তাঁর দাদাকে খুনই করা হয়েছে। এবং সম্পূর্ণ পরিকল্পিত ভাবেই। বৌদি এবং তাঁর প্রেমিক তথা মৃতের তুতো ভাইয়ের একটি কথোপকথন পুলিশের হাতে তুলে দিয়ে দাবি করলেন মৃতের নিজের ভাই কুণাল দেব। তাঁর দাদা কর্ণ দেবকে খুনের অভিযোগ উঠেছে বৌদি সুস্মিতা এবং তাঁদের তুতো ভাই রাহুলের বিরুদ্ধে।
কর্ণকে খুনের আগে কী কী কথোপকথন হয়েছিল সুস্মিতা এবং রাহুলের মধ্যে তা ইতিমধ্যেই প্রকাশ্যে এসেছে। পুলিশ সূত্রে খবর, ১২ জুলাই রাতে কর্ণকে খুন করা হয়। ১৬ জুলাই অভিযুক্তদের কথোপকথন (চ্যাট) পুলিশের হাতে তুলে দেন মৃতের ভাই কুণাল। পুলিশ সূত্রে খবর, কর্ণকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে খুন করার পরিকল্পনা করেছিলেন সুস্মিতা এবং রাহুল। তাঁকে রাতের খাবারের সঙ্গে ১৫টি ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে খাইয়েও দিয়েছিলেন। তার পর অপেক্ষা করছিলেন কখন কর্ণের মৃত্যু হয়। কিন্তু খাবার পর তিন ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও কর্ণের মৃত্যু না-হওয়ায় ‘বিচলিত’ হয়ে পড়েন সুস্মিতা। তার পরেই প্রেমিক রাহুলের সঙ্গে তাঁর কথোপকথন চলে। এমনটাই জানতে পেরেছে পুলিশ।
সেই কথোপকথন এ রকম—
সুস্মিতা রাহুলকে লেখেন: ওষুধ খাওয়ার কত ক্ষণ পর মৃত্যু হয়, আরও এক বার চেক করে দেখো। তিন ঘণ্টা হয়ে গেল ও (কর্ণ) খাবার খেয়েছে। এখনও বমি করেনি, মলত্যাগ করেনি, কোনও কিছুই না। এমনকি মৃত্যুও হয়নি। এখন কী করা উচিত, কিছু উপায় বলো।
রাহুল: যদি কোনও উপায় মাথায় না আসে, তা হলে বিদ্যুতের শক দাও।
সুস্মিতা: শক দেওয়ার জন্য ওকে (কর্ণ) তো বাঁধতে হবে? কী ভাবে বাঁধব?
রাহুল: টেপ দিয়ে।
সুস্মিতা: খুব ধীরে ধীরে নিশ্বাস নিচ্ছে।
রাহুল: বাকি ওষুধ যা আছে সব একসঙ্গে খাইয়ে দাও।
সুস্মিতা: ওর (কর্ণ) মুখ খুলতে পারছি না। জল ঢালা যাবে, কিন্তু ওষুধ খাওয়ানো যাবে না। তুমি তাড়াতাড়ি চলে এসো। দু’জনে মিলে ওকে (কর্ণ) ওষুধগুলি খাওয়াব।
(যদিও এই কথোপকথনের সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার ডট কম)
আরও পড়ুন:
পুলিশ জানিয়েছে, কর্ণকে খুনের পর শ্বশুরবাড়িতে চলে যান সুস্মিতা। সেখানে গিয়ে খবর দেন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে কর্ণের। এই খবর পেয়ে সুস্মিতার শ্বশুরবাড়ির লোকেরা কর্ণের ফ্ল্যাটে আসেন। তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। পুলিশ জানতে পেরেছে, কর্ণকে খুনের জন্য ইন্টারনেটে সার্চ করেছিলেন সুস্মিতা এবং রাহুল। কোন পদ্ধতিতে সহজে খুন করা যায় এবং সেটিকে স্বাভাবিক মৃত্যু বলে চালিয়ে দেওয়া যায়, সে বিষয়েও সার্চ করেন। তার পরেই কর্ণকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে খুন করার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ। ঘুমের ওষুধ খাওয়ানোর পরেও যখন কর্ণের মৃত্যু হয়নি, তখন তাঁকে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট করে খুন করার পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে ধৃতদের জেরা করে জানতে পেরেছে পুলিশ।