Advertisement
E-Paper

কী ভাবে কাজ করে জ্বালানি সুইচ? এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানে কী ঘটেছিল? রিপোর্ট পড়ে দেখে মতামত দিলেন এক পাইলট

তদন্তকারী সংস্থা এয়ারক্রাফট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো (এএআইবি) ১৫ পাতার যে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে, তাতে দুর্ঘটনার মুহূর্তে ককপিটে দুই পাইলটের মধ্যে কী কথা হয়েছে, তার উল্লেখ রয়েছে।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০২৫ ১৮:৫৮
Air India plane crash report: How Fuel switch works

— প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

জ্বালানি সুইচই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানে! তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট বলছে, অহমদাবাদ বিমানবন্দরের রানওয়ে ছাড়ার পর আর ইঞ্জিনে জ্বালানি পৌঁছোয়নি। যার ফলে ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে বিপত্তি ঘটে। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, কী ভাবে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল বিমানের জ্বালানি সুইচ?

তদন্তকারী সংস্থা এয়ারক্রাফট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো (এএআইবি) ১৫ পাতার যে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে, তাতে দুর্ঘটনার মুহূর্তে ককপিটে দুই পাইলটের মধ্যে কী কথা হয়েছে, তার উল্লেখ রয়েছে। সেখানে এক পাইলট বলছেন, ‘‘কেন তুমি বন্ধ (জ্বালানি সুইচ) করে দিলে?’’ জবাবে আর এক জন বলছেন, ‘‘আমি কিছু বন্ধ করিনি।’’ এয়ার ইন্ডিয়ার এই বিমানটিতে ক্যাপ্টেন ছিলেন সুমিত সবরওয়াল (৫৬)। কো-পাইলট ছিলেন ক্লাইভ কুন্দর (৩২)। কিন্তু কে কাকে ওই প্রশ্ন করেছিলেন আর কে উত্তর দিয়েছিলেন, তা স্পষ্ট নয় রিপোর্টে। কিন্তু, বিমান বিশেষজ্ঞদের একাংশের মত, কোনও সুস্থ, স্বাভাবিক চালক ওড়ার সময় ওই জ্বালানি সুইচ বন্ধ করে দেবেন না কখনওই। এটা সম্ভব নয়। সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে এক পাইলট বলেন, ‘‘ভুল করেও জ্বালানি সুইচের অবস্থান বদল সম্ভব নয়। এর একটা পদ্ধতি রয়েছে।’’

ওই বিমানচালক জানান, বিমানের ইঞ্জিনে জ্বালানি যাবে কি যাবে না, তা নিয়ন্ত্রিত হয় জ্বালানি সুইচ দিয়ে। এই সুইচের দু’টি অবস্থান হয়। একটিকে বলে ‘রান’। অন্যটি ‘কাট অফ’। সুইচ ‘রান’-এ নিয়ে যাওয়া মানে ইঞ্জিনে জ্বালানি যাবে। আর ‘কাট অফ’-এর অর্থ ইঞ্জিনে জ্বালানি পৌঁছোনো বন্ধ হয়ে যাবে। এ ক্ষেত্রে জ্বালানি সুইচ দাগ দিয়ে চিহ্নিত করা থাকে। সুইচের অবস্থান বদলের আগে সেটি টানতেও হয়। ফলে দুর্ঘটনাবশত সুইচের অবস্থা বদলাতে পারে না বলেই মত ওই বিমানচালকের।

জ্বালানি সুইচের উপরেই থাকে ‘থ্রাস্ট লিভার’। বিমানচালক বলেন, ‘‘থ্রাস্ট লিভার হল গাড়ির অ্যাক্সিলারেটর প্যাডেলের মতো। যত খুলবেন, তত গতি বাড়বে। বিমানে ইঞ্জিন চালু করার দু’টি ধাপ হয়। প্রথমে স্টার্ট সিলেক্টর ‘অন’ করতে হয়। তার পর চালু করা হয় জ্বালানি সুইচ।’’

ওই বিমানচালক জানান, বিমানের ইঞ্জিন চালু হওয়া মানে একসঙ্গে অনেক কিছু ঘটতে শুরু করে। ই়ঞ্জিন চলছে মানে ইঞ্জিনে জ্বালানি পৌঁছোচ্ছে। তখন ‘থ্রাস্ট লিভার’ নীচের দিকে নামানো থাকে। অর্থাৎ, গতি কম থাকে। ধীরে ধীরে তা বাড়তে থাকে। বিমানচালক বলেন, ‘‘বিমান যখন মাটি ছেড়ে উড়তে শুরু করে, টায়ারে থাকা সেন্সর জানান দেয়, বিমানটি এখন হাওয়ায় রয়েছে। সেই সময় পাইলটের ‘গিয়ার আপ’ বলার কথা। কিন্তু এ ক্ষেত্রে যে কথোপকথনের রিপোর্ট প্রকাশ্যে এসেছে, তাতে পাইলটকে ‘গিয়ার আপ’ বলতে শোনা যায়নি। কেন গিয়ার লিভার নীচে নামানো ছিল? সম্ভবত গিয়ার আপ করতে গিয়েই জ্বালানির সুইচ কাট অফ করা হয়েছিল।’’

বিমানচালকের অনুমান, ‘‘তখনই অন্য জন জিজ্ঞাসা করেন, ‘কেন বন্ধ করলে এটা?’ বিষয়টা বুঝতে পেরে সুইচ অন করা হয়েছিল ঠিকই। কিন্তু তত ক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছিল। তখন গিয়ার আপ করার কথাও তাঁরা ভুলে গিয়েছিলেন সম্ভবত।’’

তদন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী, পাইলটেরা সেই মুহূর্তে দু’টি জ্বালানির সুইচই আবার ‘কাটঅফ’ থেকে ‘রান’-এ নিয়ে এসেছিলেন। ইঞ্জিন চালু করার মরিয়া চেষ্টা করেছিলেন শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত। ইঞ্জিন-২ সাময়িক ভাবে স্থিতিশীল অবস্থায় ফিরেওছিল। কিন্তু ইঞ্জিন-১ আর চালু করা যায়নি। ঠিক কী কারণে জ্বালানির সুইচ বন্ধ হয়ে গেল, তা এখনও তদন্তের অধীন।

Gujarat Plane Crash Air India Flight
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy