নীতীশ কুমার। ফাইল চিত্র।
বিহার সরকার যদি পরিযায়ী শ্রমিকদের ট্রেনের ভাড়া দিতে না পারে, তা হলে তাঁরাই সেই ভাড়া মিটিয়ে দেবেন। সোমবার এ কথা ঘোষণা করেন আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব। তার ঠিক কিছু ক্ষণের মধ্যেই নীতীশ কুমার ঘোষণা করলেন, ভাড়াবাবদ প্রত্যেক শ্রমিকের যে টাকা খরচ হবে, তা তাঁদের ফিরিয়ে দেওয়া হবে। শুধু তাই নয়, বাড়িতে ফেরার জন্য প্রত্যেককে ৫০০ টাকা করেও দেওয়া হবে। নীতীশ বলেন, “পড়ুয়াদের যে ভাবে নিখরচায় ফিরিয়ে এনেছিল রাজ্য সরকার, পরিযায়ী শ্রমিকদের ক্ষেত্রেও এই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
লকডাউনের পরই ভিন্ রাজ্যে কাজ করতে যাওয়া শ্রমিকরা আটকে পড়েন। তাঁদের ফেরাতে নীতীশ কুমার কোনও উদ্যোগ নিচ্ছেন না, এমনই অভিযোগ তুলছিল আরজেডি-সহ রাজ্যের বিরোধী দলগুলো। প্রশ্ন উঠছিল, প্রতিবেশী রাজ্য উত্তরপ্রদেশ সরকার যেখানে পরিযায়ী শ্রমিক ও পড়ুয়াদের ফেরানোর জন্য বাসের ব্যবস্থা করেছে, সেখানে বিহার সরকার এ বিষয়ে কোনও পদক্ষেপ করছে না কেন। এ নিয়ে প্রবল সমালোচনার মুখেও পড়তে হয় হয়েছে নীতীশকে। আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব নীতীশ কুমারকে উদ্দেশ করে বলেন, “শ্রমিকদের ফিরিয়ে আনার জন্য ট্রেনের ভাড়াবাবদ যে খরচ হবে তা পুরোটাই দিয়ে দেবে আরজেডি।” বিজেপিকেও আক্রমণ করতে ছাড়েননি তেজস্বী। সুশীল মোদীকে কটাক্ষ করে তাঁর মন্তব্য, “ভাড়াবাববদ কত খরচ হবে সেটা আমাদের জানান। চেক পাঠিয়ে দেব আমরা।”
লকডাউনের জেরে ভিন্ রাজ্যে আটকে পড়েছেন বহু মানুষ। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন পরিযায়ী শ্রমিক, পুণ্যার্থী, পড়ুয়া-সহ অনেকেই। এমন পরিস্থিতিতে ওই সব মানুষগুলিকে ঘরে ফেরানোর জন্য ‘শ্রমিক স্পেশাল’ চালানোর ঘোষণা করেছে রেলমন্ত্রক। ২ মে এ নিয়ে জারি নির্দেশিকা করা হয়। তাতে বলা হয়, রেলের দেওয়া টিকিট রাজ্য প্রশাসন যাত্রীদের হাতে তুলে দেবে। যাত্রীদের থেকে ভাড়া সংগ্রহ করে পুরো টাকা রেলের হাতে তুলে দেবে। একইসঙ্গে স্লিপার শ্রেণির ভাড়ার সঙ্গে শ্রমিক পিছু ৫০ টাকা অতিরিক্ত নেওয়া হবে বলে জানানো হয় ওই নির্দেশিকায়। রেল আরও জানায়, ওই টাকার মধ্যে ৩০ টাকা সুপারফাস্ট চার্জ। বাকি ২০ টাকা অন্যান্য চার্জ। রেলের এই নির্দেশিকা নিয়েই এখন বিতর্ক তুঙ্গে উঠেছে।
আরও পড়ুন: ঘরমুখী পরিযায়ী শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সঙ্ঘর্ষ সুরতে
আরও পড়ুন: সনিয়ার ঘোষণার পরই বিজেপির দাবি, ৮৫ শতাংশ ভাড়া গুনবে রেল
এ দিন সনিয়া গাঁধীও ট্রেনের যাত্রীদের কাছ থেকে ভাড়া নেওয়ার বিষয়টি কেন্দ্র সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছেন। এক বিবৃতিতে সনিয়া বলেন, “বিদেশের মাটিতে আটকে পড়া ভারতীয়দের বিনা পয়সায় বিমানে চড়িয়ে দেশে আনার ক্ষেত্রে সরকার তার দায়িত্ববোধ খুঁজে পায়। গুজরাতে একটি প্রকাশ্য কর্মসূচিতে পরিবহণ ও খাবারের জন্য ১০০ কোটি টাকা খরচ করতে পারে সরকার। প্রধানমন্ত্রীর করোনা ফান্ডে ১৫১ কোটি টাকা দেওয়ার মতো উদারতা দেখাতে পারে রেলমন্ত্রক। অথচ এমন চরম দুর্দশার সময়ে দেশের চালিকাশক্তির গুরুত্বপূর্ণ অংশ ওই শ্রমিকদের কেন ট্রেন ভাড়া দিতে হবে?” একই সঙ্গে তিনি এটাও জানিয়ে দেন, শ্রমিকদের ভাড়ার টাকা মিটিয়ে দেবে কংগ্রেস।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy