের নেতৃত্বে ছিলেন মুন্না কুরেশি। সেই মুন্নারই ডাক পড়ল আবার। প্রেক্ষিত এক। কিন্তু ঘটনাস্থল আলাদা। এ বার তেলঙ্গানা।