Advertisement
২৯ নভেম্বর ২০২৩
Martial Art

নিয়ন্ত্রণরেখায় এ বার মার্শাল আর্ট ফাইটার আনছে চিন

‘চায়না ন্যাশনাল ডিফেন্স নিউজ’-এ প্রকাশিত একটি রিপোর্ট জানাচ্ছে, লাসায় মোতায়েনের জন্য লালফৌজের পাঁচটি নতুন মিলিশিয়া ডিভিশন গড়া হয়েছে।

চিন সেনার মার্শাল আর্ট প্রশিক্ষণ— ফাইল চিত্র

চিন সেনার মার্শাল আর্ট প্রশিক্ষণ— ফাইল চিত্র

সংবাদসংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০২০ ১৯:৫৯
Share: Save:

একাধারে দক্ষ পর্বতারোহী এবং মার্শাল আর্টে পটু। গালওয়ান কাণ্ড থেকে শিক্ষা নিয়ে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় ভারতীয় সেনার মুখোমুখি মোতায়েনের জন্য এমন যোদ্ধাদেরই সন্ধানে চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মি। খোঁজ চলছে প্রশিক্ষকেরও। সেই উদ্দেশ্যে প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে জোরকদমে। সে দেশের সামরিক বাহিনীর মুখপত্র ‘চায়না ন্যাশনাল ডিফেন্স নিউজ’-এ প্রকাশিত একটি রিপোর্ট জানাচ্ছে, ইতিমধ্যেই লালফৌজের পাঁচটি নতুন মিলিশিয়া ডিভিশন গড়া হয়েছে। তাতে রয়েছেন চিনের বিভিন্ন মার্শাল আর্ট ক্লাবের ছাত্র-শিক্ষক এবং ২০০৮ সালের বেজিং অলিম্পিক্সের সময় এভারেস্ট শীর্ষে অলিম্পিক টর্চ নিয়ে যাওয়া পর্বতারোহীদের রিলে টিমের সদস্যেরা।

চিনা ফৌজের সংবাদপত্রে অবশ্য গালওয়ান প্রসঙ্গ এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে সন্তর্পণে। প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, ১৫ জুন মিলিশিয়া ডিভিশনগুলি তিব্বতের রাজধানী লাসায় পৌঁছেছে। তাতে পর্বতারোহী এবং মিক্সড মার্শাল আর্টে দক্ষ লড়াকুরা রয়েছেন বলেও জানানো হয়েছে। সে দেশের সরকারি চ্যানেল ‘চায়না সেন্ট্রাল টেলিভিশন’ নয়া মিলিশিয়া ডিভিশনগুলির লাসায় উপস্থিতির ফুটেজও সম্প্রচার করেছে। সেই একটি খবরে বলা হয়েছে, লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় (এলএসি) টহলদারির দায়িত্বপ্রাপ্ত চিনা সেনাদের কুংফু ও তাইকোন্ডোর প্রশিক্ষণ দিতে লাসায় গিয়েছেন এনবো ফাইট ক্লাবের জনা কুড়ি ‘মার্শাল আর্ট ট্রেনার’। এনবো ক্লাবেই রয়েছেন ‘আলটিমেট ফাইটিং চ্যাম্পিয়নশিপ’-এ অংশ নেওয়া বেশ কয়েকজন পরিচিত মিক্সড মার্শাল আর্ট ফাইটার।

আরও পড়ুন: ‘ভারত জানে কী ভাবে জবাব দিতে হয়’, চিনকে কড়া বার্তা ‘মন কি বাতে’

ভারত ও চিনের স্বাক্ষরিত ১৯৯৬ এবং ২০০৬ সালের সীমান্ত প্রোটোকল অনুযায়ী সীমান্তের দু’কিলোমিটারের মধ্যে আগ্নেয়াস্ত্র, বিস্ফোরক এবং রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার ‘কঠোর ভাবে নিষিদ্ধ’। কিন্তু সাম্প্রতিক কালে একাধিক বার এলএসি’তে পাথর, রড, লাঠি নিয়ে মুখোমুখি সংঘর্ষে জড়িয়েছে দু’দেশের সেনা। গত ১৫ জুন গালওয়ানের পেট্রোলিং পয়েন্ট ১৪-তে কাঁটাতার ও পেরেক বসানো লাঠি নিয়ে ভারতীয় সেনাদের আক্রমণ করেছিল চিনা ফৌজ। কর্নেল সন্তোষ বাবু-সহ ২০ ভারতীয় সেনার মৃত্যু হয়। ভারতীয় সেনার জবাবি হামলায় চিনা ফৌজের কম্যান্ডিং অফিসার-সহ কয়েকজনের মৃত্যুর খবরের কথাও মেনে নিয়েছে বেজিং। একটি মার্কিন রিপোর্টের দাবি, নিহত চিন সেনার সংখ্যা অন্তত ৩৫।

আরও পড়ুন: চিন ঢুকছে, আগেই সাবধান করেছিলেন লাদাখের এই বিজেপি জনপ্রতিনিধি

সামরিক বিশেষজ্ঞদের মতে অদূর ভবিষ্যতে লাদাখের পাশাপাশি সিকিম এবং অরুণাচলের এলএসি’ও এমন রক্তক্ষয়ী ‘হ্যান্ড টু হ্যান্ড কমব্যাটে’র সাক্ষী হতে পারে। আর তার আঁচ পেয়েই লাসাকে কেন্দ্র করে প্রস্তুতি শুরু করেছে চিন। উদ্দেশ্য স্পষ্ট, লাঠি কিংবা রডের মতো ‘অসামরিক অস্ত্রে’র লড়াইয়ে ভারতীয় সেনাকে ঘায়েল করা। অধিকৃত তিব্বতের রাজধানী থেকে প্রায় ১,৩০০ কিলোমিটার দূরে পূর্ব লাদাখের অবস্থান। উঁচু পাহাড়ে ঘেরা দুর্গম ‘সঙ্ঘাতের ক্ষেত্রগুলি’-তে দ্রুত পৌঁছনোর জন্যই ডাক পড়ছে পর্বতারোহীদের। চিনা সেনার সংবাদপত্র অবশ্য বলছে, ‘তিব্বত সীমান্তের সুরক্ষা নিশ্চিত করতেই এই উদ্যোগ।’ কিন্তু ড্রাগনের এই ‘আত্মরক্ষার তত্ত্ব’ মানতে নারাজ সামরিক বিশেষজ্ঞদের অনেকেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE