কংগ্রেস সাংসদ গৌরব গগৈয়ের স্ত্রী এলিজাবেথ ক্লেয়ার গগৈ যে পাকিস্তানি সংগঠনে কাজ করতেন, তার প্রধান আলি তওকির শেখের বিরুদ্ধে এফআইআর করল অসম পুলিশ। অভিযোগ, ‘ভারত-বিরোধী’ কাজকর্মে যুক্ত থাকতে পারেন তিনি। সে কারণে তওকির এবং অজ্ঞাতপরিচয় কয়েক জনের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হল। রবিবারই এই নিয়ে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছিল অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মার নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভা। এলিজাবেথের সঙ্গে পাকিস্তানি নাগরিকের এই ‘যোগ’ দেশের নিরাপত্তা এবং সার্বভৌমত্বের উপর কোনও ভাবে প্রভাব ফেলেছে কি না, পুলিশকে তা দেখার নির্দেশ দিয়েছে হিমন্তের সরকার। গগৈ দাবি করেছেন, বিজেপির কয়েক জন নেতা তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে ‘অপপ্রচার’ করছেন। তিনি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
শেখের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার নির্দিষ্ট ধারায় এফআইআর রুজু করেছে অসম পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এক্স (সাবেক টুইটার)-এ পোস্ট দিয়ে সে কথা জানিয়েছেন হিমন্ত। এর আগে তিনি অভিযোগ করেন, গগৈয়ের স্ত্রীর পাকিস্তানি গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের সঙ্গে যোগ রয়েছে।
আরও পড়ুন:
শেখ ‘লিড পাকিস্তান’ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রধান। জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে কাজ করে সংগঠনটি। হিমন্তের দাবি, ইসলামাবাদে থাকার সময় এই সংস্থার হয়ে কাজ করেছেন গগৈয়ের স্ত্রী এলিজাবেথ। শেখের সঙ্গে ‘ক্লাইমেট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট নলেজ নেটওয়ার্ক’ (সিডিকেএন) সংগঠনের হয়েও কাজ করেছেন এলিজাবেথ। এরা ভারত এবং পাকিস্তান দুই দেশেই কাজ করে। হিমন্ত জানিয়েছেন, তাঁর আশা এই তদন্তে সাহায্য করবেন এলিজাবেথ। তদন্তকারী দলকে নিজের পাসপোর্ট, ভিসা, পর্যটনের নথি দেখাবেন। প্রয়োজনে গগৈও সাহায্য করবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি। হিমন্তের আরও দাবি, ২০১৪ এবং ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে স্বামীর হয়ে প্রচার করেছিলেন এলিজাবেথ। এর ফলে তিনি ভিসা নীতি ভঙ্গ করেছেন কি না, তা খতিয়ে দেখার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে চিঠি দেবেন। তাঁর কথায়, ‘‘কেউ রাজনৈতিক দলের নেতা বলে দেশের নিরাপাত্তার সঙ্গে আপস করা যায় না।’’
সংসদে গগৈ দেশের পরমাণু শক্তি এবং প্রতিরক্ষা বিষয়ে প্রশ্ন করেছিলেন। কেন তিনি সেই প্রশ্ন করেছিলেন, তা নিয়ে এ বার পাল্টা প্রশ্ন তুলেছেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত। তাঁর কথায়, ‘‘কেন তিনি ওই প্রশ্ন করেছিলেন, যেখানে বিষয়গুলি সংবেদনশীল।’’ হিমন্তের আরও কটাক্ষ, কংগ্রেসের প্রাক্তন সভানেত্রী সনিয়া গান্ধী এ দেশের নাগরিকত্ব নিয়েছেন। তা হলে এলিজাবেথ কেন নেননি? এই নিয়ে গগৈ পাল্টা খোঁচা দিয়ে বলেন, সামনের বছর অসমে ভোট। এই ক’বছরে কোনও কাজ করেনি বিজেপি। কোনও প্রতিশ্রুতি পূরণ করেনি। তাই কিছুই দেখানোর নেই। সে কারণে অপপ্রচার করছে বিজেপি। তবে অসমের মানুষের উপর তাঁর ভরসা রয়েছে। তাঁরা আসল বিষয়টি বুঝতে পারবেন বলে জানিয়েছেন গগৈ।