দিল্লির লালকেল্লার অদূরে বিস্ফোরণের ঘটনায় এ বার উত্তরপ্রদেশের কানপুর থেকে আরও এক চিকিৎসককে আটক করল সন্ত্রাসদমন শাখা (এটিএস)। কানপুরে এক ভাড়াবাড়ি থেকে বৃহস্পতিবার ভোরে ওই যুবককে আটক করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, দিল্লিকাণ্ডে ধৃত মহিলা চিকিৎসক শাহীন সিদ্দীকীর সঙ্গেও যোগাযোগ ছিল ধৃত যুবকের। সেই সূত্র ধরেই তাঁর খোঁজ পেয়েছেন তদন্তকারীরা।
জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ) সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত চিকিৎসকের নাম মহম্মদ আরিফ। পড়াশোনা করেছেন হৃদ্রোগবিদ্যা নিয়ে। কানপুরের অশোকনগর এলাকার একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন আরিফ। বৃহস্পতিবার ভোরে সেখান থেকেই তাঁকে আটক করা হয়েছে। অভিযোগ, ধৃত শাহীনের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন আরিফ ও বাকিরা। একই সঙ্গে চণ্ডীগড় ও পঞ্জাবের মোহালির চার-পাঁচটি জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালিয়ে আরও এক জনকে আটক করেছে এনআইএ। তাঁকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন:
শুধু তা-ই নয়, গোয়েন্দা সূত্রকে উদ্ধৃত করে এনডিটিভি জানিয়েছে, ডিসেম্বর মাসে দিল্লির ছ’টি জায়গায় ধারাবাহিক বোমা হামলার পরিকল্পনা ছিল শাহীন, মুজাম্মিল, উমরদের। এ নিয়ে নাকি পাঁচ স্তরীয় পরিকল্পনাও সারা হয়ে গিয়েছিল। প্রথমে বিভিন্ন রাজ্যের ডাক্তারি পড়ুয়াদের একত্র করে দল বানানোর পর হরিয়ানা এবং গুরুগ্রামের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ঘুরে বিস্ফোরক তৈরির জন্য রাসায়নিক এবং আইইডি সংগ্রহ করেন তাঁরা। তার পর তৃতীয় ধাপে শুরু হয় বিস্ফোরক তৈরির কাজ। সঙ্গে বোমা হামলার সম্ভাব্য এলাকাগুলিও বেছে ফেলা হয়। চতুর্থ ধাপে মডিউলের সদস্যদের মধ্যে সেই বিস্ফোরক ভাগ করে দেওয়া হয়। এই পরিকল্পনার পঞ্চম ও শেষ ধাপেই ছিল নিখুঁত বোমা হামলা। আগামী ৬ ডিসেম্বর দিল্লির ছ’সাতটি স্থানে পর পর বোমা হামলা চালানোর পরিকল্পনা ছিল ওই গোষ্ঠীর। তদন্তকারীরা এ-ও জানতে পেরেছেন, আদতে ২০২৫ সালের অগস্ট মাসে বোমাহামলার কথা ছিল। কিন্তু নানা কারণে দেরি হয়ে যায়। শেষমেশ হামলার দিন হিসাবে বেছে নেওয়া হয় ৬ ডিসেম্বর, অর্থাৎ বাবরি মসজিদ ধ্বংস হওয়ার দিনটিকে।
সোমবার সন্ধ্যায় লালকেল্লার কাছে একটি সাদা রঙের হুন্ডাই আই২০ গাড়িতে বিস্ফোরণে ১২ জনের মৃত্যু হয়। গাড়িটি চালাচ্ছিলেন উমর উন-নবি নামে এক চিকিৎসক। ঘটনাচক্রে, ওই দিনই সকালে ফরিদাবাদে তল্লাশি চালিয়ে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক পদার্থ উদ্ধার করেছিল জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ এবং হরিয়ানা পুলিশের যৌথ দল। গ্রেফতার করা হয়েছিল মুজ়াম্মিল আহমেদ-সহ একাধিক ব্যক্তিকে।