কখনও ‘বেবি’ বলে সম্বোধন। কখনও ‘আই লভ ইউ’। কখনও আবার ‘আই অ্যাডোর ইউ’— এরকম নানা ভাবে মেসেজ পাঠাতেন তাঁদের। দিল্লির স্বঘোষিত ‘বাবা’ স্বামী চৈতন্যানন্দের বিরুদ্ধে একে একে মুখ খুলতে শুরু করেছেন ছাত্রীরা। তাঁদের অভিযোগ, কখনও দেহের গড়ন, কখনও পোশাক, কখনও চুলের প্রশংসা করে নানা ভাবে কু-ইঙ্গিত করতেন ‘বাবা’।
পুলিশ সূত্রে খবর, ছাত্রীদের পাঠানো ‘বাবা’র সেই সব হোয়াট্সঅ্যাপ মেসেজ উদ্ধার করা হয়েছে। অভিযোগ, ছাত্রীদের বেশির ভাগকেই তিনি ‘বেবি’ বলে সম্বোধন করতেন। ঘটনার সূত্রপাত ২০২৪ সালের অক্টোবর। এফআইআরে এক ছাত্রী উল্লেখ করেছেন, গত বছরের অক্টোবরে তিনি দিল্লির ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়েছিলেন। ছাত্রীর অভিযোগ, দীপাবলির সময় তাঁকে প্রথম ডেকে পাঠান ‘বাবা’। তাঁর কাছে যেতেই অদ্ভুত ভাবে তাঁর দিকে তাকিয়ে ছিলেন। আর ওই চাহনি তাঁর খুব একটা ভাল লাগেনি বলেই দাবি করেছেন ছাত্রীটি।
আরও পড়ুন:
ছাত্রী অভিযোগপত্রে আরও দাবি করেছেন, ওই বছরের ডিসেম্বরে হস্টেলে পড়ে গিয়ে তাঁর পায়ে চিড় ধরে। এক্স-রে রিপোর্ট চেয়ে পাঠান ‘বাবা’। তাঁকে হোয়াট্সঅ্যাপে ওই রিপোর্ট পাঠাতে বলেন। আর তার পর থেকেই ‘বাবা’ বিভিন্ন কু-ইঙ্গিত এবং কদর্য ভাষায় মেসেজ পাঠাতে শুরু করেন বলে অভিযোগ। তদন্তকারীদের কাছে ওই ছাত্রী দাবি করেছেন, এর পর থেকে নিয়মিত মেসেজ পাঠাতে থাকেন ‘বাবা’। সেই মেসেজে কখনও লিখতেন, ‘আজ তোমাকে দেখতে দারুণ সুন্দর লাগছে’। কখনও তাঁর পোশাক এবং শরীর নিয়ে নানা মন্তব্য করতেন। উত্তর না দিলে পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেওয়ার হুমকি দিতেন বলেও অভিযোগ। ওই ছাত্রীর আরও অভিযোগ, ২০২৫ সালের মার্চে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানের অছিলায় তাঁকে নিজের কোয়ার্টারে ডেকে পাঠান ‘বাবা’। রাতে মেসেজ করে দেখা করার জন্য জোরাজুরি করেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তিন মহিলা কর্মীর বিরুদ্ধেও অভিযোগ তুলেছেন ওই ছাত্রী। তাঁরা ছাত্রীকে জোর করে ‘বাবা’র পাঠানো মেসেজ মুছে দিতে বাধ্য করান। শুধু তা-ই নয়, ‘বাবা’র কাছে ক্ষমা চেয়ে একটি ইমেল করতেও বাধ্য করানো হয় তাঁকে।
তদন্তকারীদের একটি সূত্র বলছে, ‘বাবা’র এই কীর্তি ১৬ বছর ধরে চলছে। প্রায় ৫০ জন ছাত্রীর হোয়াট্সঅ্যাপ মেসেজ এবং ফোনের রেকর্ড ঘেঁটে বেশ কিছু তথ্য উদ্ধার করা হয়েছে।