জীবনাবসান হল বিশিষ্ট জ্যোতির্পদার্থবিজ্ঞানী জয়ন্ত বিষ্ণু নারলিকরের। মঙ্গলবার ভোরে পুণেতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন তিনি। সকালে পরিবারের তরফে তাঁর মৃত্যুসংবাদ নিশ্চিত করা হয়। জানা গিয়েছে, ঘুমের মধ্যেই মৃত্যু হয়েছে ভারতে বিজ্ঞানচর্চা ও মহাকাশ গবেষণার অন্যতম পথিকৃৎ নারলিকরের। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর।
পদ্মবিভূষণপ্রাপ্ত এই বিজ্ঞানী পুণের ইন্টার-ইউনিভার্সিটি সেন্টার ফর অ্যাস্ট্রোনমি অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোফিজিক্স সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা-নির্দেশক ছিলেন। বুধবার প্রয়াত জ্যোতির্পদার্থবিদের শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছে পরিবার। সম্প্রতি নারলিকরের কোমরের অস্ত্রোপচার হয়েছিল। যদিও অস্ত্রোপচারের পরেও সুস্থ ছিলেন তিনি। কিন্তু মঙ্গলবার ভোরে আচমকা ঘুমের মধ্যে মৃত্যু হয় তাঁর। নারলিকরের তিন মেয়ে রয়েছেন— গীতা, গিরিজা এবং লীলাবতী। তিন কন্যাই বিজ্ঞান গবেষণার সঙ্গে যুক্ত।
আরও পড়ুন:
-
‘দিল্লি যাচ্ছি’ বলে পাকিস্তানে ঘুরতে গিয়েছিলেন মেয়ে! পাক-যোগ নিয়ে এখনও অন্ধকারে ‘গুপ্তচর’ জ্যোতির বাবা
-
পাক হামলায় মৃত্যু হয়েছে তিন শিশুর, চোখে জল নিয়েই আগের ছন্দে পঠনপাঠন শুরু জম্মুর স্কুলে
-
‘গাজ়ায় ১৪ হাজার শিশুর মৃত্যু হতে পারে ৪৮ ঘণ্টায়’! উদ্বিগ্ন রাষ্ট্রপুঞ্জ বলল, ‘ত্রাণের বন্যা’ না বইলে ভয়াবহ পরিস্থিতি আসন্ন
১৯৩৮ সালে ১৯ জুলাই মহারাষ্ট্রের কোলাপুরে নারলিকরের জন্ম। বাবা বিষ্ণু বাসুদেব নারলিকর ছিলেন বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের প্রধান। সেই বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই স্নাতক স্তরের পড়া শেষ করেন ছেলেও। তার পর উচ্চশিক্ষার জন্য পাড়ি দেন কেমব্রিজে। সেখানে ‘ম্যাথামেটিক্যাল ট্রাইপস’-এ টাইসন মেডেল অর্জন করেন। ১৯৭২ সালে ভারতে ফিরে যোগ দেন টাটা ইনস্টিটিউট অফ ফান্ডামেন্টাল রিসার্চ (টিআইএফআর)-এ। ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত সেখানেই কাজ করেছিলেন তিনি। ১৯৮৮ সালে ইউনিভার্সিটি গ্রান্টস কমিশন (ইউজিসি) নারলিকরকে ইন্টার-ইউনিভার্সিটি সেন্টার ফর অ্যাস্ট্রোনমি এবং অ্যাস্ট্রোফিজিক্স (আইইউসিএএ) গড়ার প্রস্তাব দেয়। সেই প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা তথা নির্দেশক পদে আসীন হন নারলিকর। ২০০৩ সালে অবসর নেওয়ার আগে পর্যন্ত সেই পদেই কাজ করেছেন তিনি।
নারলিকরের তত্ত্বাবধানে ভারতে জ্যোতির্বিজ্ঞান ও জ্যোর্তিপদার্থবিদ্যা চর্চার অন্যতম কেন্দ্র হয়ে উঠেছিল আইইউসিএএ। ১৯৯৬ সালে বিজ্ঞানচর্চার প্রসারে অবদানের জন্য ইউনেস্কো নারলিকরকে কলিঙ্গ পুরস্কারে ভূষিত করে। এর পর ২০০৪ সালে পান পদ্মবিভূষণ সম্মান। ২০১১ সালে তাঁকে রাজ্যের সর্বোচ্চ অসামরিক পুরস্কার মহারাষ্ট্র ভূষণে ভূষিত করে মহারাষ্ট্র সরকার।