বেলজিয়ামের আদালতে অবশেষে শুরু হতে চলেছে পিএনবি কেলেঙ্কারির অন্যতম অভিযুক্ত মেহুল চোকসীর প্রত্যর্পণ প্রক্রিয়া। সরকারি সূত্র উল্লেখ করে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা পিটিআই। চোকসীর বিরুদ্ধে ১৩ হাজার কোটি টাকার আর্থিক তছরুপের অভিযোগ রয়েছে। দীর্ঘ দিন ধরে তিনি দেশছাড়া। সম্প্রতি চোকসীকে দেশে ফেরানো এবং আইনের আওতায় আনার জন্য ভারত সরকারের তরফে বেলজিয়ামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তার পর তাঁকে গ্রেফতার করে সে দেশের পুলিশ। এ বার শুরু হতে চলেছে প্রত্যর্পণ প্রক্রিয়া।
পিটিআই জানিয়েছে, আগামী সোমবার বেলজিয়ামের আদালতে চোকসীকে দেশে ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে। এই সংক্রান্ত শুনানি হবে সিবিআই এবং ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের সমর্থনে। বেলজিয়ামের আদালতে সিবিআই আধিকারিকেরাও উপস্থিত থাকবেন। তাঁরা বক্তব্যের সপক্ষে একাধিক নথি জমা দিতে পারেন। ইতিমধ্যে বেলজিয়ান কর্তৃপক্ষের হাতে চার্জশিট-সহ অনেক নথি তুলে দেওয়া হয়েছে। চোকসীর বিরুদ্ধে কী কী অভিযোগ, ভারতীয় আইন অনুযায়ী কোন কোন ধারায় তাঁর বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে, তা সবিস্তার জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন:
ভারতের অনুরোধে বেলজিয়ামে চোকসীকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তাঁকে ভারতে আনা হলে নিরাপত্তা কেমন থাকবে, স্বাস্থ্যের যত্ন সম্ভব হবে কি না, তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন চোকসীর আইনজীবী। ভারত সরকার জানিয়েছে, জেলে তাঁর জন্য বিশেষ বিছানার ব্যবস্থা থাকবে। দিনরাত চিকিৎসকেরা তাঁকে নজরে রাখবেন। পরিচ্ছন্ন রাখা হবে জেল চত্বর। ফলে কোনও সমস্যা হবে না।
ক্যারিবিয়ান দ্বীপরাষ্ট্র অ্যান্টিগা ও বারবুডায় ছিলেন মেহুল। তাঁর সেখানকার নাগরিকত্ব রয়েছে। সেখানে থাকাকালীন তাঁকে ভারতে ফেরানো সম্ভব হয়নি। ২০২৩ সালে চিকিৎসার প্রয়োজনে ওই দ্বীপরাষ্ট্র ছেড়ে তিনি বেলজিয়ামে আসেন। তাঁর স্ত্রী বেলজিয়ামের নাগরিক হওয়ায় এ ক্ষেত্রে তাঁর সমস্যা হয়নি। ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে সিবিআই জানতে পারে, চোকসী বেলজিয়ামে রয়েছেন। এর পরেই সে দেশের সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয় এবং প্রত্যর্পণের অনুরোধ জানানো হয়। বেলজিয়ামের সঙ্গে এই সংক্রান্ত একটি চুক্তি ২০২০ সালেই করে রেখেছিল ভারত।
ভারতের অনুরোধের ভিত্তিতে ২০২৫ সালের এপ্রিল মাসে চোকসীকে গ্রেফতার করা হয়। বেলজিয়ামের একাধিক আদালত তাঁর জামিনের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে ভারতের প্রধান হাতিয়ার হল, এখনও চোকসী ভারতের নাগরিক। অ্যান্টিগা ও বারবুডার নাগরিকত্ব পেলেও তাঁর ভারতীয় নাগরিকত্ব এখনও বাতিল হয়নি। পিএনবি কেলেঙ্কারি প্রকাশ্যে আসার পর ২০১৮ সালের ৪ জানুয়ারি চোকসী ভারত ছেড়ে গিয়েছিলেন।