Advertisement
E-Paper

আর অর্ধেক নয়, আদানির থেকে আবার সেই ১৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎই চাইছে অন্তর্বর্তী বাংলাদেশ সরকার

ঝাড়খণ্ডের একটি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে আদানি গোষ্ঠী। বিদ্যুতের বিল বাবদ বাংলাদেশের থেকে কোটি কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে সংস্থার। মাসিক কিস্তিতে সেই টাকা মেটাচ্ছে বাংলাদেশ।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৫:১৫
গৌতম আদানির সংস্থার থেকে আবার আগের মতো বিদ্যুৎ সরবরাহ চাইছে বাংলাদেশে মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার।

গৌতম আদানির সংস্থার থেকে আবার আগের মতো বিদ্যুৎ সরবরাহ চাইছে বাংলাদেশে মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

ঝাড়খণ্ডে আদানি গোষ্ঠীর বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র থেকে পুনরায় সম্পূর্ণ বিদ্যুৎ কিনতে চাইছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। ২০১৭ সালের এক চুক্তি অনুসারে ঝাড়খণ্ডের গোড্ডায় তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ রফতানি করে আদানি গোষ্ঠী। সেখানে দু’টি ইউনিট রয়েছে। এক একটি ইউনিটের ৮০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা রয়েছে। বিদ্যুতের বকেয়া বিলের সমস্যার মাঝে শীতের মরসুমে চাহিদা কম থাকার কারণে আদানি গোষ্ঠীর থেকে বিদ্যুৎ কেনা অর্ধেকে নামিয়ে আনে বাংলাদেশ। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, সম্প্রতি বাংলাদেশ থেকে আদানি গোষ্ঠীকে পুনরায় ১৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করার জন্য বলা হয়েছে।

গোড্ডায় আদানির তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি শুধুমাত্র বাংলাদেশে বিদ্যুৎ রফতানির জন্যই ব্যবহার হয়। কিন্তু বাংলাদেশ থেকে বিদ্যুতের বকেয়া বিল বাবদ কোটি কোটি টাকা বকেয়া রয়ে গিয়েছে। ওই বকেয়া বিতর্ক এবং বৈদেশিক মুদ্রায় ঘাটতির সমস্যার মাঝে গত বছরের ৩১ অক্টোবর আদানির থেকে বিদ্যুৎ কেনা অর্ধেকে নামিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ প্রশাসন। রয়টার্স জানিয়েছে, এই সিদ্ধান্তের পর থেকে গোড্ডায় তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে একটি ইউনিটই চালু রেখেছিল আদানি গোষ্ঠী। নভেম্বর থেকে আদানির ওই তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি প্রায় ৪২ শতাংশ ক্ষমতা নিয়ে কার্যকর রয়েছে। তার তিন মাস পরে পুনরায় আগের মতো বিদ্যুৎ কিনতে আগ্রহী হয়েছে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন পর্ষদ (বিপিডিবি) রয়টার্সকে জানিয়েছে, তারা বকেয়া টাকা মেটাতে প্রতি মাসে ভারতীয় মুদ্রায় ৭৩৭ কোটি টাকা (সাড়ে আট কোটি ডলার) করে দিচ্ছে আদানি গোষ্ঠীকে। আগামী কিস্তিগুলিতে বকেয়া টাকা আরও বেশি পরিমাণে মেটানোর চেষ্টা চলছে। ফলে আদানি গোষ্ঠীর সঙ্গে আর কোনও সমস্যা নেই। এই অবস্থায় ঝাড়খণ্ডের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিটটিও পুনরায় সচল করার জন্য বলা হয়েছে আদানিকে। বিপিডিবির প্রধান মুহাম্মদ রেজাউল করিম জানান, সোমবার থেকেই দ্বিতীয় ইউনিটটি চালু করার কথা ছিল। কিন্তু প্রযুক্তিগত কিছু সমস্যার কারণে তা হয়ে ওঠেনি।

এ বিষয়ে আদানি গোষ্ঠীর এক মুখপাত্রের সঙ্গেও যোগাযোগের চেষ্টা করে রয়টার্স। তবে এখনও পর্যন্ত কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। এর আগে গত বছরের ডিসেম্বরে আদানি গোষ্ঠীর একটি সূত্র জানায়, বিপিডিবি-র থেকে আদানির ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৭৮০৭ কোটি টাকা (৯০ কোটি ডলার) বকেয়া রয়েছে। যদিও বিপিডিবি প্রধান করিম তখন দাবি করেন ভারতীয় মুদ্রায় ৫৬৩৮ কোটি টাকা (৬৫ কোটি ডলার) বকেয়া রয়েছে।

২০১৭ সালে তৎকালীন হাসিনা সরকারের সঙ্গে চুক্তি অনুসারে ২৫ বছর ধরে আদানি গোষ্ঠীর বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করার কথা। কিন্তু এই চুক্তিতে একাধিক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। তার জেরে বাংলাদেশের হাই কোর্ট তদন্তের নির্দেশ দেয়। তদন্তের জন্য বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠনেরও নির্দেশ দেয় আদালত। রয়টার্স জানিয়েছে, চলতি মাসেই এই মামলার রিপোর্ট জমা পড়তে পারে।

ঘটনাচক্রে, বাংলাদেশের বিদ্যুৎ, জ্বালানি এবং খনিজ উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান ‘ইন্ডিয়া এনার্জি উইক ২০২৫’-এ যোগ দিতে বর্তমানে ভারতেই রয়েছেন। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিষয়ে সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে তিনি বলেন, “আমরা উভয়েই প্রতিবেশী রাষ্ট্র এবং প্রতিবেশীসুলভ সুসম্পর্ক বজায় রাখতে চাই। যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, সেটি নিশ্চয়ই কেটে যাবে।” দু’দেশের স্বাভাবিক বন্ধুত্ব ফিরবে বলেও আশাবাদী তিনি।

Bangladesh Adani Power Muhammad Yunus Electricity Bills
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy