E-Paper

যোগী-রাজ্যে মুত্তাকি, খোঁচা কংগ্রেসের

দেওবন্দের তরফে মুত্তাকিকে এ দিন ‘কাসমী’ উপাধি দেওয়া হয়েছে। মুত্তাকির সঙ্গে আজ বৈঠক করেন মাদানি। বলেন, ‘‘ধর্ম যা-ই হোক, দেশগুলির মধ্যে সুসম্পর্ক থাকা জরুরি।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০২৫ ১০:৩৩
সহারানপুরে তালিবান সরকারের বিদেশমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি।

সহারানপুরে তালিবান সরকারের বিদেশমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি। ছবি: পিটিআই।

চার বছর আগে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বলেছিলেন, ‘তালিবানকে সমর্থন করার অর্থ, মানবতা বিরোধী শক্তিকে সমর্থন করা’। আর আজ সেই যোগী-রাজ্যেরই সহারনপুরে ইসলামিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দারুল উলুম দেওবন্দে পুষ্পবৃষ্টি করে স্বাগত জানানো হল আফগানিস্তানের তালিবান সরকারের বিদেশমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকিকে, যোগী সরকারেরই দেওয়া নিরাপত্তার বেষ্টনীতে। অভ্যর্থনায় উচ্ছ্বসিত মুত্তাকি দেওবন্দে দাঁড়িয়ে ঘোষণাও করলেন, ভবিষ্যতে এমন সফর ঘন ঘন দেখা যেতে পারে।

গতকালই বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠক করেছেন মুত্তাকি। কাবুলে দূতাবাস খোলার বার্তা দিয়ে তালিবান সরকারকে কার্যত স্বীকৃতি দিয়েছে নরেন্দ্র মোদীর সরকার। এই প্রেক্ষাপটে আজ দুপুরে আফগান প্রতিনিধিদলের সঙ্গে দিল্লি থেকে সড়কপথে দেওবন্দে পৌঁছন মুত্তাকি। মুসলিম শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির উপাচার্য আবুল কাসিম নোমানি, জমিয়তে-উলেমা-ই-হিন্দের সভাপতি মৌলানা আরশাদ মাদানি তাঁকে স্বাগত জানান। শিক্ষক ও পড়ুয়ারা পুষ্পবৃষ্টি করে তাঁকে স্বাগত জানান। কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে আফগান বিদেশমন্ত্রীকে প্রতিষ্ঠানের ভিতরে নিয়ে যাওয়া হয়।

দেওবন্দের তরফে মুত্তাকিকে এ দিন ‘কাসমী’ উপাধি দেওয়া হয়েছে। মুত্তাকির সঙ্গে আজ বৈঠক করেন মাদানি। বলেন, ‘‘ধর্ম যা-ই হোক, দেশগুলির মধ্যে সুসম্পর্ক থাকা জরুরি। ভারতে আফগানিস্তান থেকে জঙ্গি পাঠানোর অভিযোগ করত নয়াদিল্লি। এই বৈঠকের পর আমরা নিশ্চিত, আফগানিস্তান থেকে কোনও সন্ত্রাসবাদী ভারতে আসবে না।’’

মুত্তাকি বলেন, ‘‘এমন অভ্যর্থনা আর সম্মান পেয়ে আমি আপ্লুত। আমরা আমাদের কূটনীতিকদের এখানে পাঠাব। আপনারাও কাবুলে যাবেন। দিল্লি আমাকে যে ভাবে গ্রহণ করে নিয়েছে, তাতে আমার আশা, দু’দেশের সম্পর্ক ভবিষ্যতে আরও শক্তিশালী হবে। এই ধরনের সফর ঘন ঘন দেখা যেতে পারে।’’

অনেকেই মনে করছেন, সহারনপুরে তালিবান নেতার এই সফর কূটনৈতিক সম্পর্কের স্বার্থে তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, ১৮৬৬ সালে তৈরি হওয়া এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির আদলেই খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে তৈরি হয়েছিল ‘দারুল উলুম হাক্কানিয়া’। বিভিন্ন তালিবান নেতা সেখানে পড়াশোনা করেছেন।

উচ্ছ্বাসের এই আবহে অবশ্য তালিবান সম্পর্কে চার বছর আগে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের পুরনো বক্তব্যের ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ভেসে উঠেছে। যেখানে যোগী বলছেন, ‘মহিলা ও শিশু বিরোধী তালিবানের কীর্তিকে সমর্থন করার অর্থ, মহিলাদের অপমান করা।’ তালিবানের সুরে কথা বলার জন্য দেওবন্দে গ্রেফতারও করা হয়েছিল কয়েক জনকে। আর আজ সেই তালিবান সরকারকেই কার্যত স্বীকৃতি দিয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার এবং সেই যোগী সরকারের পুলিশের দেওয়া নিরাপত্তা বেষ্টনীর ভিতরেই তালিবান সরকারের বিদেশমন্ত্রী পৌঁছেছেন তাঁরই রাজ্যে। ফলে খোঁচা দিতে ছাড়েনি কংগ্রেস। দলের নেতা জয়রাম রমেশ এক্স হ্যান্ডলে লিখেছেন, ‘‘মোদী সরকার যে ভাবে তালিবানের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরির চেষ্টা করছে, তা যদি কংগ্রেস করতো! তা হলে বিজেপি ও তাদের বৃত্তের লোকেরা কী বলত?’’


(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Afghanistan Yogi Adityanath Uttar Pradesh

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy