E-Paper

আধার-ভোটারে নারাজ কেন কমিশন, প্রশ্ন সুপ্রিম কোর্টে

নির্বাচন কমিশন বিহারের ভোটার তালিকা পরিমার্জনে নেমে যোগ্য ভোটার যাচাই করার জন্য যে ১১টি নথির তালিকা দিয়েছিল, তাতে আধার, ভোটার কার্ড, রেশন কার্ড ছিল না।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৫ ০৯:০৩

—প্রতীকী চিত্র।

সুপ্রিম কোর্টের ‘পরামর্শ’ অগ্রাহ্য করে নির্বাচন কমিশন ভোটার তালিকা সংশোধনের সময় আধার, ভোটার কার্ড বিবেচনা থেকে বাদ দিতে পারে না। আগামী সোমবার সুপ্রিম কোর্টে বিহারে ভোটার তালিকায় বিশেষ পরিমার্জনের বিরুদ্ধে মামলাকারীরা এই যুক্তি দিতে চলেছেন।

নির্বাচন কমিশন বিহারের ভোটার তালিকা পরিমার্জনে নেমে যোগ্য ভোটার যাচাই করার জন্য যে ১১টি নথির তালিকা দিয়েছিল, তাতে আধার, ভোটার কার্ড, রেশন কার্ড ছিল না। সুপ্রিম কোর্টে ভোটার তালিকা সংশোধনের বিরুদ্ধে মামলার শুনানির পরে বিচারপতি সুধাংশু গুলিয়া ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির বেঞ্চ নির্বাচন কমিশনকে আধার, ভোটার কার্ড, রেশন কার্ড বিবেচনা করার কথা ভাবতে বলেছিল। কিন্তু নির্বাচন কমিশন সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা দিয়ে জানিয়েছে, আধার, রেশন কার্ড, ভোটার কার্ড বিবেচনা করতে কমিশন রাজি নয়।

এ বার বিহারের ভোটার তালিকা সংশোধনের বিরুদ্ধে প্রথম মামলাকারী সংগঠন এডিআর (অ্যাসোসিয়েশন অব ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মস) সুপ্রিম কোর্টে পাল্টা হলফনামা দিয়ে বলেছে, আধার বাদ দেওয়া অযৌক্তিক। এর ফলে বহু মানুষের ভোটাধিকার চলে যাবে। তা ছাড়া নির্বাচন কমিশন ভোটার হিসেবে যোগ্যতা প্রমাণের জন্য নথির তালিকা থেকে আধার, রেশন কার্ড বাদ দেওয়ার পক্ষে কোনও যুক্তি দেখাতে পারেনি। শনিবার মামলাকারীদের অন্যতম আইনজীবী অভিষেক মনু সিজ্যভি বলেন, “সুপ্রিম কোর্ট পরামর্শ দেওয়ার জন্য তৈরি হয়নি। আদেশ দেওয়ার জন্য তৈরি হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট নির্বাচন কমিশনকে বলেছিল, আধার, ভোটার কার্ড, রেশন কার্ড বিবেচনা করার কথা ভাবতে। তা কী ভাবে নির্বাচন কমিশন অগ্রাহ্য করতে পারে, এমন অনেক যুক্তি আমাদের কাছে রয়েছে।” প্রসঙ্গত, শুক্রবারই বিহারে ভোটার তালিকা বিশেষ সংশোধনে প্রথম দফায় গণনা কর্ম জমা দেওয়ার সময় শেষ হয়েছে। তাতে ভোটার তালিকা থেকে ৬৫ লক্ষের বেশি নাম বাদ পড়ার আশল্প তৈরি হয়েছে।

ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ করতে গিয়ে নির্বাচন কমিশন নাগরিকত্ব যাচাই করতে পারে কি না, তা নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট প্রশ্ন তুলেছিল। নির্বাচন কমিশন হলফনামায় যুক্তি দিয়েছিল, কোনও ভোটার নাগরিকত্ব হওয়ার শর্ত পূরণ করছে কি না, তা যাচাই করার সাংবিধানিক ক্ষমতা তাদের রয়েছে। তবে ভোটার তালিকা থেকে কারও নাম বাদ যাওয়ার অর্থ তাঁর নাগরিকত্ব চলে যাওয়া নয়।

কমিশনের যুক্তি ছিল, আধার দিয়ে নাগরিকত্ব যাচাই করা যায় না। তবে আধার অন্য নথির সঙ্গে ব্যবহার করা যেতে পারে। কমিশনের গণনাপত্রেই ভোটার কার্ডের নম্বর ও আধার নম্বর লেখার ব্যবস্থা রয়েছে। কারও কাছে ভোটার কার্ড থাকার অর্থ সে এখন ভোটার তালিকায় রয়েছে। কিন্তু তা দিয়ে ভবিষ্যতেও ভোটার তালিকায় থাকা নিশ্চিত হয় না। অনেকের কাছে ভুরো রেশন কার্ড রয়েছে বলে এর বিরুদ্ধে কমিশন যুক্তি দিয়েছিল।

এডিআর সুপ্রিম কোর্টে পাল্টা যুক্তি দিয়েছে, সাধারণ মানুষ আধার দেখিয়ে (স্থায়ী বসবাসের নথি) পার্মামেন্ট রেসিডেন্স সার্টিফিকেট জোগাড় করছেন। আধারের মাধ্যমে তফসিলি জাতি, জনজাতি, ওবিসি শংসাপত্র মিলছে। পাসপোর্ট মিলছে। সে সব নথি নির্বাচন কমিশন গ্রহণ করছে। কিন্তু আধার গ্রহণ করছে না। তথ্যের অধিকার কর্মী অঞ্জলির ভরদ্বাজের অভিযোগ, নির্বাচন কমিশনের হলফনামায় বলা হয়েছে, ‘স্বাধীন ভাবে মূল্যায়ন’-এর পরে দেশ জুড়ে ভোটার তালিকায় বিশেষ পরিমার্জনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই স্বাধীন ভাবে মূল্যায়ন কী? তা কেন প্রকাশ করা হয়নি? এটা কি গোপন নথি?

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Aadhaar Cards Voter Card

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy