রাজ্যে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের (আরএসএস) কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণ করতে চলেছে কংগ্রেস পরিচালিত কর্নাটক সরকার। প্রকাশ্য স্থানে বা সরকারি কোনও জমিতে আরএসএস-কে কর্মসূচির অনুমতি দেওয়া হবে না। বৃহস্পতিবার রাজ্যের মন্ত্রিসভা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ বার তা নিশ্চিত করতে আইন আনা হবে। যদি আইনত এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করা যায়, তবে কর্নাটকই হবে দেশের প্রথম রাজ্য, যেখানে আরএসএসের উপর বিধিনিষেধ থাকবে।
কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গের পুত্র তথা কর্নাটকের মন্ত্রী প্রিয়ঙ্ক খড়্গে আরএসএস-কে নিষিদ্ধ করতে চেয়ে কিছু দিন আগে মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়াকে চিঠি লিখেছিলেন। তাঁর অভিযোগ ছিল, সরকারি স্কুল, খেলার মাঠ, মন্দিরের মতো জায়গায় আরএসএস-এর সমাবেশ শিশু-যুবকদের মনে বিভেদমূলক ধারণা ছড়িয়ে দিচ্ছে। সংগঠনের কার্যকলাপকে অসাংবিধানিক এবং জাতীয় ঐক্যের চেতনার পরিপন্থী বলেও দাবি করেছিলেন তিনি। এ নিয়ে গত কয়েক দিন ধরে বিস্তর বিতর্ক হয়েছে। প্রিয়ঙ্কের বক্তব্যের বিরুদ্ধে কর্নাটকে কোমর বেঁধে নেমেছে বিজেপি। কিন্তু আরএসএস-এর উপর বিধিনিষেধের সপক্ষে কর্নাটক কংগ্রেস ১২ বছরের পুরনো একটি নির্দেশিকাকে হাতিয়ার করতে চাইছে।
আরও পড়ুন:
বৃহস্পতিবার কর্নাটক সরকার ২০১৩ সালের একটি সরকারি নির্দেশিকা প্রকাশ করেছে। সেই সময়ে কর্নাটকে ক্ষমতায় ছিল বিজেপি। রাজধানী বেঙ্গালুরুর একটি স্কুলে ব্যক্তিগত কর্মসূচি আয়োজনের অনুমতি চাওয়া হয়েছিল। তা খারিজ করে তৎকালীন বিজেপি সরকার জানিয়েছিল, খেলার মাঠ, স্কুল কেবলমাত্র শিক্ষামূলক কাজেই ব্যবহৃত হবে। অন্য কোনও কাজে নয়। আরএসএস কার্যকলাপের ক্ষেত্রেও সেই যুক্তি সিদ্দারামাইয়ার সরকার দেবে বলে মনে করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর প্রিয়ঙ্ক বলেন, ‘‘আমরা কোনও সংগঠনকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না। কিন্তু এখন থেকে প্রকাশ্য স্থানে, রাস্তায় যা খুশি তাই করা যাবে না। আপনাদের যা করার আছে, সরকারের অনুমতি নিয়ে করতে হবে। সরকার ঠিক করবে এই ধরনের কাজ করতে দেওয়া হবে কি না।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘রাস্তায় লাঠি ঘোরাতে ঘোরাতে কেউ হাঁটতে পারবে না। আমরা যে আইন আনতে চলেছি, এগুলো তাতে বলা থাকবে। রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতর, আইন দফতর, শিক্ষা দফতর যে যে নির্দেশিকা দিয়েছে, নতুন আইনের জন্য সেগুলি একত্রিত করা হবে। আইন, সাংবিধানিক কাঠামো মেনেই আইন আসবে।’’
আরএসএস-এর কথা মাথায় রেখেই কি নতুন আইনের ভাবনা? অপর মন্ত্রী এইচ কে পাটিল বলেন, ‘‘সেটা আপনারা ভেবে নিতে পারেন। কোনও নির্দিষ্ট সংগঠনের মানুষ সরকারের নিশানায় নেই। যারা নিয়ম ভাঙে, এটা তাদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। সরকারি জমিতে অনধিকার প্রবেশ পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা হবে।’’