Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
Bhupesh Baghel

লোকবাণীতে লোক টানছেন বাঘেল

ছত্তীসগঢ়ের অধিকাংশ এলাকাই যেখানে জঙ্গলে ঘেরা। আধুনিক যোগাযোগের মাধ্যম অমিল। সেখানে রেডিয়ো সম্প্রচার সর্বত্র পৌঁছে সব স্তরের মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে।

কাজের ফাঁকে লোকবাণীতে কান পাতা।—নিজস্ব চিত্র

কাজের ফাঁকে লোকবাণীতে কান পাতা।—নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০২০ ০২:১৬
Share: Save:

জনতা জনার্দন। তাই রাজ্যে সুশাসন চাইলে জনতার খুশি থাকা জরুরি। জানা দরকার তাদের মনের কথা। কোথায় অভাব, কেন অভিযোগ— সব কিছু। যাতে সমস্যা মেটে। মিটলে, রাজ্যের উন্নয়নের গতি বাড়ে। ছত্তীসগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেল তাই প্রতিমাসে আসেন জনতার ঘরে ঘরে। জেনে নেন তাঁদের অভাব অভিযোগ। সাধ্য মতো জবাবও দেন প্রশ্নের। প্রতি মাসের দ্বিতীয় রবিবার। ঠিক সকাল সাড়ে ১০টায়। রেডিয়োর নব ঘোরালেই আকাশবাণীতে বাজে মুখ্যমন্ত্রীর কণ্ঠস্বর। ভূপেশ বাঘেলের রেডিয়ো সম্প্রচার লোকবাণী। যেখানে জনতার সমস্যার সমাধানের পাশাপাশি সরকারি প্রকল্প নিয়েও নানা তথ্য দেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী।

বিষয়টা অনেকটা প্রধানমন্ত্রীর ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানের মতো হলেও, রাজ্য স্তরে এ ভাবে মুখ্যমন্ত্রীর জনতার কাছে পৌঁছে যাওয়ার চেষ্টায় বেশ অভিনবত্ব আছে। ছত্তীসগঢ়ের অধিকাংশ এলাকাই যেখানে জঙ্গলে ঘেরা। আধুনিক যোগাযোগের মাধ্যম অমিল। সেখানে রেডিয়ো সম্প্রচার সর্বত্র পৌঁছে সব স্তরের মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে। মাটির কাছাকাছি থাকা মানুষগুলির কাছে পৌঁছে দিতে পারে সরকারি যোজনা, সুযোগ সুবিধার কথা। কী ভাবে সেই সব সুবিধা নেওয়া যাবে, তার উপায়ও।

গত এক বছরের বেশি সময় ধরে চলছে অনুষ্ঠান। ইতিমধ্যেই ১৩টি পর্বের সম্প্রচার হয়েছে লোকবাণীর। সাধারণ মানুষের কাছে বেশ জনপ্রিয়তাও পেয়েছে অনুষ্ঠানটি। বালোদাবাজার জেলার মাগড়চাবার বাসিন্দা আদিবাসী কৃষক বিষ্ণু পরিকর। বলছেন, “আমরা এ পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রীর অনুষ্ঠানের একটা পর্বও বাদ দিইনি। কাজের জন্য খামারে গেলেও সঙ্গে রেডিয়ো নিয়েই যাই। মুখ্যমন্ত্রী যে আমাদের মতো সাধারণ মানুষের কথা ভাবেন, জানার চেষ্টা করেন, এটা দেখতে, শুনতে ভাল লাগে।”

আরও পড়ুন : জীবনের শেষ অনশন করব কৃষকদের জন্য, ঘোষণা অণ্ণার

জনজাগিরের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী মেঘা আবার তাঁর পড়াশোনা সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু সুযোগ সুবিধার কথা জেনেছেন এই লোকবাণী থেকেই। রাজ্যের মহিলা ও শিশুদের পুষ্টি নিশ্চিত করতে যে সব সরকারি প্রকল্প রয়েছে বা সরকারের তরফে চিকিৎসার যে সব সুযোগ দেওয়া হয়, তা-ও এখন প্রান্তিক এলাকার মানুষ জানতে পারছেন, সুযোগ সুবিধা নিতে পারছেন এই অনুষ্ঠানের দৌলতেইই, বলছিলেন রায়পুরের মাথাপুরানিয়ার কাউন্সিলর অমিত দাস।

পঞ্চায়েত সাজা বিভাগের জেলা সভাপতি ওমপ্রকাশ বর্মার মতে, “জনতার সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর এই যে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন, তা-ই জনপ্রিয় করেছে লোকবাণীকে। মুখ্যমন্ত্রী এখানে প্রশ্ন নেন জনতার কাছ থেকে। জবাবও দেন সেই প্রশ্নের।”

প্রশ্ন করতে হলে অবশ্য নির্ধারিত দিনে নির্দিষ্ট টেলিফোন নম্বরে ফোন করে নথিভুক্ত করতে হয় প্রশ্ন। অনুষ্ঠানে সেইসব প্রশ্নই বেছে নিয়ে তার জবাব দেন বাঘেল। এছাড়া প্রতিটি অনুষ্ঠানে থাকে একটি নির্দিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা। এ পর্যন্ত সেই আলোচনার বিষয় হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে স্থানীয় উৎসব থেকে শুরু করে বিভিন্ন সরকারি যোজনা, খেলাধুলো, ছোটদের পড়াশোনার চাপ , মহিলাদের কাজের সুযোগ-সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি গ্রামপঞ্চায়েত, পুরসভা, পুরোনিগমের আধিকারিকরাও মুখ্যমন্ত্রীর লোকবাণীর নিয়মিত শ্রোতা।

আরও খবর: ৩১ ডিসেম্বর রাতে মুম্বইয়ে বন্ধ জমায়েত

এ বছরের শেষ লোকবাণী সম্প্রচার হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যেই। আগামী পর্ব শোনা যাবে নতুন বছরের ১০ জানুয়ারি। আপাতত প্রস্তুতি চলছে নতুন বছরের প্রথম পর্বকে বিশেষ করে তোলার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE