আফগান সেনা অফিসারদের অধিকাংশই এখন আত্মগোপন করেছেন। ছবি: সংগৃহীত।
ভারতে প্রশিক্ষিত সেনা অফিসার তিনি। চেন্নাইয়ের ‘অফিসার্স ট্রেনিং অ্যাকাডেমি’ (ওটিএ)-র ‘পাসআউট’ আফগান সেনার অফিসার। কিন্তু যে সেনার জন্য তিনি আইএমএ-তে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন, সেই আফগান ন্যাশনাল আর্মি এখন অস্তিত্বহীন। তালিবানের হাত থেকে বাঁচতে আত্মগোপন করতে হয়েছে তাঁকে। এই পরিস্থিতিতে ওটিএ-র এক ভারতীয় ব্যাচমেটের কাছে সাহায্য চেয়ে বার্তা পাঠিয়েছেন আফগান সেনার ওই অফিসার।
গত কয়েক মাসে এমন অনেক বার্তা এসেছে ভারতীয় স্থল, নৌ এবং বায়ুসেনার অফিসারদের কাছে। প্রেরক, প্রশিক্ষণ শিবিরের সতীর্থেরা। তাঁদের কেউ এখনও আফগানিস্তানের মাটিতেই আত্মগোপন করে রয়েছেন। কেউ প্রাণের দায়ে দেশ ছেড়েছেন। সকলেরই বার্তা একটাই— কোনও ভাবে যদি ভারতের মাটিতে পুনর্বাসনের সুযোগ পাওয়া যায়। যায়। সেনা অ্যাকাডেমিগুলির প্রশিক্ষক এবং উচ্চপদস্থ আধিকারিকেরাও এমন আবেদন পেয়েছেন।
দেহরাদূনের ইন্ডিয়ান মিলিটারি অ্যাকাডেমি (আইএমএ)-তে প্রশিক্ষণ নেওয়া এক সেনা অফিসার জানিয়েছেন, তাঁর আফগান ‘ব্যাচমেট’ ভারতে আশ্রয় চেয়ে একাধিক বার তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘আসলে পুরো বিষয়টি খুব স্পর্শকাতর। এর সঙ্গে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিষয়টিও জড়িত। তাই চাইলেও ব্যক্তিগত ভাবে কিছু করা সম্ভব হয়নি আমার পক্ষে। খুব খারাপ লাগছে ওঁর কথা ভেবে।’’
ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর তিন শাখার প্রশিক্ষণ শিবিরে দীর্ঘ দিন ধরেই বন্ধু রাষ্ট্রের সেনা অফিসারদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে। গত জুনেই আঠারো মাসের প্রশিক্ষণের শেষে আইএমএ থেকে ৮৪ জন বিদেশি ক্যাডেট পাস করেছিলেন। তার মধ্যে আফগানিস্তানেরই ছিলেন ৪৩ জন। সূত্রের খবর, গত দু’দশকে আফগান সেনার প্রায় ২,০০০ অফিসার ভারতের বিভিন্ন সেনা অ্যাকাডেমিতে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। তাঁদের অধিকাংশই তালিবান জনানায় আত্মগোপন করেছেন। অগস্টে কাবুলের পতনের পরে হাতে গোনা কয়েক জন কয়েক জন ভারতেও আশ্রয় পেয়েছেন।
ন্যূনতম প্রতিরোধ ছাড়াই যে ভাবে কাবুল, হেরাট, গজনি, জালালাবাদের মতো এলাকা তালিবান দখল করছিল, তা নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে আফগান সেনার ওই অফিসারদের। তাঁদের অভিযোগ, আশরফ গনি সরকারের সিদ্ধান্তহীনতা এবং দুর্বলতার জন্যই এত সহজে আফগানিস্তান দখল করেছে তালিবান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy