রাজ্যসভায় প্রথম বক্তৃতায় সংবিধানের মূল কাঠামো সংক্রান্ত রায় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি ও মনোনীত সদস্য রঞ্জন গগৈ। আজ জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা লোপ নিয়ে মামলার সময়ে সুপ্রিম কোর্টে সেই প্রসঙ্গ উল্লেখ করলেন আইনজীবী ও সাংসদ কপিল সিব্বল। জবাবে প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় জানালেন, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির বক্তব্য মেনে চলার দায় কারও নেই।
গত কাল রাজ্যসভায় নিজের প্রথম বক্তৃতায় দিল্লির আমলাদের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নরেন্দ্র মোদী সরকারের আনা বিলকে সমর্থন করেন গগৈ। ওই বিল সংবিধানের মূল কাঠামোর বিরোধী বলে দাবি করেছিলেন বিরোধীদের। গগৈ বলেন, সংবিধানের মূল কাঠামো তত্ত্বের আইনি ভিত্তি নিয়ে বিতর্কের অবকাশ আছে বলে মনে করেন তিনি। কেশবানন্দ ভারতী মামলার রায়ে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, সংবিধানের কিছু অংশ তার মূল কাঠামোর অন্তর্ভুক্ত। সেগুলি পরিবর্তনের অধিকার সংসদের নেই। আগেও এই রায়কে আক্রমণ করেছেন উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়। বিরোধীদের দাবি, মূল কাঠামো পরিবর্তন করতে চাইছে মোদী সরকার। গত কাল গগৈর বক্তব্যের পরেও কংগ্রেস দাবি করে, এ বার প্রাক্তন প্রধান বিচারপতিকে সামনে রেখে মূল কাঠামোর উপরে হামলা চালাতে উদ্যোগী হয়েছে মোদী সরকার।
জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা রদের ক্ষেত্রেও সংবিধানের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর নীতি ভঙ্গ করা হয়েছিল বলে দাবি বিরোধীদের। সুপ্রিম কোর্টে এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাতেও এ কথা জানিয়েছেন আবেদনকারীরা। আজ সেই মামলার শুনানির সময়ে আবেদনকারীদের আইনজীবী ও সাংসদ কপিল সিব্বল প্রধান বিচারপতিকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘‘এখন আপনার এক সহকর্মীই বলেছেন মূল কাঠামোর তত্ত্ব নিয়েও সন্দেহ আছে।’’ জবাবে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘যদি কোনও সহকর্মীর কথা বলেন তবে বর্তমান সহকর্মীর কথা বলতে হবে। প্রাক্তন বিচারপতির বক্তব্য তাঁর ব্যক্তিগত মতের প্রতিফলন। তা মেনে চলার দায় কারও নেই।’’ সিব্বল বলেন, ‘‘আপনার কথা শুনে বিস্মিত হলাম। নিশ্চয়ই ওই বক্তব্য মানার দায় কারও নেই।’’ সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বলেন, ‘‘আদালতে যা ঘটে তা নিয়ে সংসদে আলোচনা হয় না। আবার আদালতেও সংসদে যা ঘটে তা নিয়ে আলোচনা হয় না। সকলেরই মতপ্রকাশের স্বাধীনতা আছে। সিব্বল এখানে এ নিয়ে কথা বলছেন কারণ গত কাল তিনি সংসদে ছিলেন না। এই বিষয়গুলি সংসদের হাতে ছেড়ে দেওয়াই ভাল।’’ সংবাদ সংস্থা
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)