Advertisement
E-Paper

সম্পর্কের শীতলতা কাটিয়ে উঠে এগিয়ে চলার বার্তা জয়শঙ্করের, চিনা বিদেশমন্ত্রীর পাক সফরের আগে কথা সন্ত্রাসবাদ প্রসঙ্গেও

২০২০ সালে লাদাখে ভারত-চিন সংঘর্ষের পর থেকে দু’দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের টানাপড়েন সৃষ্টি হয়েছিল। বর্তমানে দু’দেশের মধ্যে সম্পর্ক অনেকটাই উন্নত হয়েছে। নতুন কূটনৈতিক সমীকরণের সেই আভাস সোমবার ফের মিলেছে জয়শঙ্কর-ওয়াং বৈঠকে।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০২৫ ২০:১৭
ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে চিনা বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই।

ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে চিনা বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই। —ফাইল চিত্র।

গত কয়েক বছরের সম্পর্কের শীতলতা কাটিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চায় ভারত এবং চিন। সোমবার নয়াদিল্লিতে চিনা বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই-র সঙ্গে বৈঠকে সেই বার্তাই দিলেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। বৈঠকে উঠে এল সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ল়ড়াইয়ের বার্তাও। চলতি সপ্তাহেই ইসলামাবাদ সফরে যেতে পারেন ওয়াং। তার আগে নয়াদিল্লির বৈঠকে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের লড়াইয়ের বার্তা বেজিংয়ের কাছে আরও স্পষ্ট করে দিলেন জয়শঙ্কর।

ওয়াংয়ের সঙ্গে বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি বহুপাক্ষিক বিশ্বব্যবস্থার দিকেও জোর দেন জয়শঙ্কর। তিনি জানান, ভারত এক সুষ্ঠু, ভারসাম্যপূর্ণ এবং বহুপাক্ষিক বিশ্বব্যবস্থা চায়। এশিয়া মহাদেশের মধ্যেও এক বহুপাক্ষিক ব্যবস্থার প্রয়োজন রয়েছে বলে ওয়াংকে জানান জয়শঙ্কর। চিনা বিদেশমন্ত্রীকে তিনি বলেন, “আজকের দিনে বহুপাক্ষিক ব্যবস্থাকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা ভীষণ প্রয়োজন। বর্তমান পরিস্থিতিতে বিশ্ব অর্থনীতিতে স্থিতাবস্থা বজায় রাখা এবং তা বৃদ্ধি করা স্পষ্টতই অপরিহার্য।”

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কযুদ্ধের আবহে ওয়াংয়ের উদ্দেশে জয়শঙ্করের বার্তা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। মার্কিন শুল্কনীতি ঘিরে বিশ্বব্যাপী অস্থিরতার মাঝে নয়াদিল্লিকে বার বার কাছে টানার চেষ্টা করছে বেজিং। ভারত এবং চিনের সম্মিলিত শক্তির কথা বোঝাতে গিয়ে বেজিং বার বার ‘হাতি’ এবং ‘ড্রাগন’-এর উপমাও ব্যবহার করেছে। সম্প্রতি ভারত এবং চিনের মধ্যে সীমান্ত বাণিজ্য পুনরায় চালু করার বিষয়েও আলোচনা শুরু হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে জয়শঙ্করের বার্তা আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই নিয়েও চিনা বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে জয়শঙ্করের। ভারতের বিদেশমন্ত্রী জানিয়েছেন, সকল ধরনের সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়়াই ভারতের অন্যতম অগ্রাধিকার। এ বিষয়ে চিনের সঙ্গে আরও আলোচনার জন্য আগ্রহী ভারত। জয়শঙ্কর জানান, ভারত এবং চিনের মধ্যে একটি স্থিতিশীল, সহযোগিতামূলক এবং সুদূরপ্রসারী সম্পর্ক গড়ে উঠবে বলেও আশাবাদী তিনি। বস্তুত, ২০২০ সালে লাদাখে ভারত-চিন সংঘর্ষের পর থেকে দু’দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের টানাপড়েন সৃষ্টি হয়েছিল। বর্তমানে দু’দেশের মধ্যে সম্পর্ক অনেকটাই উন্নত হয়েছে।

সোমবার নয়াদিল্লির বৈঠকে সেই প্রসঙ্গও উঠে আসে। জয়শঙ্কর বলেন, “আমরা সম্পর্কের কঠিন সময় পেরিয়ে এসেছি এবং দুই দেশই এখন সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। এর জন্য উভয় পক্ষেরই একটি স্পষ্ট এবং গঠনমূলক দৃষ্টিভঙ্গি প্রয়োজন। সেই লক্ষ্যে আমাদের তিনটি পারস্পরিকের বিষয়ের উপর জোর দিতে হবে— পারস্পরিক শ্রদ্ধা, পরস্পরের প্রতি সংবেদনশীলতা এবং পারস্পরিক স্বার্থ (অনুধাবন করা)। মতপার্থক্য কখনও বিরোধ বা প্রতিযোগিতা কিংবা সংঘাতের রূপ নেওয়া উচিত নয়।”

মঙ্গলবার ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সঙ্গেও বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে ওয়াংয়ের। ওই বৈঠকে মূলত ভারত-চিন সীমান্ত সংক্রান্ত বিষয়টি নিয়ে আলোচনার কথা রয়েছে। তার আগে সোমবার সন্ধ্যার বৈঠকে চিনা বিদেশমন্ত্রীকে জয়শঙ্কর বলেন, “এটি (সীমান্ত সংক্রান্ত বিষয়) অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, আমাদের সম্পর্কের যে কোনও ইতিবাচক অগ্রগতির ভিত্তিই হল সীমান্তে শান্তি ও স্থিতাবস্থা। তাই সীমান্তে উত্তেজনা কমানোর প্রক্রিয়াকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।”

S jaishankar Wang Yi India China Border
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy