E-Paper

রামমন্দির প্রচার রুখতে রাহুলের অস্ত্র ন্যায় যাত্রা-ই

কংগ্রেসের বক্তব্য, মূল্যবৃদ্ধি, বেকারত্ব, সীমান্তে চিনের ভারতীয় জমি দখল, মণিপুরের হিংসার মতো ব্যর্থতা থেকে নজর ঘোরাতেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রামমন্দির নিয়ে ভাবাবেগ তৈরি করতে চাইছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০২৪ ০৬:২২
rahul gandhi

রাহুল গান্ধী। —ফাইল চিত্র।

অযোধ্যায় রামমন্দিরের প্রাণপ্রতিষ্ঠাকে কেন্দ্র করে নরেন্দ্র মোদীর গোটা দেশে ভাবাবেগ তৈরির কৌশলের জবাব হিসেবে কংগ্রেস রাহুল গান্ধীর ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রাকে তুলে ধরতে চাইছে।

কংগ্রেসের বক্তব্য, মূল্যবৃদ্ধি, বেকারত্ব, সীমান্তে চিনের ভারতীয় জমি দখল, মণিপুরের হিংসার মতো ব্যর্থতা থেকে নজর ঘোরাতেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রামমন্দির নিয়ে ভাবাবেগ তৈরি করতে চাইছেন। মে মাস থেকে মণিপুরে লাগাতার হিংসা চললেও প্রধানমন্ত্রী মণিপুরে সেখানে যাওয়ার সময় পাননি। অথচ রাহুল গান্ধী সেই মণিপুর থেকেই তাঁর ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা শুরু করতে চলেছেন। সমাজমাধ্যমে তাঁর বার্তা, ‘‘নিজের লোকেদের মধ্যেই ফিরে আসছি। অন্যায় ও দম্ভের বিরুদ্ধে ন্যায়ের স্লোগান নিয়ে। শপথ নিচ্ছি ন্যায়ের অধিকার না পাওয়া পর্যন্ত সত্যের পথে এই যাত্রা চলবে।’’

আজ ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রার লোগো ও মূল মন্ত্র ‘ন্যায় কা হক মিলনে তক’ প্রকাশ করে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে মণিপুরে না যাওয়া নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে তোপ দেগেছেন। একই সঙ্গে রামমন্দিরে প্রাণপ্রতিষ্ঠা অনুষ্ঠানে তাঁর বা সনিয়া গান্ধীর যাওয়া বা না-যাওয়া নিয়ে খড়্গে বলেছেন, খুব শীঘ্রই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। খড়্গে আগেই দলীয় বৈঠকে বলেছিলেন, বিজেপি স্পর্শকাতর বিষয়ে কংগ্রেসকে জড়িয়ে বিতর্ক খাড়া করতে চাইছে। আজ খড়্গে বলেন, “মন্দিরে যাওয়া ব্যক্তিগত আস্থার বিষয়। যাঁদের আস্থা রয়েছে, তাঁরা আজও যেতে পারেন, কালও যেতে পারেন, পরশুও যেতে পারেন।” কংগ্রেস সূত্রের খবর, ২২ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী নতুন রামমন্দিরের উদ্বোধনের আগেই ১৫ জানুয়ারি উত্তরপ্রদেশের কংগ্রেস সভাপতি অজয় রাইয়ের নেতৃত্বে রাজ্যের নেতারা অযোধ্যায় গিয়ে অস্থায়ী মন্দিরে রামলালার দর্শন করতে পারেন। মন্দিরে পুজো দেওয়ার আগে তাঁরা সরযূ নদীতে স্নানও করবেন।

খড়্গে আজ প্রশ্ন তুলেছেন, নরেন্দ্র মোদী লক্ষদ্বীপে গিয়ে সমুদ্রে সাঁতার কাটার সময় পান। সমুদ্রের ধারে ছবি তোলার সময় পান। কখনও নির্মীয়মাণ মন্দিরে গিয়ে ছবি তোলেন। কখনও কেরলে, কখনও মুম্বইয়ে নতুন নতুন পোশাকে ছবি তোলেন। ভগবানের মতো রোজ দর্শন দিতে চান। কিন্তু তিনি মণিপুরে হিংসা সামলাতে যেতে পারেন না কেন? সংসদে দাঁড়িয়ে ছাতি ঠুকে একাই বিরোধীদের জন্য যথেষ্ট বলে দাবি করেন। সেই ‘মহাপুরুষ’ যে রাজ্যে মানুষ প্রাণ হারাচ্ছেন, মহিলাদের ধর্ষণ করা হচ্ছে, সেখানে যাচ্ছেন না কেন?

রাহুলের ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রার সূত্র ধরে কংগ্রেস-সহ গোটা বিরোধী শিবিরই চাঙ্গা হবে বলে মনে করছেন খড়্গেরা। যাত্রা শুরুর আগেই লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসেবে প্রথমে প্রার্থী বাছাই কমিটির পরে আজ কংগ্রেস অজয় মাকেনের নেতৃত্বে প্রচার কমিটি, শক্তিসিন গোহিলের নেতৃত্বে ওয়ার রুম এবং একাধিক রাজ্যে প্রদেশ নির্বাচনী কমিটি ঘোষণা করে দিয়েছে।

খড়্গের বক্তব্য, ভারতীয় দণ্ড সংহিতার তিন আইন, শ্রম আইন তৈরি করে মোদী সরকার স্বৈরাচার প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে। তার বিপরীতে ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রার মূল লক্ষ্য সংবিধানের প্রস্তাবনার মূল ভাবনা, ন্যায়, স্বতন্ত্রতা, সাম্য ও সৌভ্রাত্র রক্ষা করা।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Rahul Gandhi Congress BJP Ayodhya Ram Temple Ayodhya Ram Mandir

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy