মা, মেয়ে এবং স্ত্রীর সঙ্গে বলবঙ্ক তিওয়ারি।
এক সময় ৫০ টাকা রোজে কাজ করতেন। আজ তিনিই ভারতীয় সেনার এক অফিসার। অদম্য ইচ্ছাশক্তি থাকলে যে সাফল্যের শিখরে পৌঁছনো যায়, সেটাই করে দেখালেন বছর আঠাশের বলবঙ্ক তিওয়ারি।
সম্প্রতি তিনি সেনা শিক্ষাকেন্দ্র থেকে স্নাতক করে সেনায় যোগ দিয়েছেন। গত শনিবার ছিল সাফল্যকে চাক্ষুষ করার দিন। ছেলের সাফল্যের সাক্ষী হতে এসেছিলেন তাঁর মা। স্বামীর আনন্দকে ভাগ করে নিতে হাজির ছিলেন স্ত্রী রুচি। বাবার সাফল্যের সাক্ষী হয়েছিল তিন মাসের কন্যাও।
বিহারের ভোজপুর জেলার আরার সুন্দরপুর বারজা গ্রামের চাষি পরিবারের ছেলে বলবঙ্ক। যৌথ পরিবার। আর্থিক অনটন ছিল নিত্যসঙ্গী। বাবার হাড়ভাঙা খাটুনি বলবঙ্ককে কুড়ে কুড়ে খেত। সংসারের বোঝা কমাতেই দশম শ্রেণি পাশ করেই কাজে নেমে পড়তে হয়েছিল তাঁকে।
বলবঙ্ক বলেন, “ম্যাট্রিক পাশ করে কাজের সন্ধানে ওড়িশার রাউরকেলায় চলে গিয়েছিলাম। সেখানে প্রথমে একটা লোহার জিনিসপত্র তৈরির কারখানায় সামান্য টাকার বিনিময়ে কয়েক মাস কাজ করেন। তার পর একটা বেকারিতে দৈনিক ৫০ টাকার বিনিময়ে কাজ শুরু করেন। একই সঙ্গে পড়াশোনাও চালিয়ে যাচ্ছিলেন। বাড়তি টাকা উপার্জনের জন্য কাজের পাশাপাশি পড়ানোও শুরু করেন। রাউরকেলা থেকেই দ্বাদশ শ্রেণি পাশ করে কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন।
বলবঙ্ক বলেন, “কলেজে পড়ার সময় এক দিন আমার কাকা জানান, দানাপুরে সেনাতে নিয়োগ চলছে। আর দেরি না করে পরীক্ষায় বসলাম। প্রথম বার হয়নি। কিন্তু জেদ চেপে গিয়েছিল দ্বিতীয় বার পাশ করতেই হবে। পাশ করলাম পরের বার। সিপাই পদে ভোপালে পোস্টিং হল।”
এখানেই থেমে থাকেননি বলবঙ্ক। আরও শিখরে ওঠার চেষ্টা চালিয়ে যান। ভোপালে পোস্টিং থাকার সময় জানতে পারেন অফিসার হতে গেলে আর্মি ক্যাডেট কলেজে ভর্তি হতে হবে। সেই পরীক্ষায় পাশও করেন। গত শনিবার তাঁকে অফিসার হিসেবে কাজ করার দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয়। এই দিনটিই ছিল সাফল্যকে ছুঁয়ে দেখার দিন। অদম্য ইচ্ছাশক্তির জেরেই এক সময়ে ৫০ টাকায় কাজ করা বলবঙ্ক আজ ভারতীয় সেনার এক গর্বিত অফিসার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy