এক নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগে ধৃত তরুণকে বেকসুর খালাসের নির্দেশ দিল দিল্লি হাই কোর্ট। আদালতের পর্যবেক্ষণ, ‘নির্যাতিত’ নাবালিকার সঙ্গে প্রণয়ঘটিত সম্পর্ক ছিল অভিযুক্তের। তাই তাঁদের শারীরিক সম্পর্ককে ‘ধর্ষণ’ বলে গ্রাহ্য করা হচ্ছে না। বরং, দু’জন তাঁদের ইচ্ছায় ঘনিষ্ঠ হয়েছিলেন।
সংশ্লিষ্ট মামলাটি ২০১৪ সালের। এক ১৭ বছরের কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়ের হয়েছিল ১৯ বছরের এক তরুণের বিরুদ্ধে। অভিযোগ পেয়ে পদক্ষেপ করে পুলিশ। গ্রেফতার করা হয় তরুণকে। মামলা গড়ায় আদালতে। সম্প্রতি দিল্লি হাই কোর্টে ওই মামলাটি ওঠে বিচারপতি জসমীত সিংহের এজলাসে। দুই পক্ষের আইনজীবীর সওয়াল-জবাবের পর বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, এই মামলায় আদালত অভিযুক্তকে শাস্তি দিলে সেটা হবে আইনের বিকৃতি। ঠিকঠাক বিচার করা হবে না।
বিচারপতি সিংহ বলেন, ‘‘যে সময়ে ঘটনাটি ঘটেছে, তখন মামলাকারীর বয়স মাত্র ১৭ বছর, অভিযুক্ত ১৯ বছরের। তাঁরা পূর্বপরিচিত ছিলেন। ঘনিষ্ঠও ছিলেন। এটা কৈশোরের প্রেমের ঘটনা। দু’পক্ষের সম্মতিতে শারীরিক সম্পর্ক হয়েছে। তার পরে মামলাকারীর অন্য কিছু মনে হয়েছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘সব দিক বিবেচনা করে আদালত মনে করছে, অভিযুক্তকে পকসো মামলায় শাস্তি দিলে সেটা হবে বিচারব্যবস্থার ব্যর্থতা।’’ আদালতের পর্যবেক্ষণ, মামলাকারী প্রাপ্তবয়স্ক হলে এই মামলা কত দূর গড়াত বা আদৌ গড়াত কি না, সেটা ভেবে দেখার বিষয়।
আরও পড়ুন:
বস্তুত, ২০১৪ সালে ‘নির্যাতিত’ নাবালিকার বাবা নিখোঁজ ডায়েরি করেছিলেন থানায়। পরে তাঁর মেয়েকে পাওয়া যায় গাজ়িয়াবাদে। মেয়েটি জানায়, এক জনের সঙ্গে তার মন্দিরে বিয়ে হয়েছে। তারা একটি বাড়ি ভাড়া করে বসবাস করছিল। কিন্তু তরুণের বিরুদ্ধে মেয়েকে অপহরণ এবং ধর্ষণের অভিযোগ করেন বাবা। অভিযোগের প্রেক্ষিতে গ্রেফতার হন তরুণ। নিম্ন আদালতের নির্দেশে পকসো মামলায় তাঁর সাত বছরের জেল হয়। হাই কোর্টে সেই মামলার শুনানিতে বিচারপতি বলেন, ‘‘ভালবাসা একটি মৌলিক মানবিক অভিজ্ঞতা। কিশোর-কিশোরীর মানসিক সম্পর্কের অধিকার রয়েছে। আইনেরও উচিত এই সম্পর্কগুলিকে স্বীকৃতি দেওয়া এবং সম্মান করা। যদি কারও অনিচ্ছায় কোনও ঘটনা হয়, সেটা ভিন্ন বিষয়।’’ এর পরেই অভিযুক্তকে বেকসুর খালাসের নির্দেশ দেয় আদালত।