ওড়িশায় ভিন্রাজ্যের এক কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠল। শুক্রবার রাতে রাজধানী ভুবনেশ্বরের রাস্তায় প্রায় অচৈতন্য হয়ে পড়েছিল ওই কিশোরী। তার পর নিজেই কোনও রকমে উঠে হাসপাতালে যায় বলে খবর। কোনও কোনও সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হচ্ছে, অটোচালকেরা কিশোরীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পৌঁছে দিয়েছেন। তার শরীরের ক্ষত পরীক্ষা করে চিকিৎসকদের সন্দেহ, তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে। যদিও কিশোরী নিজে এখনও মুখ খোলেনি। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, সে এখন কথা বলার মতো অবস্থায় নেই। পুলিশ আপাতত স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে।
ওড়িশার স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, কিশোরীর বয়স আনুমানিক ১৭ বছর। সে বিহার বা ঝড়খণ্ডের বাসিন্দা। ভুবনেশ্বরের ক্যাপিটাল হাসপাতালের আইসিইউতে তার চিকিৎসা চলছে। অবস্থা সঙ্কটজনক। শুক্রবার গভীর রাতে সে যখন হাসপাতালে পৌঁছোয়, তার শরীরে একাধিক ক্ষত ছিল। অর্ধচেতন অবস্থায় ছিল কিশোরী। অনেক রক্তপাতও হয়েছে। হাসপাতাল থেকে কিশোরীর অবস্থা দেখে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। সে শুধু তদন্তকারীদের জানাতে পেরেছে সে ভিন্রাজ্যের বাসিন্দা। আর কোনও তথ্য নিশ্চিত করতে পারেনি। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, কিশোরীর মানসিক অবস্থাও উদ্বেগের। সে অত্যন্ত আতঙ্কিত। বড় কোনও ধাক্কা খেয়েছে বলে মনে হচ্ছে। তবে তদন্তকারীদের সন্দেহ, কিছু তথ্য গোপনের চেষ্টা করছে কিশোরী। তার যৌন নিগ্রহ যে হয়েছে, মেডিক্যাল রিপোর্ট থেকে তা স্পষ্ট।
আরও পড়ুন:
প্রাথমিক ভাবে কিশোরীর শারীরিক পরীক্ষার পর চিকিৎসকদের ধারণা, তাকে জোর করে গর্ভনিরোধক বড়ি খাওয়ানো হয়েছে। তার ফলে অবস্থার আরও অবনতি হয়েছে। কিশোরীর পরিবারের সঙ্গে এখনও যোগাযোগ করা যায়নি। পুলিশ কমিশনার এস দেব দত্ত বলেন, ‘‘কিশোরীর অবস্থা সঙ্কটজনক। আইসিইউ-তে আছে। এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ আমরা খতিয়ে দেখছি।’’
সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, ভুবনেশ্বরের অশোকনগর এলাকায় রাস্তার ধার থেকে সঙ্কটজনক অবস্থায় কিশোরীকে উদ্ধার করা হয়েছে। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর চিকিৎসকেরা জানান, তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তের পর অনুমান, সে ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা। তার কাছ থেকে কোনও মোবাইল ফোন পাওয়া যায়নি। তার পরিচয় সম্বন্ধেও পুলিশ এখনও নিশ্চিত নয়। মেলেনি কোনও নথি। যৌন হেনস্থার মামলা রুজু করে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।
উল্লেখ্য, পশ্চিমবঙ্গের দুর্গাপুরে বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে ওড়িশার ছাত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। তাতে বাংলার রাজনীতি সরগরম। ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী মোহনচরণ মাঝী নিজে ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করার আবেদন জানিয়েছেন। নির্যাতিতার বাবা দাবি করেছেন, এ রাজ্যে তাঁর কন্যা সুরক্ষিত নন। তাই কন্যাকে তিনি ওড়িশায় ফিরিয়ে নিয়ে যেতে চান। রাজ্যের বিরোধী দলগুলিও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে তৃণমূল সরকারকে তুলোধনা করছে। ঘটনায় ছ’জনকে গ্রেফতার করেছে আসানসোল পুলিশ। তার মাঝেই ওড়িশায় অন্য রাজ্যের কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠল।