দিল্লি বিস্ফোরণকাণ্ডে নাম জড়িয়ে যাওয়ায় এ বার আল ফালাহ্ বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক লেনদেনের বিষয়ে তদন্ত শুরু করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে বেআইনি আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত আইনে (পিএমএলএ) মামলা রুজু করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটি। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে জড়িত দিল্লি এবং ফরিদাবাদের ২৫টি ঠিকানায় তল্লাশি চালাচ্ছে ইডি। প্রসঙ্গত, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে দু’টি পৃথক এফআইআর দায়ের করেছিল দিল্লি পুলিশ। সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ারম্যান জাভেদ আহমেদ সিদ্দিকিকেও দু’টি পৃথক এফআইআরের জন্য তলব করা হয়।
পুলিশ সূত্রে খবর, বিস্ফোরণকাণ্ডের তদন্তে সিদ্দিকির বয়ান নেওয়া অত্যন্ত জরুরি বলেই মনে করা হচ্ছে। শুধু তা-ই নয়, তদন্তকারী সূত্রের খবর, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কিছু কাজকর্মেরও হদিস মিলেছে, যেগুলি সন্দেহের আওতায় পড়ে। ঘটনাচক্রে, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে জড়িত ছিলেন বিস্ফোরণকাণ্ডে অভিযুক্তেরা। চিকিৎসক উমর-উন-নবি, চিকিৎসক মুজ়াম্মিল গনাই, চিকিৎসক শাহীন সইদ এবং চিকিৎসক আদিল-সহ আরও কয়েক জন। আর তার পর থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজকর্ম নিয়ে একটা সন্দেহ তৈরি হয়েছিল তদন্তকারীদের মনে। তার পর থেকেই আল ফালাহ্তে তল্লাশি অভিযান জারি রেখেছে তদন্তকারী সংস্থাগুলি। এ বার বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক লেনদেন নিয়ে তদন্ত শুরু করল ইডি।
তদন্তকারী এক সূত্রের খবর, জঙ্গি কার্যকলাপে বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক তহবিল কাজে লেগেছিল কি না, কিংবা জঙ্গিদের আর্থিক মদত করা হয়েছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে। প্রসঙ্গত, চিকিৎসক শাহীন সইদের বেশ কয়েকটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের হদিস মিলেছে বলে সূত্রের খবর। সেই অ্যাকাউন্টে মোটা অঙ্কের আর্থিক লেনদেনের হদিস পাওয়া গিয়েছে বলে সূত্রের দাবি। সেই টাকা কোথা থেকে এসেছে, কে বা কারা দিয়েছেন, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্তের প্রতিটি সূত্র ধরে এগোনোর সময় আল ফালাহে্র আর্থিক লেনদেনকেও তদন্তের আওতায় নিয়ে আসা হয়। আর তার পরই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে আর্থিক তছরুপের স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
কেন্দ্রের সবুজ সঙ্কেত পেয়েই আল ফালাহে্র বিরুদ্ধে তদন্তে নামে ইডি। সূত্রের খবর, বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরেন্সিক অডিটেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দিল্লি পুলিশের আর্থিক দুর্নীতিদমন শাখাও আলাদা ভাবে তদন্ত শুরু করেছে। বিস্ফোরণ নিয়ে তদন্ত করছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)। বিস্ফোরণকাণ্ডে আল ফালাহে্র নাম উঠে আসায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে সম্প্রতি ইউজিসি এবং ন্যাক আলাদা ভাবে অভিযোগ দায়ের করে। অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়ান ইউনিভার্সিটিস (এআইইউ) আল ফালাহে্র সদস্যপদ বাতিল করেছে।