Advertisement
E-Paper

লাগাতার ধর্ষণ, গর্ভপাত! মুম্বইয়ের পুলিশকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উজবেক মহিলার

মুম্বই পুলিশের সাসেপেন্ড হওয়া ইনস্পেক্টর ভানুদাস যাদবের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার মহারাষ্ট্রের চেম্বুর থানায় এই অভিযোগ দায়ের করেছেন উজবেক মহিলা।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০১৯ ১৭:১৮
অলঙ্করণ: তিয়াসা দাস।

অলঙ্করণ: তিয়াসা দাস।

অন্য একটি অপরাধে সাসপেন্ড হওয়া এক পুলিশ ইনস্পেক্টরের বিরুদ্ধে বন্দুকের মুখে লাগাতার ধর্ষণ, মারধর, দু’বার গর্ভপাতে বাধ্য করানো ও পুত্রসন্তানকে কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ জানালেন এক মহিলা। করা হয়েছে দু’টি খুনের অভিযোগও। অভিনয়ের শখে ওই মহিলা উজবেকিস্তানে তাঁর ভিটেমাটি ছেড়ে এসেছিলেন মুম্বইয়ে।

মুম্বই পুলিশের সাসেপেন্ড হওয়া ইনস্পেক্টর ভানুদাস যাদবের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার মহারাষ্ট্রের চেম্বুর থানায় এই অভিযোগ দায়ের করেছেন উজবেক মহিলা। উজবেক মহিলার অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ এফআইআর নিয়েছে শুক্রবার। অভিযুক্ত এখনও ধরা পড়েনি। পুলিশ জানিয়েছে, পুণে পুলিশের সহায়তা নিয়ে তদন্ত চলছে।

অধুনা নবি মুম্বইয়ের বাসিন্দা অভিযোগকারিণী জানিয়েছেন, অভিনয়ের শখে উজবেকিস্তান থেকে তিনি এসেছিলেন মুম্বইয়ে। ২০০৪ সালের ডিসেম্বরে। কিন্তু ৬ মাসের মধ্যে তিনি কোনও বলিউডি ফিল্মে কাজ পাননি। অথচ ওই সময় তাঁর পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। সেই সময়ই ওই উজবেক মহিলার সঙ্গে পরিচয় হয় ভানুদাসের। মুম্বইয়ের অভিবাসন দফতরে তখন কাজ করতেন ভানুদাস। তিনি মহিলার কাছ থেকে পাসপোর্টটি নিয়ে তাঁকে সাহায্য করার আশ্বাস দেন। কিন্তু ২০০৫ সালের গোড়ার দিকে তাঁর মোবাইল ফোনটি হারিয়ে ফেলেছিলেন বলে অভিযোগকারিণী তখন আর ভানুদাসের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি। পরে অবশ্য তিনি ভানুদাসের নম্বর খুঁজে পান। কিন্তু তত দিনে ভানুদাস বদলি গিয়ে গিয়েছেন মুম্বই পুলিশের মাদকবিরোধী বিভাগে।

চেম্বুর থানায় দায়ের করা এফআইআর-এ অভিযোগকারিণী লিখেছেন, ‘‘ভানুদাস আমাকে বলেন, পাসপোর্টের মেয়াদ ফুরনোর পর অনেকটা সময় বয়ে গিয়েছে। তাই নতুন পাসপোর্ট করানো মুশকিল। তার কিছু দিনের মধ্যেই ভানুদাস ভুয়ো নথিপত্র জমা দিয়ে আমার নামে একটি পাসপোর্ট করিয়ে দেন। তার পর ভানুদাস আমাকে চেম্বুরের একটি হোটেলে ডেকে পাঠান। সেখানে আমাকে ভদ্‌কা খাইয়ে আমার উপর ঝাঁপিয়ে পড়েন ভানুদাস। তার পর জেলে পোরার ভয় দেখিয়ে ভানুদাস বহু বার আমাকে ধর্ষণ করেন। ওই সময় আমি গর্ভবতী হয়ে পড়লে ভানুদাসকে বলি আমাকে বিয়ে করতে। কিন্তু ভানুদাস রাজি হয়নি। জানায়, তাঁর স্ত্রী ও দুই মেয়ে রয়েছেন।’’

আরও পড়ুন- সম্মোহন করে শ্লীলতাহানি! অভিযোগ ডেলিভারি বয়ের বিরুদ্ধে​

আরও পড়ুন- ধর্ষণের অভিযোগ মালদহে​

চেম্বুর পুলিশ জানাচ্ছে, এই ভাবেই ওই মহিলার উপর অত্যাচার চলে ২০১০ সাল পর্যন্ত। সেই সময় গর্ভবতী হয়ে পড়ায় বন্দুকের মুখে মহিলাকে গর্ভপাত করাতে বাধ্য করেন ভানুদাস। সেই ঘটনার কথা জানতে পেরে ভানুদাসের সঙ্গে তাঁর বৈধ স্ত্রীর প্রচণ্ড ঝগড়া হয়। ভানুদাসের বিরুদ্ধে তখন থানায় অভিযোগ জানান তাঁর স্ত্রী। এর পর ভানুদাস ওই উজবেক মহিলাকে পুণেয় পাঠিয়ে দেয়।

তার বছর খানেক বাদে পুণের এক সব্জি বাজারে আচমকা উজবেক মহিলাকে দেখতে পায় ভানুদাস। মহিলাকে অনুসরণ করে তাঁর বাড়ি পর্যন্ত পৌঁছে যায়। তার পর ফের শুরু হয় ভয় দেখিয়ে লাগাতার ধর্ষণ। ২০১১-য় অন্য একটি ঘটনায় গ্রেফতার হন ভানুদাস।

অভিযোগকারিণী ফের গর্ভবতী হয়ে পড়েন ২০১২ সালে। সেই সময় তাঁকে ফেরে গর্ভপাত করাতে বাধ্য করানো হয়, ভয় দেখিয়ে। তার পর তাঁরা চলে যান খাড়গড় এলাকায়। সেখানে তৃতীয় বার গর্ভবতী হয়ে পড়েন উজবেক মহিলা। সেই সময় ভানুদাস তাঁকে বিয়ে করেন। ২০১৪ সালে মহিলার একটি পুত্রসন্তান হয়।

২০১৮ সালে ভানুদাস ওই মহিলাকে তাঁর উজবেকিস্তানের বাড়িতে নিয়ে যান। সেই সময় তাঁর শিশুসন্তানকে মহারাষ্ট্রেই এক পরিচিতের কাছে রেখে যান অভিযোগকারিণী।

তাঁর অভিযোগ, ‘‘ওই সময়ই ভানুদাস মহিলার কাছ থেকে ডিভোর্স চায়। ভারতে পালিয়ে আসে। তার পর থেকেই আমার ছেলের সঙ্গে আমার সব রকমের যোগাযোগ বন্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা চালাতে থাকে ভানুদাস। আমি যাতে ভারতে ফিরে না আসতে পারি, তারও চেষ্টা চালানো হয়।’’

Uzbekistan Chembur Rape Murder Forced abortions উজবেকিস্তান
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy