লাল কেল্লায় খড়্গের জন্য রাখা ফাঁকা চেয়ার (বাঁ দিকে), কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
দেশের ৭৭তম স্বাধীনতা দিবসে ঐতিহাসিক লাল কেল্লা থেকে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই সমাবেশে হাজির ছিলেন দেশ-বিদেশের তাবড় ব্যক্তিত্বেরা। কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণ ব্যাপার হল, গোটা অনুষ্ঠান জুড়ে বিরোধী দলনেতার জন্য সংরক্ষিত চেয়ার পড়ে রইল ফাঁকা। রাজনৈতিক মহলের অনুমান, এর মাধ্যমে নির্দিষ্ট বার্তা সরকারি শিবিরে পৌঁছে দিতে চেয়েছে বিরোধীরা।
ঐতিহাসিক লাল কেল্লায় দেশবাসীর উদ্দেশে ভাষণ দিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। তা শুনলেন দেশ, বিদেশের অতিথিরা। কিন্তু দর্শকাসনে চোখ টেনেছে একটি লাল চেয়ার। ৩ নম্বর চিহ্নিত ওই চেয়ারেই বসার কথা ছিল বিরোধী দলনেতা তথা কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গের। কিন্তু তিনি গরহাজির রইলেন অনুষ্ঠানে। কারণ হিসাবে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, খড়্গে সুস্থ বোধ করছিলেন না। তাই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারেননি। যদিও এই অনুপস্থিতির অন্য রকম ব্যাখ্যা খুঁজে পাচ্ছে রাজনৈতিক মহল।
লাল কেল্লার অনুষ্ঠানে না এলেও নিজের এক্স হ্যান্ডলে (পূর্বতন টুইটার) একটি ভিডিয়োবার্তা দিয়েছেন কংগ্রেস সভাপতি। যে ভিডিয়োর মধ্যে লুকিয়ে আছে খড়্গের অনুষ্ঠান বয়কটের ইঙ্গিত। সেই ভিডিয়োয় খড়্গের বক্তৃতায় উঠে এসেছে ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীদের অবদানের কথা। ইঙ্গিতপূর্ণ বিষয় হল, সেই তালিকায় স্থান পেয়েছে অটলবিহারী বাজপেয়ীর কথা। পাশাপাশি এসেছে মহাত্মা গান্ধী, জওহরলাল নেহরু, সর্দার বল্লভভাই পটেল, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোস, মৌলানা আবুল কালাম আজ়াদ, রাজেন্দ্র প্রসাদ, সরোজিনী নাইডু এবং বিআর অম্বেডকররের নাম।
খড়্গের স্বাধীনতা দিবসের ভিডিয়োবার্তায় প্রথম প্রধানমন্ত্রী নেহরুর পাশাপাশি ঘুরেফিরে এসেছে ইন্দিরা গান্ধী, লালবাহাদুর শাস্ত্রী, পিভি নরসিংহ রাও, মনমোহন সিংহের সময়ের কথা। সেই প্রসঙ্গেই নাম না করে তিনি কটাক্ষ করেছেন মোদীকে। খড়্গে বলেন, ‘‘দেশের অগ্রগতিতে প্রত্যেক প্রধানমন্ত্রীরই অবদান রয়েছে। কিন্তু ইদানীং কিছু মানুষ বলার চেষ্টা করছেন, ভারতের যা কিছু উন্নতি, সবই বিগত কয়েক বছরে।’’
এর পরে আবার কংগ্রেস সভাপতির বক্তব্যে এসেছে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর প্রসঙ্গ। তিনি বলেন, ‘‘অটলবিহারী বাজপেয়ী-সহ প্রত্যেক প্রধানমন্ত্রী দেশের জন্য ভেবেছেন এবং উন্নয়নের লক্ষ্যে একাধিক পদক্ষেপ করেছেন। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে জানাতে চাই, আজ দেশের সংবিধান, গণতন্ত্র এবং স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলিকে ব্যাপক চাপের মুখে কাজ করতে হচ্ছে। নতুন নতুন পদ্ধতি প্রয়োগ করা হচ্ছে বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করতে। শুধু সিবিআই, ইডি বা আয়কর দফতরের হানাই নয়, দেশের নির্বাচন কমিশনকেও দুর্বল করা হচ্ছে। বিরোধী সাংসদদের কণ্ঠরোধ করতে তাঁদের সাসপেন্ড করা হচ্ছে, তাঁদের মাইক মিউট করে দেওয়া হচ্ছে, বক্তৃতার অংশ ছেঁটে দেওয়া হচ্ছে...।’’
প্রসঙ্গত, লাল কেল্লার মঞ্চ থেকে মঙ্গলবারও প্রধানমন্ত্রী আক্রমণ জারি রেখেছেন বিরোধীদের। পরিবারতন্ত্র নিয়ে বিজেপির অভিযোগ আবার ফিরে এসেছে মোদীর কণ্ঠে। আগাগোড়া কটাক্ষ করেছেন বিরোধীদের। এই প্রেক্ষিতে বিরোধী দলনেতার চেয়ার ফাঁকা রেখে সম্ভবত মোদীকে বার্তা দিতে চাইল ‘ইন্ডিয়া’।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy