গোয়ার শিরগাঁও গ্রামের লাইরাই দেবী মন্দিরে পদপিষ্টের ঘটনায় ছ’জন পুণ্যার্থীর মৃত্যু হয়েছে। কী ভাবে ওই ঘটনা ঘটল, তা এখনও তদন্তাধীন। সেই আবহেই এক প্রশাসনিক কর্তা জানালেন, লাইরাই দেবী মন্দিরের অদূরে যে ঢালু জায়গায় পদপিষ্টের ঘটনাটি ঘটেছিল, সেটি এমনিতেই দুর্ঘটনাপ্রবণ। অতীতেও সেখানে এমন ঘটনা ঘটেছে।
উত্তর গোয়ার শিরগাঁও গ্রামের ওই মন্দিরে প্রতি বছর বার্ষিক শোভাযাত্রা হয়। একে ‘শিরগাঁও যাত্রা’ বা ‘দেবী লাইরাই যাত্রা’ও বলা হয়ে থাকে। এখানে পুণ্যার্থীরা খালি পায়ে জ্বলন্ত অঙ্গারের মধ্যে দিয়ে হেঁটে যান। শতাব্দীপ্রাচীন এই যাত্রায় যোগ দেওয়ার জন্য প্রতি বছর দূরদূরান্ত থেকে মানুষ শিরগাঁওয়ে ভিড় করেন। শুক্রবার রাতেও হাজার হাজার মানুষের জমায়েত হয়েছিল সেখানে। ভোরের দিকে আচমকা হুড়োহুড়ি শুরু হয়ে যায়। পদপিষ্ট হয়ে প্রাণ হারান ছ’জন। আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৫০ জন পুণ্যার্থী। কিন্তু কী কারণে ওই পদপিষ্টের পরিস্থিতি সৃষ্টি হল, তা নিয়ে এখনও জল্পনা চলছে। নানা মত, নানা কারণের কথা উঠে আসছে। আসল কারণ কী, তা খোঁজার চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ এবং স্থানীয় প্রশাসন।
আরও পড়ুন:
ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে গোয়া সরকার গঠিত তথ্যানুসন্ধান কমিটি। এই কমিটির নেতৃত্বে রয়েছেন কমিশনার ও সচিব (রাজস্ব) সন্দীপ জ্যাকস, ডিআইজি বর্ষা শর্মা, পুলিশ সুপার টিকম সিংহ বর্মা, প্রমুখ। ওই মন্দিরের ভিড় নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা ঊর্ধ্বতন কর্তাদের বক্তব্যও রেকর্ড করা হয়েছে। অভিযোগ, শুক্রবার রাতে লাইরাই দেবী মন্দিরে অতিরিক্ত ভিড় এড়াতে পুণ্যার্থীদের একসঙ্গে মন্দিরের দিকে না আসার অনুরোধ করেছিল মন্দির কমিটি। কিন্তু তা সত্ত্বেও শত শত ভক্ত পায়ে হেঁটে মন্দিরের দিকে আসছিলেন। সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে এক জন ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্তা জানিয়েছেন, মন্দিরে যাওয়ার রাস্তাটি সরু হওয়া সত্ত্বেও সেখানে অস্থায়ী দোকান বসানোর অনুমতি দিয়েছিল মন্দির কমিটি, যার ফলে মানুষের যাতায়াতে বাধা সৃষ্টি হচ্ছিল। তা ছাড়া, পদপিষ্টের ঘটনাটি একটি ঢালু জায়গায় ঘটেছিল, যেখানে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা সব চেয়ে বেশি। ওই কর্তা আরও জানান, গত বছর উৎসবের সময় একই স্থানে একই রকম ঘটনা ঘটেছিল। তবে সে বার হতাহতের কোনও ঘটনা ঘটেনি। তাঁর প্রশ্ন, পূর্বইতিহাস সত্ত্বেও চলতি বছরে কেন বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করলেন না মন্দির কর্তৃপক্ষ? সে সবও তদন্ত করে দেখবে কমিটি।