Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
Dhananjaya Yashwant Chandrachud

প্রধানমন্ত্রীর সামনেই চন্দ্রচূড়ের মুখে নেহরু

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এ দিনের অনুষ্ঠানে তাঁর সরকারের আইনমন্ত্রী কিরেণ রিজিজুও হাজির ছিলেন। নতুন প্রধান বিচারপতি দায়িত্ব নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই রিজিজু নতুন করে বিচারপতি নিয়োগের কলেজিয়াম ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন।

সংবিধান দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি ধনঞ্জয় ওয়াই চন্দ্রচূড়ের সঙ্গে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। পিটিআই।

সংবিধান দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি ধনঞ্জয় ওয়াই চন্দ্রচূড়ের সঙ্গে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০২২ ০৬:৩২
Share: Save:

প্রধান বিচারপতি হিসেবে ধনঞ্জয় ওয়াই চন্দ্রচূড়ের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীই উপস্থিত ছিলেন না। সে দিন তিনি ছিলেন হিমাচল প্রদেশের ভোট প্রচারে। শনিবার সকালে সুপ্রিম কোর্টে সংবিধান দিবসের অনুষ্ঠানে এক মঞ্চে হাজির হলেন প্রধানমন্ত্রী ও নতুন প্রধান বিচারপতি। প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় তাঁর বক্তৃতায় দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুকে উদ্ধৃত করলেন।

প্রধানমন্ত্রী মোদী দেশের যাবতীয় সমস্যার জন্য নেহরুকেই দায়ী করেন। তাঁর সামনেই নেহরুর ‘ট্রিস্ট উইথ ডেস্টিনি’ বক্তৃতার কথা উল্লেখ করে বলেছেন, “নেহরু দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে বলেছিলেন, কিছু ক্ষেত্রে অতীত আমাদের আঁকড়ে আছে। আমরা অনেক বার যে শপথ করেছি, তা পালনের জন্য আমাদের অনেক কিছু করতে হবে।’’ প্রধান বিচারপতি হিসেবে চন্দ্রচূড় সাংবিধানিক অধিকারের পক্ষে দাঁড়াবেন বলে প্রবল প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে। কিন্তু নরেন্দ্র মোদী আজ ফের সাংবিধানিক অধিকারের তুলনায় সাংবিধানিক কর্তব্যকে অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলেছেন। মহাত্মা গান্ধীকে উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, ‘‘এ বার ১৫ অগস্ট লাল কেল্লা থেকে আমি কর্তব্যে জোর দেওয়ার কথা বলেছিলাম। তা আমাদের সংবিধানের ভাবনারই প্রকাশ। মহাত্মা গান্ধী বলতেন, আমাদের অধিকার আমাদের সেই কর্তব্য, যা আমরা সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করি।’’ কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর কটাক্ষ, ‘‘বিজেপি-আরএসএসের গান্ধী ও অম্বেডকরকে নিশানা করার সাহস নেই। ওরা জাতীয় আইকনদের সামনে প্রকাশ্যে মাথানত করে। কিন্তু তাঁদের নীতিকে ধ্বংস করে চলেছে।’’

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এ দিনের অনুষ্ঠানে তাঁর সরকারের আইনমন্ত্রী কিরেণ রিজিজুও হাজির ছিলেন। নতুন প্রধান বিচারপতি দায়িত্ব নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই রিজিজু নতুন করে বিচারপতি নিয়োগের কলেজিয়াম ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন। একইসঙ্গে গুজরাত থেকে অন্ধ্রপ্রদেশে বিচারপতিদের বদলি করার কলেজিয়ামের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শুরু হয়েছে। প্রথমে গুজরাত হাই কোর্টের আইনজীবীরা বিচারপতি নিখিল কারিয়েলকে পটনায় বদলি করার প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছিলেন। এ বার অন্ধ্রপ্রদেশ হাই কোর্ট অ্যাডভোকেটস অ্যাসোসিয়েশন সেখানকার দুই বিচারপতিকে বদলির সিদ্ধান্তের বিরোধিতা শুরু করেছে। এর পিছনে সরকারের দিক থেকে শীর্ষ আদালতের উপরে চাপ তৈরির কৌশল রয়েছে কি না, নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আইনমন্ত্রী ইতিমধ্যেই ‘আশঙ্কা’ প্রকাশ করে বলেছেন, কলেজিয়ামের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আইনজীবীদের প্রতিবাদ আরও বাড়তে পারে। তা হলে পরিস্থিতি কোথায় দাঁড়াবে!

প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় শুক্রবারই বলেছিলেন, অনেক কিছুর মতো কলেজিয়াম ব্যবস্থা নিখুঁত নয়। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট ও কেন্দ্রীয় সরকার একে অপরের ভুল ধরতে থাকলে উচ্চমানের বিচারপতি নিয়োগ করা যাবে না। কিন্তু রিজিজু বলেছেন, ‘‘কলেজিয়াম ব্যবস্থা সংবিধান বহির্ভূত। আদালত বা কোনও বিচারপতি কলেজিয়াম তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলেই আশা করা উচিত নয় যে দেশের মানুষ তা সমর্থন করবেন।’’ তাঁর যুক্তি, ১৯৯১-এর আগে পর্যন্ত সরকারই বিচারপতি নিয়োগ করত। এখন কলেজিয়াম ব্যবস্থায় বিচারপতিরাই বিচারপতিদের নিয়োগ করছেন। এই প্রক্রিয়া অস্বচ্ছ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE