ভোটের মুখে বিহারে খুন বিজেপি নেতা। গোপাল খেমকাকে তাঁর পটনার বাড়ির সামনে শুক্রবার রাতে গুলি করা হয়েছে। ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। আততায়ীকে এখনও ধরতে পারেনি পুলিশ। সিসিটিভি ঘেঁটে তাঁকে চিহ্নিত করার কাজ করছে। ঘটনাস্থলে উত্তেজনা রয়েছে। গোপাল পেশায় ব্যবসায়ী। বিজেপি নেতা হিসাবেও এলাকায় তাঁর জনপ্রিয়তা ছিল। কে বা কারা এই খুন করল, উদ্দেশ্য কী, তা স্পষ্ট নয়। আততায়ী কত জন ছিলেন, তা-ও জানা যায়নি।
বিহারের বিজেপি নেতা গোপাল খেমকা। —ফাইল চিত্র।
পটনার গান্ধী ময়দান থানা এলাকায় পানাচে হোটেলের কাছে ‘টুইন টাওয়ার’ সোসাইটিতে থাকতেন গোপাল। শুক্রবার রাতে অন্যান্য দিনের মতোই কাজ সেরে বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। অভিযোগ, যখন বাড়ির খুব কাছে চলে এসেছিলেন গোপাল, সেই সময়ে তাঁকে গুলি করা হয়। কত রাউন্ড গুলি চালানো হয়েছে, তা-ও স্পষ্ট নয়। গুলি করেই আততায়ী পালিয়ে যান। লুটিয়ে পড়েন গোপাল। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়েছিল। পরে তাঁর দেহ উদ্ধার করা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন:
পটনা শহরের এসপি সেন্ট্রাল দীক্ষা বলেছেন, ‘‘৪ জুলাই রাত ১১টা নাগাদ আমরা খবর পাই, গান্ধী ময়দান দক্ষিণ এলাকায় গুলি চলেছে এবং ব্যবসায়ী গোপাল খেমকা গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। খবর পেয়েই আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছোই এবং দেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। ওই এলাকা এখন ঘিরে রাখা হয়েছে। তদন্ত চলছে। এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তার ভিত্তিতে পদক্ষেপ করা হবে।’’ এসপি সেন্ট্রালের নেতৃত্বে এই ঘটনার তদন্তের জন্য বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করা হয়েছে। সংবাদ সংস্থা এএনআইকে এই তথ্য জানিয়েছেন ডিজিপি বিনয় কুমার।
উল্লেখ্য, কয়েক বছর আগে গোপালের পুত্র গুঞ্জন খেমকাকেও খুন করা হয়েছিল। সামনেই বিহারে বিধানসভা নির্বাচন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তাই রাজনীতির পারদও চড়তে শুরু করেছে। নীতীশ কুমার পরিচালিত বিহারের জেডিইউ সরকারকে তুলোধনা করছেন বিরোধীরা। জেডিইউ এনডিএ জোটে থাকলেও দলের নেতা খুনের পর সমালোচনা শুরু হয়েছে বিজেপির অন্দরে। শনিবার সকালে গোপালের বাড়িতে গিয়েছিলেন স্থানীয় বিজেপি নেতা রামকৃপাল যাদব। পরিবারের সঙ্গে কথা বলে তিনি জানিয়েছেন, খুনের খবর পাওয়ার পরেও পুলিশ ঘটনাস্থলে দেরি করে আসে। এমনটাই পরিবারের অভিযোগ। রামকৃপাল বলেন, ‘‘গোপাল এক জন অসাধারণ ব্যবসায়ী এবং সমাজকর্মী ছিলেন। ওঁর বাড়ি গান্ধী ময়দান থানা থেকে খুব দূরে নয়। পরিবারের লোকজন বলছেন, খবর দেওয়ার দেড় ঘণ্টা পরে পুলিশ এসেছে। এটা উদ্বেগের। এই খুনের ঘটনাকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখতে হবে পুলিশকে। দ্রুত অপরাধীদের শাস্তি দিতে হবে। বিরোধীরা আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। যদিও আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণেই আছে। এই ঘটনা দুর্ভাগ্যজনক।’’ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন এলাকার নির্দল সাংসদ পাপ্পু যাদব ওরফে রাজেশ রঞ্জনও। সমাজমাধ্যমে পোস্ট করে তিনি বিহারে ক্ষমতাসীন নীতীশ কুমার সরকারকে কটাক্ষ করেছেন। বলেছেন, ‘‘বিহারে কেউ সুরক্ষিত নন। বিহার অপরাধীদের বিচরণক্ষেত্র হয়ে উঠেছে।’’