অনুমোদন মিলেছিল এক বছর আগেই। এ বার ভারতীয় বায়ুসেনার জন্য পঞ্চম প্রজন্মের স্টেলথ যুদ্ধবিমান (যার পোশাকি নাম, ‘অ্যাডভান্সড মিডিয়াম কমব্যাট এয়ারক্রাফ্ট’ বা এএমসিএ) তৈরির জন্য সরকারি-বেসরকারি সহযোগী সংস্থা বাছাইয়ের কাজে নেমে পড়ল প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। সরকারি সূত্রের খবর, প্রাথমিক ভাবে এ জন্য সাতটি সংস্থাকে বাছাই করা হয়েছে।
‘ভারতীয় প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা’ (ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজ়েশন বা ডিআরডিও)-র সহযোগী হিসেবে প্রাথমিক বাছাই তালিকাতে ঠাঁই পাওয়া সংস্থাগুলির মধ্যে অন্যতম হল রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান ‘হিন্দুস্তান অ্যারোনটিক্স লিমিটেড’ (হ্যাল)। দু’টি ছোট সংস্থার সঙ্গে যৌথ ভাবে বরাতের আবেদন জানিয়েছে তারা। এ ছাড়া ‘টাটা অ্যাডভান্সড সিস্টেমস লিমিটেড’ এবং আদানি ডিফেন্স অ্যান্ড অ্যারোস্পেস দৌড়ে রয়েছে। যৌথ ভাবে আবেদন জানিয়েছে, ‘লারসেন অ্যান্ড টুব্রো’ ও ‘ভারত ইলেকট্রনিক্স লিমিটেড’ এবং ‘গুডলাক ইন্ডিয়া ব্রহ্মস অ্যারোস্পেস তিরুঅনন্তপুরম লিমিটেড’ এবং ‘অ্যাক্সিসকেডস টেকনোলজিস’। পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান নির্মাণের বরাত পাওয়ার জন্য এক সঙ্গে ‘ভারত ফোর্জ লিমিটেড’, বিইএমএল (ভারত আর্থ মুভার্স লিমিটেড) এবং ‘ডেটা প্যাটার্নস’ দরপত্র দেওয়ার আর্জি জানিয়েছে।
ডিআর়ডিও-র অধীনস্থ সংস্থা ‘অ্যারোনটিক্যাল ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি (এডিএ)’-কে দেশীয় প্রযুক্তিতে প্রথম স্টেলথ যুদ্ধবিমান নির্মাণের মূল দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ইতিমধ্যেই। রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা হ্যাল ইতিমধ্যেই দু’ইঞ্জিন বিশিষ্ট ২৫ হাজার কেজির ওই যুদ্ধবিমানের কাঠামো তৈরির দায়িত্ব পেয়েছে। এএমসিএ এমকে১ যুদ্ধবিমানে থাকবে ৯০ কিলোনিউটন শ্রেণির আমেরিকার জিই৪১৪ ইঞ্জিন। অন্য দিকে, আরও উন্নত এএমসিএ এমকে২ যুদ্ধবিমান উড়বে ১১০ কিলোনিউটন ইঞ্জিনে। ডিআরডিএ এববং বিদেশি প্রতিরক্ষা সংস্থার সহযোগিতায় বরাত পাওয়া কোনও একটি কোম্পানি যা তৈরি করবে। প্রসঙ্গত, শত্রুপক্ষের রেডার-নজরদারি ফাঁকি দেওয়ার প্রযুক্তিসম্পন্ন স্টেলথ যুদ্ধবিমান আমেরিকা, রাশিয়া এবং চিনের হাতে রয়েছে।
২০০৭ সালে মস্কোর সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে পঞ্চম প্রজন্মের স্টেলথ যুদ্ধবিমান নির্মাণের প্রাথমিক সমঝোতা হয়েছিল। কিন্তু রূপায়ণের ক্ষেত্রে শ্লথগতির কারণে ২০১৮ সালে সেই প্রকল্প থেকে সরে এসেছিল নরেন্দ্র মোদীর সরকার। ‘মেঘনাদবধ’ কাব্যে রাবণের সেনাপতি ইন্দ্রজিতের কথা লিখেছিলেন মাইকেল মধুসূদন দত্ত। যিনি ছিলেন ‘মেঘনাদ’। মেঘের আড়াল থেকে যুদ্ধ করতেন। তিনি কোথায় আছেন, ঠাহর পেত না বিপক্ষ সেনাবাহিনী। মেঘের অন্তরাল থেকে তিনি শক্তিশেল হেনেছিলেন লক্ষ্মণের বুকে। শত্রুর নজরদারি এড়িয়ে একই ভাবে অন্তরাল থেকে হামলায় দক্ষ স্টেলথ যুদ্ধবিমানও।