আমেরিকার ‘চাপ’ উপেক্ষা করে ভারত একপ্রকার বুঝিয়ে দিয়েছে রাশিয়া থেকে তেল কেনা আপাতত বন্ধ করা হবে না! চিনে সদ্যসমাপ্ত এসসিও সম্মেলনেও নরেন্দ্র মোদী এবং ভ্লাদিমির পুতিনের ‘একান্ত’ আলাপ দেখে অনেকেই বলছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হুঁশিয়ারির পরেও ভারত-রাশিয়া বন্ধুত্ব অটুট থাকবে। সেই বন্ধুত্বের লাভ কি পাবে ভারত? কয়েকটি রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল আরও কম দামে কিনবে ভারত। অন্তত ব্যারল প্রতি তিন থেকে চার মার্কিন ডলার কমবে। সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে বা অক্টোবরেই মিলবে সুফল।
ইউক্রেন যুদ্ধের আবহে রাশিয়ার থেকে তেল কেনার ‘শাস্তি’ হিসাবে ভারতীয় পণ্যের উপর জরিমানা-সহ মোট ৫০ শতাংশ শুল্কের বোঝা চাপিয়েছে আমেরিকা। ট্রাম্পের অভিযোগ, ভারতের সঙ্গে ব্যবসার লভ্যাংশ ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ব্যবহার করছে রাশিয়া। তবে সেই অভিযোগ এবং ট্রাম্পের শুল্কনীতির পরেও নয়াদিল্লি-মস্কোর সম্পর্কে চিড় ধরেনি। ২০২২ সালে ইউক্রেন আক্রমণ করার পর রাশিয়ার উপর বহু বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল আমেরিকা-সহ পশ্চিমি বিশ্ব। অর্থনীতি বাঁচাতে তখন রাশিয়া সস্তায় তেল বিক্রি শুরু করে। ভারতও সেই সুযোগ কাজে লাগিয়েছে। রাশিয়া থেকে প্রচুর ছাড়ে তেল কিনতে শুরু করে নয়াদিল্লি। গত কয়েক বছরে ০.২ শতাংশ থেকে রুশ তেলের আমদানি বেড়ে হয়েছে ৩৫ শতাংশ। বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম তেল আমদানিকারক দেশ ভারত।
রাশিয়া থেকে তেল কেনায় ঘোর আপত্তি ওয়াশিংটনের। হোয়াইট হাউসের উপদেষ্টা পিটার নাভারো সমালোচনার সুরে বলেছিলেন, ‘‘পুতিন ইউক্রেন আক্রমণ করার আগে রাশিয়া থেকে অনেক কম পরিমাণ তেল কিনত ভারত। কিন্তু এখন তেল কেনার পরিমাণ বাড়িয়েছে। সেই অপরিশোধিত তেল কিনে ভারত তা পরিশোধিত করে আবার বিক্রি করে লাভ করছে।’’
রাশিয়া থেকে তেলের দামে ছাড় পাচ্ছে ভারত। গত জুলাইয়ে ব্যারল প্রতি প্রায় এক ডলার কমে রাশিয়া থেকে তেল কেনা হয়। অগস্টে ভারতীয় ক্রেতাদের জন্য ছাড় ছিল প্রায় আড়াই ডলার। সেপ্টেম্বর, অক্টোবরের সেই ছাড়ের পরিমাণ আরও বাড়তে পারে বলে দাবি রিপোর্টে।
আরও পড়ুন:
শুধু তেল নয়, রাশিয়া এবং ভারতের মধ্যে সামরিক-সখ্যও আরও বাড়তে পারে বলে মনে করছেন অনেকে। রয়টার্সের এক প্রতিবেদন অনুসারে, রাশিয়ার ‘ফেডারেল সার্ভিস ফর মিলিটারি-টেকনিক্যাল কোঅপারেশন’-এর প্রধান দিমিত্রি শুগায়েভ জানিয়েছেন, এস-৪০০ ট্রায়াম্ফ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধী ব্যবস্থা আরও বেশি কেনার ব্যাপারে মস্কোর সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছে নয়াদিল্লি। ২০২৬ এবং ২০২৭ সালে আরও দুই ইউনিট এস-৪০০ সরবরাহ করতে পারে রাশিয়া, এমনও দাবি করা হয়েছে ওই প্রতিবেদনে।