জাতগণনারপরে দেশে ওবিসি-দের মোট সংখ্যা জানানো হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হল।
এত দিন জনগণনার সঙ্গে তফসিলি জাতি (এসসি), জনজাতি (এসটি)-দের সংখ্যা গোনা হত। এ বার রাহুল গান্ধী থেকে বিজেপির শরিকদেরও দাবি ছিল, জনগণনার সঙ্গে জাতগণনা করা হোক। যাতে ওবিসি-দের সংখ্যাও স্পষ্ট হবে। বৃহস্পতিবার মোদী সরকার ২০২৭-এ জনগণনা করার কথা ঘোষণা করেছে। জনগণনার সঙ্গে জাতগণনার সিদ্ধান্ত আগেই হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু সরকারি সূত্রের ইঙ্গিত, জনগণনার সময় কার কোন জাত, সেই তথ্য সংগ্রহ করা হবে। কিন্তু এসটি, এসটি-দের ক্ষেত্রে যেমন নামের সঙ্গে এসসি না এসটি, তা-ও লেখা হয়ে যায়, সেই ভাবে ওবিসি বা অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির মধ্যে কত জন পড়ছেন, তা চিহ্নিত করা না-ও হতে পারে।
ওবিসি, দলিতদের দাবিদাওয়া নিয়ে আন্দোলনকারী সংগঠন ‘ন্যাশনাল কনফেডারেশন অব দলিত অ্যান্ড আদিবাসী অর্গানাইজ়েশনস-এর চেয়ারম্যান অশোক ভারতী বলেছেন, ‘‘আমি এখন থেকেই ওবিসি সমাজকে বলে দিচ্ছি, দেশে জাতগণনা হবে ঠিকই। কিন্তু এসসি, এসটি-র মতো জাতি জনগণনা হবে না। আর তা হলে এই জাতগণনারও সেই হাল হবে, যা ২০১১ সালে আর্থ-সামাজিক জাতগণনার হয়েছিল।’’
মনমোহন সরকারের আমলে ২০১১ সালে আর্থ সামাজিক জাতগণনা করে এসসি, এসটি ও ওবিসি-দের সংখ্যা এবং তাঁদের আর্থ সামাজিক পরিস্থিতি জানার চেষ্টা হয়েছিল। জনগণনার সময় কেউ জাতের নাম বললেও তা ওবিসি-র মধ্যে পড়ছে কি না, তা পরে নির্ধারণ করতে সময় লাগে। সেই কাজ শেষ হওয়ার আগেই সরকার বদলে যায়। মোদী সরকার সেই সমীক্ষা তথ্য জনকল্যাণমুখী কর্মসূচির জন্য কাজে লাগালেও তা প্রকাশ করা হয়নি। কংগ্রেসের বক্তব্য, আর্থিক উন্নয়নের ফল অনগ্রসরদের মধ্যে পৌঁছচ্ছে কি না, তা জাতগণনা না হলে বোঝা যাবে না।
মোদী সরকারের সামনেচ্যালেঞ্জ হল, ওবিসি-দের সংখ্যা যদি অনুমান অনুযায়ী জনসংখ্যার ৫০ শতাংশের বেশি হয়, তা হলে সংরক্ষণের ঊর্ধ্বসীমা ৫০ শতাংশ ভেঙে আরও বেশি সংরক্ষণের দাবি উঠবে। রাহুল ঠিক সেই দাবিই করছেন। কিন্তু তা হলে উচ্চবর্ণ বা জেনারেল ক্যাটেগরির আসন কমে যাওয়া নিয়ে ক্ষোভের মুখে পড়তে হবে। এই দু’মুখো তরোয়াল থেকে বাঁচতেই মোদী সরকার ওবিসি-দের মোট সংখ্যা নির্ধারণের পথেই হাঁটবে না বলে সমাজকর্মীদের আশঙ্কা।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)