ন্যায়দণ্ড নিয়ে দৌড় বিধায়কের। পিছনে ছুটছেন মার্শাল। —নিজস্ব চিত্র।
তৃণমূল বিধায়কের অদ্ভুত এবং বেনজির বিক্ষোভে হতচকিত হয়ে গেল ত্রিপুরা বিধানসভা। স্তব্ধ হয়ে গেল অধিবেশন। স্পিকারের পোডিয়াম থেকে আচমকা রুপোর তৈরি ন্যায়দণ্ডটি তুলে নিয়ে দৌড়তে শুরু করলেন তৃণমূল বিধায়ক সুদীপ রায়বর্মন। আগরতলার দাপুটে বিধায়ককে আটকাতে তাঁর পিছন পিছন ছুটলেন বিধানসভার মার্শালরা। কিন্তু অপ্রতিরোধ্য সুদীপকে আটকাতে পারলেন না তাঁরা। ন্যায়দণ্ড নিয়ে তিনি অধিবেশন কক্ষের বাইরে চলে গেলেন। ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন স্পিকার রমেন্দ্রচন্দ্র দেবনাথ।
মঙ্গলবার বিধানসভার কাজ শুরু হতেই প্রধান বিরোধী দল তৃণমূল এবং অপর বিরোধী দল কংগ্রেস বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেছিল। বনমন্ত্রী নরেশ জামাতিয়ার বিরুদ্ধে যৌন কেলেঙ্কারির যে অভিযোগ সম্প্রতি সামনে এসেছে, তা নিয়েই বিক্ষোভ দেখাচ্ছিল দুই বিরোধী দল। বনমন্ত্রীর অপসারণ দাবি করে ওয়েলে নেমে এসে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন তাঁরা। আচমকা স্পিকারের আসনের দিকে উঠে যান সুদীপ রায়বর্মন এবং পোডিয়ামের সামনে রাখা রুপোর ন্যায়দণ্ডটি তুলে নেন। এই বেনজির কাণ্ড দেখেই তৃণমূল বিধায়কের দিকে ছুটে যান বিধানসভার মার্শালরা। কিন্তু সুদীপ রায়বর্মন তত ক্ষণে ছুটতে শুরু করেছেন দরজার দিকে। মার্শালও পিছনে ছুটতে শুরু করেছেন তাঁকে আটকানোর জন্য।
দেখুন সেই ভিডিও...
স্পিকারের ন্যায়দণ্ড।
ঘটনার আকস্মিকতায় সরকার তো হতচকিত হয়ে যায়ই। বিরোধীদের বিক্ষোভও থেমে যায়। সুদীপবাবুর নিজের দলের বিধায়করাও সম্ভবত আশা করেননি, তিনি এমন কাণ্ড ঘটাতে চলেছেন। ন্যায়দণ্ড হাতে দৌড়তে থাকা সুদীপ রায়বর্মনকে অবশ্য আটকাতে পারেননি মার্শাল। তিনি অধিবেশন কক্ষের বাইরে চলে যান। সেখানেও বেশ কিছু ক্ষণ দৌড়ঝাঁপের পর তৃণমূল বিধায়কের হাত থেকে মার্শালরা ন্যায়দণ্ড উদ্ধার করেন।
স্পিকার রমেন্দ্রচন্দ্র দেবনাথ তৃণমূল বিধায়কের নিন্দা করে বলেছেন, ‘‘এই কাজ সংসদীয় রীতিনীতির সম্পূর্ণ বিরোধী।’’
আগরতলা বিধানসভা কেন্দ্রের চার বারের বিধায়ক সুদীপ রায়বর্মন আগে কংগ্রেসে ছিলেন। চলতি বছরেই তিনি এবং আরও কয়েক জন কংগ্রেস বিধায়ক দলত্যাগ করে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। এই ভাঙনের জেরে ১০ সদস্যের কংগ্রেস পরিষদীয় দল ৪ সদস্যে নেমে এসেছে। ৬ বিধায়ককে নিয়ে তৃণমূল প্রধান বিরোধী দলের মর্যাদা পেয়েছে। ত্রিপুরায় কংগ্রেসে এই ভাঙনের পিছনে সুদীপ রায়বর্মন অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন। পরবর্তী বিধানসভা নির্বাচনে তিনি ত্রিপুরায় তৃণমূলের তথা বিরোধী পক্ষের প্রধান মুখ হয়ে উঠতে চান বলেও আগরতলার রাজনৈতিক মহলে জল্পনা রয়েছে। স্পিকারের ন্যায়দণ্ড ছিনিয়ে নিয়ে পালানোর মতো বেনজির ঘটনা ঘটিয়ে তিনি আসলে খবরে থাকতে চাইছেন, বলছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy