চলতি মাসের শুরুতেই ছত্তীসগঢ়ের বিলাসপুরে ট্রেন দুর্ঘটনায় প্রাণ গিয়েছে ১১ জনের। এ বার ওই ঘটনার তদন্তে প্রকাশ্যে এল বিস্ফোরক তথ্য! জানা গেল, মনস্তাত্ত্বিক যোগ্যতার পরীক্ষাতেই পাশ করেননি দুর্ঘটনাগ্রস্ত ওই ট্রেনের চালক। অথচ এত দিন ধরে বিনা বাধায় যাত্রিবাহী ট্রেন চালাচ্ছিলেন তিনি।
তদন্তকারী সূত্রকে উদ্ধৃত করে সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি দাবি করেছে, দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রেনের নিহত লোকো পাইলট বিদ্যাসাগর নাকি বাধ্যতামূলক মনস্তাত্ত্বিক যোগ্যতার (অ্যাপটিটিউড উপযুক্ততা) পরীক্ষায় আদৌ পাশ করেননি, যে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া যে কোনও যাত্রিবাহী ট্রেন চালানোর জন্য আবশ্যিক। শুধু তা-ই নয়, জানা গিয়েছে, বিলাসপুর এবং নাগপুর ডিভিশনে এমন অনেকেই ট্রেন চালাচ্ছেন, যাঁরা এই গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হননি। বিলাসপুর ডিভিশনে ৪২ জন লোকো পাইলটের মধ্যে মাত্র ৩০ জন মনস্তাত্ত্বিক যোগ্যতার এই মূল্যায়নে উত্তীর্ণ হয়েছেন। নাগপুর ডিভিশনে সংখ্যাটা আরও কম। সেখানে ৫৬ জন চালকের মধ্যে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন মাত্র ৩৩ জন!
আরও পড়ুন:
এই ঘটনার পরেই নড়েচড়ে বসেছেন রেল কর্তৃপক্ষ। বিলাসপুর ডিভিশনে ১২টি এবং নাগপুর ডিভিশনে ২৩টি মেমু প্যাসেঞ্জারের সব চালকের জন্য জরুরি ভিত্তিতে মনস্তাত্ত্বিক যোগ্যতা পুনর্মূল্যায়নের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রেলের এক উর্ধ্বতন কর্তা এনডিটিভি-কে বলেছেন, ‘‘রেলের সকল বিভাগীয় কর্তার কাছে কড়া নির্দেশ জারি করা হয়েছে, যাতে এখন থেকে কোনও লোকো পাইলট মানসিক ফিটনেস সার্টিফিকেট ছাড়া মেমু ট্রেন না চালাতে পারেন।’’ পাশাপাশি, নবনিযুক্ত কর্মীদের প্রশিক্ষণেও বিশেষ নজর দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
গত ৩ নভেম্বর গেবরা রোড এবং বিলাসপুরের মাঝে লালখাদানের কাছে একটি যাত্রিবাহী ট্রেন দাঁড়িয়ে থাকা একটি মালগাড়িতে ধাক্কা মারে। প্রাথমিক তদন্তে রেলের ধারণা, সিগন্যাল ‘লাল’ থাকা সত্ত্বেও এগিয়ে গিয়েছিলেন লোকো পাইলট। সিগন্যাল উপেক্ষা করার কারণেই সম্ভবত দুর্ঘটনাটি ঘটে। সংঘর্ষের অভিঘাতে দুমড়েমুচড়ে গিয়ে মালগাড়ির উপরে উঠে যায় যাত্রিবাহী ট্রেনটির একাংশ। ইতিমধ্যে রেলওয়ে নিরাপত্তা কমিশনার (সিআরএস) ব্রিজেশকুমার মিশ্রের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত দল রেলওয়ে বোর্ডের কাছে তাদের প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্ট জমা দিয়েছে। তবে রেলের তরফে এ বিষয়ে নতুন করে কিছু জানানো হয়নি।