প্রতীকী ছবি।
বিহারের শিক্ষাব্যবস্থার বেহাল দৃশ্য ফের প্রকাশ্যে এল। সম্প্রতি সে রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ফলাফল প্রকাশ্যে এসেছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে একাধিক পড়ুয়া উত্তরপত্রে স্রেফ ভোজপুরী গান কিংবা প্রেমপত্র লিখে এসেছেন। কেউ কেউ আবার উত্তরপত্রে সেফটি পিন দিয়ে টাকা আটকে পরীক্ষককে পাস করিয়ে দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন।
ছাপড়া কলেজের বিএসসির এক পড়ুয়া যেমন উত্তরপত্র জুড়ে কেবল ভোজপুরি গান ‘নোট বরসেলা তোহরে নাথুনিয়া পর’ লিখে গিয়েছেন। বিহার প্রশাসনের এক কর্তা জানালেন ২০১৬ সালেই বিহার সরকার এই গানকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল। ওই পরীক্ষার্থীর খাতার ছবি ইতিমধ্যেই সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। দেখা যাচ্ছে উত্তরপত্রে কোনও উত্তরই লিখতে পারেননি।
ছাপড়া কলেজ যে বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতাধীন, সেই জেপি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ফারুক আলির গলায় হতাশার সুর। বললেন, “কেউ যদি উত্তরপত্রে প্রেমপত্র কিংবা ভোজপুরী গান লিখে দেন, তবে আমাদের আর কী করার থাকতে পারে?” তাঁর কথায়, “পরীক্ষায় কারচুপি করা এক জিনিস, আর একটাও উত্তর না লিখে এ সব লেখা আর এক জিনিস।”
চলতি বছরের মার্চ মাসেই সে রাজ্যের মুজফ্ফরনগরে বিহার বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ পাঠরত এক পড়ুয়া পরীক্ষককে টাকার বিনিময়ে পাশ করিয়ে দেওয়ার অনুরোধ জানান। উত্তরপত্রের ভিতর কয়েকটি টাকার নোট আটকে তিনি বলেন, “আমার সামর্থ্য অনুযায়ী এই টাকা দিলাম। অনুগ্রহ করে আমায় পাশ করিয়ে দেবেন।” শুধু তা-ই নয়, নিজের ফোন নম্বর উত্তরপত্রে লিখে দিয়ে তিনি বলেন, “এর চেয়েও বেশি অর্থ লাগলে এই নম্বরে অবশ্যই ফোন করবেন। টাকা নিয়ে বাকি কথা ফোনেই হবে।”
কিন্তু কেন এই হাল? অধ্যাপক এস নারায়ণ বলেন, “গোটা শিক্ষাব্যবস্থাটাই পচে গিয়েছে। শিক্ষক-ছাত্র দুই তরফেই মানের সঙ্গে আপস করা হচ্ছে।” তাঁর মতে, শিক্ষকদের একাংশের আচরণের জন্য পড়ুয়াদের মধ্যে এই ধারণা প্রতিষ্ঠিত হয়ে গিয়েছে, পরীক্ষায় অতিরিক্ত পাতা নিলেই বেশি নম্বর পাওয়া যাবে। তার দাবি, এই কারণেই পড়ুয়াদের মধ্যে কেউ কেউ ভোজপুরী গান বা প্রেমপত্র লিখে পাতা ভরাতে চাইছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy