শবরীমালার সোনা-রহস্যের তদন্তে নয়া মোড়! এ বার ধরা পড়লেন মন্দিরের প্রাক্তন প্রশাসনিক কর্তা মুরারি বাবু। বুধবার গভীর রাতে মুরারিকে আটক করে বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট)। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বৃহস্পতিবার ভোরে তাঁকে তিরুঅনন্তপুরমে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই টানা জেরার পর গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁকে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মন্দিরের রেকর্ডে হেরফের ঘটিয়ে সোনার জিনিসপত্রকে তামার তৈরি বলে লেখা হয়েছিল। এর নেপথ্যে ছিলেন মুরারি। ফলে মন্দির থেকে সোনার মূল্যবান জিনিসপত্র উধাও হয়ে গেলেও বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতে বেশ সময় লেগে যায়। ২০১৯ সালের ত্রিবাঙ্কুর দেবস্বম বোর্ডের খাতাটিও বাজেয়াপ্ত করেছে সিট। তদন্তকারীদের দাবি, যেখানে স্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে যে, মন্দির থেকে সোনার পাত এবং অন্যান্য জিনিস উন্নিকৃষ্ণন পট্টি নামে এক শিল্পপতির হাতে তুলে দিয়েছিলেন মুরারি। ইতিমধ্যেই, গত শুক্রবার শিল্পপতি উন্নিকৃষ্ণনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মনে করা হচ্ছে, এ বার ধৃত উন্নিকৃষ্ণনের মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করা হতে পারে মুরারিকে।
আরও পড়ুন:
ঘটনার সূত্রপাত ২০১৯ সালে। শবরীমালার গর্ভগৃহ ‘শ্রীকোভিল’-এর দেওয়াল এবং দ্বারপালকের মূর্তি থেকে সোনা উধাও হয়ে যাওয়ার অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ, ২০১৯ সালে বিগ্রহের ওজন ছিল ৪২ কেজি ৮০০ গ্রাম। কিন্তু পরে দেখা যায়, বিগ্রহের ওজন হয়ে গিয়েছে ৩৮ কেজি ২৫৮ গ্রাম! কী ভাবে বিগ্রহের ওজন হ্রাস পেল, তা জানতে চেয়ে তদন্তের নির্দেশ দেয় আদালত। সেই ঘটনার তদন্তেই উঠে আসে উন্নিকৃষ্ণনের নাম।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের দাবি, বিগ্রহের মেরামতির জন্য ২০১৯ সালের জুলাই মাসে একবার মন্দিরের দ্বারপালক মূর্তি এবং দরজার সোনার আবরণ খোলা হয়েছিল। সে সময় সোনার ওজন ছিল ৪২.৮ কেজি। পরদিন ওই সোনা চেন্নাইয়ের একটি সংস্থায় পাঠানোর জন্য উন্নিকৃষ্ণনের হাতে তুলে দেওয়া হয়। কিন্তু সোনা চেন্নাইয়ে পৌঁছোয় ৩৯ দিন পর। সে সময় ওজন করতে গিয়ে দেখা যায় সোনার ওজন হয়ে গিয়েছে ৩৮.২৫ কেজি। অর্থাৎ, ৪.৫৪ কেজি সোনা উধাও! তদন্ত জানা যায়, মন্দিরের হিসাবরক্ষকেরা রেকর্ডে সোনার প্রলেপ দেওয়া মূর্তিগুলিকে ‘তামার তৈরি’ বলে লিখেছিলেন। ফেরত দেওয়ার সময় মূর্তিগুলি ঠিক ভাবে ওজনও করে দেখা হয়নি। যার ফলে বছরের পর বছর ধরে অলক্ষিতই রয়ে যায় সোনা উধাওয়ের বিষয়টি।