Advertisement
E-Paper

লকডাউনের মধ্যে বাড়ি ফিরতে চান ওঁরা, দিল্লি উপচে গিয়েছে পরিযায়ী শ্রমিকদের ভিড়ে

এ দিন সকাল থেকে দিল্লির আনন্দ বিহার বাস টার্মিনালের সর্বত্র এমনই দৃশ্য চোখে পড়েছে।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০২০ ২১:০৯
বাস টার্মিনালে হাজার হাজার মানুষ। ছবি: এএফপি।

বাস টার্মিনালে হাজার হাজার মানুষ। ছবি: এএফপি।

নোভেল করোনার প্রকোপে দেশ জুড়ে লকডাউন ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। তার জেরে গোটা দেশের রাস্তাঘাট যখন খাঁ খাঁ করছে, ঠিক সেই সময়ে রাজধানী দিল্লিতে উপচে পড়ল পরিযায়ী শ্রমিকদের ভিড়। দিল্লির আনন্দ বিহারে তল্পিতল্পা কাঁধে নিয়ে ৩ কিলোমিটার লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে প্রহর গুনতে দেখা গেল হাজার হাজার মানুষকে। সকলের মুখেই চাপা উদ্বেগ। মুখে মুখে ঘুরছে একটাই প্রশ্ন, এত ঝক্কি সামলে ঠিকঠাক বাড়ি পৌঁছনো যাবে তো? কিন্তু শনিবার সকাল থেকে রাত— তাঁদের সকলের বাড়ি যাওয়ার কোনও ব্যবস্থা হয়নি।

এ দিন সকাল থেকে দিল্লির আনন্দ বিহার বাস টার্মিনালের সর্বত্র এমনই দৃশ্য চোখে পড়েছে। লকডাউনের জেরে গত চার দিনে কার্যত স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে রাজধানী। এমন পরিস্থিতিতে মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছে ভিন্ রাজ্য থেকে দিল্লিতে কাজের জন্য থাকা মানুষদের। লকডাউনের জেরে কাজ তো বন্ধ হয়ে গিয়েছেই, দু’বেলা দু’মুঠো খাবার জোগাড় করাও দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই বাক্স-প্যাঁটরা গুছিয়ে বাড়ি ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন হাজার হাজার মানুষ।

কিন্তু বেরিয়ে পড়লে কী হবে, যাবেন কী ভাবে? ট্রেন বন্ধ হয়ে গিয়েছে আগেই। চলছে হাতে গোনা কিছু বাস। তার ভরসাতেই সকাল থেকে বাস টার্মিনাসে এসে ভিড় জমাতে শুরু করেন হাজার হাজার মানুষ। সন্তান কোলে ভিড় কাটিয়ে এগিয়ে যেতে দেখা যায় মহিলাদেরও। তাঁদের কেউ উত্তরপ্রদেশ, কেউ মধ্যপ্রদেশ, কেউ বা বিহারের বাসিন্দা।

এই দৃশ্যই চোখে পড়েছে আনন্দ বিহারে।

আরও পড়ুন: রাজ্যে আরও ২ জনের করোনা, আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ১৭​

আরও পড়ুন: ৯০০ ছাড়িয়ে গেল দেশে আক্রান্তের সংখ্যা, কেরলে মৃত্যু ১ জনের​

কিন্তু বাস টার্মিনাল পর্যন্ত এসে পৌঁছলেও, বাড়ি ফিরতে পারবেন কি না, সে ব্যাপারে নিশ্চিত নন কেউই। কারণ এ দিন বাস টার্মিনালে যে ১৫টি বাস দাঁড়িয়েছিল, তার প্রত্যেকটিতে বসার আসন ৭০-৭৫। সরকারের তরফে একটি আসনে এক জন যাত্রী বসানোর নির্দেশ থাকলেও, ঠেলাঠেলি করে ১২৫-১৫০ যাত্রী উঠেই যাচ্ছেন তাতে। কিন্তু তাতেও হাজার হাজার মানুষের জায়গা কুলোবে কি? অনিশ্চয়তা প্রকাশ করছেন অনেকেই।

সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বদায়ুঁর বাসিন্দা ২১ বছরের অজয় বলেন, ‘‘একটি পরিবহণ সংস্থায় হেল্পারের কাজ করি আমি। জমা টাকা বলতে কিছুই নেই হাতে। দিল্লিতে এই অবস্থায় থাকা সম্ভব নয়। ঘরভাড়াও দিতে পারব না। তাই গ্রামে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’

মধ্যপ্রদেশের বাসিন্দা কামতা প্রসাদ বলেন, ‘‘একটি নির্মাণস্থলে দিনমজুরের কাজ করি আমি। সরকার লকডাউনের ঘোষণা করার পরই চাকরি চলে গেল। টাকা পয়সা ছাড়া আগামী ১৮ দিন দিল্লিতে থাকা সম্ভব নয়। অনেক কষ্টে ১০০ টাকা জমিয়েছিলাম। ওই টাকাতেই বাড়ি যাচ্ছি।’’ লকডাউনের মধ্যে দরিদ্রসীমার নীচে থাকা মানুষকে সরকার বিনামূল্যে চাল-ডাল দেওয়ার কথা ঘোষণা করলেও, কেউ তাঁদের সাহায্য করতে এগিয়ে আসেনি বলেও অভিযোগ করেন অনেকে।

Coronavirus Lockdown Delhi Anand Vihar Migrant Workers
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy