একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে রাজধানীতে ক্ষমতায় ফিরেছে বিজেপি। তার পরেই নথিপত্র নিয়ে সতর্ক দিল্লি সরকারের সচিবালয়। শনিবার রাতেই সেখানে নতুন নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। সচিবালয় থেকে কোনও ফাইল যাতে সরানো না-হয়, অনুমতি ছাড়া কোনও নথিতে যেন কেউ হাত না-দেন, সেই নির্দেশ এসেছে। পাশাপাশি সচিবালয়ে প্রবেশের ক্ষেত্রেও কড়াকড়ি করা হয়েছে। রবিবারই দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন আতিশী। ভেঙে দেওয়া হয়েছে বিধানসভা।
দিল্লি সরকারের সচিবালয়ের জেনারেল অ্যাডমিনস্ট্রেশন ডিপার্টমেন্ট (জিএডি) যে নির্দেশিকাটি জারি করেছে, তাতে বলা হয়েছে, দফতর থেকে কোনও ফাইল, নথি, কাগজ অনুমতি ছাড়া বাইরে বার করা যাবে না। নথি অন্যত্র নিয়ে যেতে হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে। চাইলেই যে কেউ সচিবালয়ে প্রবেশ করতে পারবেন না। নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার উদ্দেশেই এই নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে, জানিয়েছে জিএডি।
আরও পড়ুন:
জিএডির নির্দেশিকা অনুযায়ী, ‘‘কোনও ফাইল বা নথি, কম্পিউটার, হার্ডওয়্যার সচিবালয়ের ক্যাম্পাসের বাইরে নিয়ে যাওয়া যাবে না। তা করতে হলে জিএডি-র অনুমতি নিতে হবে। নথিপত্র রক্ষা করতে এবং সচিবালয়ের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে এই সিদ্ধান্ত।’’ সচিবালয়ের সব দফতরের ক্ষেত্রেই এই নির্দেশিকা প্রযোজ্য।
নির্দেশিকায় আরও বলা হয়েছে, সচিবালয়ে কেউ প্রবেশ করতে চাইলে আগে তাঁর পরিচয় যাচাই করা হবে। জানতে চাওয়া হবে সচিবালয়ে যেতে চাওয়ার সঠিক কারণ। সচিবালয়ের সর্বত্র ২৪ ঘণ্টা সিসি ক্যামেরার নজরদারি থাকবে। কোনও সিসি ক্যামেরা যাতে অচল না-হয়ে থাকে, তা-ও নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।
দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশিত হয়েছে শনিবার। ৭০টি আসনের মধ্যে ৪৮টিতে জয়ী হয়েছে বিজেপি। আপ পেয়েছে মাত্র ২২টি আসন। এর ফলে দীর্ঘ ২৭ বছর পর রাজধানীতে ক্ষমতায় ফিরল বিজেপি। দিল্লির পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন, এখনও তা স্পষ্ট নয়। সূত্রের খবর, প্রধানমন্ত্রী বিদেশ সফর থেকে ফিরলে নতুন মুখ্যমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করা হবে।
আপ সরকারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিধানসভা নির্বাচনের আগে ঢালাও প্রচার করেছিল বিজেপি। জয়ের পর শনিবারও প্রধানমন্ত্রী জানান, দিল্লি বিধানসভার প্রথম অধিবেশনেই ক্যাগ রিপোর্ট পেশ করা হবে। অর্থাৎ, আপ সরকারের দুর্নীতির বিষয়টিকে যে সহজে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে না, তার ইঙ্গিত শনিবারই দিয়ে রেখেছেন মোদী। দিল্লির সচিবালয়ও তাই সতর্ক। নতুন সরকার গঠিত হলে পুরনো নথিপত্রের খোঁজ করা হতে পারে জেনেই সচিবালয়ে বাড়তি কড়াকড়ি, মনে করছেন অনেকে।
আরও পড়ুন:
রবিবার সকালে বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী আতিশী মার্লেনা ইস্তফা দিয়েছেন। উপরাজ্যপাল ভিকে সাক্সেনার হাতে ইস্তফাপত্র তুলে দিয়েছেন তিনি। তবে যত দিন পর্যন্ত দিল্লিতে নতুন মুখ্যমন্ত্রী শপথ না-নিচ্ছেন, তত দিন মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলাবেন আতিশীই।
প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা আপ প্রধান অরবিন্দ কেজরীওয়ালের বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল। আবগারী দুর্নীতি মামলায় তিনি জেলও খেটেছেন কয়েক মাস। গত সেপ্টেম্বরে কেজরী ইস্তফা দিলে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেন আতিশী। মাত্র সাড়ে চার মাস পদে থাকলেন তিনি। দুর্নীতি প্রসঙ্গে কেজরী-সহ আপের নেতাদের প্রথম থেকেই চেপে ধরেছিল বিজেপি।