ফি নিয়ে বিবাদের সূত্রে সংশ্লিষ্ট পড়ুয়াদের শিক্ষাঙ্গনে ঢোকা রুখতে ফটকে বাউন্সার বসানোয় দ্বারকার একটি বেসরকারি স্কুলের সমালোচনা করল দিল্লি হাই কোর্ট। বৃহস্পতিবার বিচারপতি সচিন দত্তের পর্যবেক্ষণ, এটা প্রকাশ্য লাঞ্ছনা এবং হুমকির পর্যায়ে পড়ে এবং এতে অল্প বয়সি পড়ুয়াদের মানসিক হেনস্থা ও আত্মবিশ্বাস নষ্ট হতে পারে।
বিচারপতি দত্ত বলেছেন, “শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এমন নিন্দনীয় আচরণের কোনও জায়গা নেই। এতে শুধু শিশুর মর্যাদা অবজ্ঞাই নয়, সমাজে স্কুলের বুনিয়াদি ভূমিকাটাই ঠিক ভাবে বুঝতে না পারাও স্পষ্ট।” তাঁর পর্যবেক্ষণ, এই রকমের জোর খাটানোয় ‘ভয়, অপমান আর দূরে ঠেলে দেওয়া’র বাতাবরণ তৈরি হয়েছে এবং সেটা একটা স্কুলের মূলগত নীতির পরিপন্থী।
কোর্টের পর্যবেক্ষণ, পরিষেবা দেওয়ার জন্য ফি নিলেও পুরোদস্তুর বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে স্কুলকে এক করা যায় না। বিচারপতি বলেন, “সর্বোচ্চ লাভ করা কোনও স্কুলের চালিকাশক্তি এবং বৈশিষ্ট্য হতেপারে না।”
বর্ধিত ফি না দেওয়ার জন্য ৩১ জন পড়ুয়াকে দ্বারকার দিল্লি হাই স্কুল কর্তৃপক্ষ গত ৯ মে বহিষ্কার করেন। গত ১৬ মে দিল্লি হাই কোর্টের একই ধরনের বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছিল, বিষয়টির নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বিক্ষুব্ধ অভিভাবকেরা ২০২৫-’২৬ শিক্ষাবর্ষের জন্য বর্ধিত ফি-এর অর্ধেক জমা করলে তাঁদের সন্তানদের স্কুলে ফেরানো হবে।
কিন্তু হাই কোর্টে করা আবেদনে অভিভাবকদের অভিযোগ, আদালত পড়ুয়াদের ক্লাসে বসতে না দেওয়া অথবা ফি না দেওয়া পড়ুয়াদের বেছে বেছে আলাদা না করার নির্দেশ দিলেও স্কুল কর্তৃপক্ষের নিয়োগ করা বাউন্সারেরা ওই পড়ুয়াদের দুর্ব্যবহার করছেন আর হুমকি দিচ্ছেন। এমনকি, বাড়ি ফেরত পাঠানোর আগে জোর করে ঘণ্টা দুয়েক তাদের বসিয়ে রাখা হচ্ছে স্কুলবাসে।
ওই সমস্ত পড়ুয়াকে আবার ক্লাসে ফেরানো হয়েছে বলে স্কুলের তরফে কোর্টে জানানোয় শেষ পর্যন্ত মামলাটি মুলতুবি করেছেন বিচারপতি দত্ত। তিনি জানান, ওই অভিভাবকেরা ফি জমার ব্যাপারে কোর্টের ১৬ মে-র নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। বিচারপতির নির্দেশ, ভবিষ্যতে ফি বৃদ্ধি করতে চাইলে স্কুলকে সেটা আগে থেকে অভিভাবকদের জানাতে হবে, বিশেষ করে বলে দিতে হবে ফি জমা না-করলে স্কুলের খাতা থেকে নাম কাটা যাবে কবে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)