‘অপারেশন সিঁদুরে’র পরে ভারতের বার্তা বিশ্বব্যাপী পৌঁছে দিতে কংগ্রেস নেতা শশী তারুরকে বেছে নিয়েছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকার। বিশ্বের দরবারে ভারতের বার্তা পৌঁছে দেওয়ার পরে মোদীর ভূমিকার ফের প্রশংসা করলেন তারুর। কংগ্রেস নেতার মতে, মোদীর উদ্যম, সক্রিয়তা এবং কোনও বিষয়ে সকলের সঙ্গে জড়িত থাকার ইচ্ছা— এই তিনটি গুণ বিশ্ব মঞ্চে ভারতের একটি মূল সম্পদ হিসাবে উঠে এসেছে। এটিকে আরও বেশি করে সমর্থন জোগানোর প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করছেন তারুর। সংবাদমাধ্যম ‘দ্য হিন্দু’তে এমনটাই লিখেছেন কংগ্রেস নেতা।
এর আগে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে মোদীর বৈঠকের প্রশংসা করেছিলেন তারুর। তা নিয়ে কংগ্রেসের অন্দরে প্রশ্নও উঠেছিল। সেই সময় তিরুঅনন্তপুরমের কংগ্রেস সাংসদ ইঙ্গিতপূর্ণ ভাবে জানিয়েছিলেন, তিনি কংগ্রেসের জন্য কাজ করতে সব সময়েই প্রস্তুত। কিন্তু দলের তাঁকে প্রয়োজন না-হলে ‘অন্য অনেক কিছুই’ করার আছে তাঁর। ‘অপারেশন সিঁদুরে’র পরে মোদীর সরকার সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের বার্তা ছড়িয়ে দিতে শাসক-বিরোধী সাংসদদের নিয়ে সাতটি প্রতিনিধিদল বিভিন্ন দেশে পাঠায়। তার মধ্যে একটি প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে ছিলেন তারুর।
তিরুঅনন্তপুরমের কংগ্রেস সাংসদের মতে, ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর পরে কূটনৈতিক সফর ছিল দেশের সংকল্প এবং বিশ্বকে সঠিক ভাবে বার্তা পৌঁছে দেওয়ার একটি মুহূর্ত। এর ফলে বোঝা যায়, ভারত ঐক্যবদ্ধ থাকলে আন্তর্জাতিক মঞ্চে স্পষ্ট এবং দৃঢ় ভাবে নিজেদের কণ্ঠস্বর তুলে ধরা যায়। তারুরের দাবি, ওই সফর থেকে বেশ কিছু শিক্ষাও মিলেছে। যেমন একতার শক্তি, স্পষ্ট বার্তার ক্ষমতা, ‘সফ্ট পাওয়ার’ (দেশের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ইত্যাদি)-এর মূল্য এবং কূটনীতির অপরিহার্যতা— এগুলি গুরুত্ব অনুধাবন করা গিয়েছে বলে মত কংগ্রেস নেতার।
আরও পড়ুন:
আন্তর্জাতিক নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে ভারতের তিনটি ‘টি’-এর প্রসঙ্গও উল্লেখ করেন কংগ্রেস নেতা— ‘টেক, ট্রেড, ট্র্যাডিশন’ (প্রযুক্তি, বাণিজ্য এবং ঐতিহ্য)। তাঁর মতে এই তিনটি বিষয়ই আগামী দিনে ভারতের কৌশলগত অবস্থানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। ভারত যে বিশ্বকে আরও ‘ন্যায়বিচারপূর্ণ, নিরাপদ এবং সমৃদ্ধ’ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, তা-ও উল্লেখ করেছেন তিনি। এ ছাড়া ওই সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সফরের সময়ের বিভিন্ন অভিজ্ঞতার কথাও উল্লেখ করেছেন তিনি। তারুরের দাবি, প্রতিনিধিদল ভারতের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে সফল হয়েছে। বেশ কয়েকটি দেশের রাজধানীতে যে পরিবর্তন দেখা গিয়েছে, তা থেকেই এটি স্পষ্ট বলে মত কংগ্রেস সাংসদের।
শুধু মোদী সরকারের ভূমিকাই নয়, সাম্প্রতিক সময়ে কেরলে বাম জোট শাসিত সরকারের ‘প্রশংসা’ করেও কংগ্রেসকে অস্বস্তিতে ফেলেছিলেন তারুর। একটি নিবন্ধে কেরলে নতুন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান (স্টার্ট আপ) বৃদ্ধির প্রশংসা করেন তারুর। কেরলে কংগ্রেস বিরোধী শিবিরে রয়েছে। যদিও কংগ্রেস সাংসদের বক্তব্য, তিনি বামেদের জোট সরকারের প্রশংসা করেননি, কেবল রাজ্যের উন্নয়নকে তুলে ধরেছেন। কংগ্রেসের কেরল নেতৃত্ব ওই মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানায়। দলের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, দলের হাজার হাজার কর্মীর সঙ্গে যেন ‘বিশ্বাসঘাতকতা’ না-করেন তারুর। এ বার ফের বৈশ্বিক কূটনীতিতে মোদীর ভূমিকার প্রশংসা করলেন তিরুঅনন্তপুরমের কংগ্রেস সাংসদ।