গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
বাটলা হাউস সংঘর্ষকাণ্ডে দোষী ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন জঙ্গি আরিজ খান ওরফে জুনেইদের ফাঁসির সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড করল দিল্লি হাই কোর্ট। বৃহস্পতিবার বিচারপতি সিদ্ধার্থ মৃদুল এবং বিচারপতি অমিত শর্মার বেঞ্চ নিম্ন আদালতে মৃত্যুদণ্ডের সাজাপ্রাপ্ত আরিজকে যাবজ্জীবন জেলের শাস্তি দিয়েছে।
২০০৮ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর ধারাবাহিক বিস্ফোরণে কেঁপে উঠেছিল দিল্লি। ওই ঘটনায় নিহত হন ২৬ জন। তার ঠিক ছ’দিন পরে জামিয়ানগর এলাকার বাটলা হাউসে হানা দেয় দিল্লি পুলিশের ‘এনকাউন্টার স্পেশ্যালিস্ট’ মোহনচন্দ শর্মার নেতৃত্বাধীন একটি দল। দিল্লি বিস্ফোরণের সঙ্গে জড়িত এক বা একাধিক জঙ্গি ওই বাড়ির এল-১৮ নম্বর ফ্ল্যাটে লুকিয়ে আছে বলে গোপন সূত্রে খবর পেয়েছিলেন তাঁরা। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে বাটলা হাউসে নিহত হন আতিফ আমিন এবং মহম্মদ সাজিদ নামে দুই যুবক। পুলিশের দাবি, জঙ্গি সংগঠন ইন্ডিয়ান মুজাহিদিনের বিস্ফোরক তৈরির পাণ্ডা ছিলেন আমিন। দিল্লি বিস্ফোরণের পিছনেও তারই হাত ছিল।
ওই ফ্ল্যাট থেকে আরিজ এবং শাহজাদ আহমেদ নামে দু’জন পালিয়ে যান বলে সে সময় দাবি করেছিল পুলিশ। মহম্মদ সইফ বলে আরও এক জন যুবক ওই ফ্ল্যাটে থাকলেও তার সঙ্গে গোটা ঘটনার বা বিস্ফোরণের কোনও যোগ ছিল না বলে আদালতে জানিয়েছিলেন সরকারপক্ষের আইনজীবী। জঙ্গিদের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হন মোহনচন্দ শর্মাও। আহত হন বলবন্ত নামে এক হেড কনস্টেবল। সব অভিযুক্তই ছিলেন উত্তরপ্রদেশের আজমগড়ের বাসিন্দা।
ঘটনার পর থেকেই পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন আরিজ। দিল্লি পুলিশ এবং জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা তাঁর সন্ধান দিতে পারলে ১০ লক্ষ এবং ৫ লক্ষ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছিল। ২০১০-এর ২৮ এপ্রিল আরিজ খান, শাহজাদ আহমদ, আতিফ আমিন এবং মহম্মদ সাজিদের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করে দিল্লি পুলিশ। সেই চার্জশিটে পুলিশ অভিযোগ করে, ২০০৭ এবং ’০৮ সালের মধ্যে দিল্লি-সহ দেশের ৬টি শহরে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিলেন তাঁরা। ২০১৮ সালে দিল্লি পুলিশের বিশেষ সেল আরিজকে গ্রেফতার করে। তার আগে আজমগড়েরই একটি গ্রাম থেকে শাহজাদকে গ্রেফতার করা হয়।
২০২১ সালের ১৫ মার্চ দিল্লির অতিরিক্তি সেশন বিচারক সন্দীপ যাদব, ফাঁসির পাশাপাশি আরিজের ১১ লক্ষ টাকা জরিমানাও করেছিলেন। বিচারক জানান, জরিমানার ১০ লক্ষ টাকা দ্রুত পুলিশ আধিকারিক মোহনচাঁদ শর্মার পরিবারের হাতে তুলে দিতে হবে। ওই রায়ের বিরুদ্ধে দিল্লি হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন আরিজ। প্রসঙ্গত, বাটলা হাউসের ঘটনায় দিল্লি পুলিশের দাবির সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন নিহত এবং ধৃত যুবকদের পরিবার। কিন্তু নিম্ন আদালতের পাশাপাশি দিল্লি হাই কোর্টও তা খারিজ করে দেয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy